জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে থাকা বাসচাপায় হাত হারানো কলেজ ছাত্র রাজীব হোসেন আজ চলে গেছেন না ফেরার দেশে। তার অসহায় দুই ভাইয়ের লেখাপড়ার দায়িত্ব নিতে চান জনপ্রিয় চিত্রনায়ক অনন্ত জলিল। আজ মঙ্গলবার অনন্ত জলিলের জন্মদিনে তিনি তাঁর ফেসবুকে এ ঘোষণা দেন।
অনন্ত জলিল বলেন, আজকের দিনে আল্লাহ্তায়াল তার সুন্দর ধরণী আর সুন্দর সুন্দর সৃষ্টির মাঝে আমাকে পাঠিয়েছেন, আজ আমার জন্মদিন, তাই শুকুর আলহামদুলিল্লাহ্। রাব্বুল আলআমিনের নিকট আমি কৃতজ্ঞ, এ কারণে যে এমন আনন্দের দিনে তিনি আমাকে স্বপরিবারে মক্কায় অবস্থান করার সুযোগ করে দিয়েছেন।
জন্মদিনের দিনে তার মন খারাপের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, কিছু দিন আগে বাস দুর্ঘটনায় রাজিব নামে একজন মেধাবী শিক্ষার্থী তার হাত হারিয়ে ছিলেন। এবং আজ তিনি পৃথিবী হতে বিদায় নিয়েছেন। যা আমাকে বেশ মর্মাহত করেছে। বাবা-মা হারা এই সন্তান তার ছোট দুই ভাইকে পিতা-মাতার স্নেহ দিয়ে আগলে রেখেছিলো। কিন্তু রাজিবের অকাল বিদায়ে তার দুই ছোট ভাইয়ের ভবিষ্যৎ হুমকির মুখে পড়েছে। তাই আমার জন্মদিনে আমি চাচ্ছি যে পরিবার হারা এই দুই সন্তানের পড়ালেখার দায়িত্ব নিতে।
উল্লেখ্য, গত ৩ এপ্রিল বাংলামটর এলাকায় ওভারটেকিং করতে গিয়ে দুটি বাসের রেষারেষিতে সরকারি তিতুমীর কলেজের স্নাতক তৃতীয় বর্ষের ছাত্র রাজীবের ডান হাত বাস দুটির মাঝখানে চাপা পড়ে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। পথচারীরা তাঁকে রাজধানীর একটি হাসপাতালে ভর্তি করান। সেখান থেকে তাঁকে ঢামেকে স্থানান্তর করা হয়। রাজীবের মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ শুরু হলে তাঁকে লাইফ সাপোর্টে রাখা হয়।
২০০৭ সালে রাজীবের বাবা মারা যাওয়ার পর তিনি তাঁর দুই ভাই আবদুল্লাহ হৃদয় (১৪) এবং মেহেদী হাসান বাপ্পীর (১৫) অভিভাবক ছিলেন। রাজীব তাঁর মাকে হারান যখন তাঁর বয়স ছিল আট বছর এবং তাঁর ছোট ভাইয়ের বয়স ছিল ১০ মাস। এরপর থেকে আত্মীয়-স্বজনরা তাঁদের দেখভাল করতেন। ২০১২ সালে এইচএসসি পাস করার পর রাজীব তাঁর ভাইদের লেখাপড়ার খরচ জোগাড় করার জন্যে গ্রাফিক ডিজাইনিংয়ের কাজ শুরু করেন।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন