বিবাহ একটি পবিত্র সামাজিক বন্ধন। কিন্তু এই বন্ধন আজ পরকীয়ার আঘাতে ক্ষত-বিক্ষত। মোবাইল, ফেসবুক, ইমো, ভাইবার যেন বিবাহ ভাঙার আগুনে ঘি ঢেলে দিচ্ছে। পত্রিকার পাতায় পরকীয়ার নিউজ এখন অতি সাধারণ বিষয়।
পরকীয়া কী?
পরকীয়া হলো বিবাহিত কোনো ব্যক্তির (নারী বা পুরুষ) স্ত্রী বা স্বামী ছাড়া অন্য কোনো ব্যক্তির সাথে বিবাহোত্তর বা বিবাহবহির্ভূত প্রেম, যৌন সম্পর্ক ও যৌন কর্মকাণ্ড।
এই পরকীয়ার কারণে আজ নড়বড়ে স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্কের ভিত। তার চেয়ে ভয়ঙ্কর সংকেত হচ্ছে, পরকীয়ার কালো ছায়ার প্রভাব পড়ছে সন্তানের ওপর। এর বলি হচ্ছে অবুঝ শিশু।
শিশুর জন্য পৃথিবীর সবচেয়ে নিরাপদ স্থান মা-বাবার কোলও আজ সংকটাপন্ন। পরকীয়ার মায়াজালে জড়িয়ে আপন সন্তানকে খুন করতেও পিছপা হচ্ছে না কেউ কেউ। পরকীয়ার দুইধারী তলোয়ারে রক্তাক্ত হচ্ছে সন্তানের তুলতুলে দেহ। পরকীয়ার মেঘে ঢেকে যাচ্ছে সন্তানের ভবিষ্যৎ। বাবা-মায়ের সম্পর্কের টানাপোড়েনের কালো ছাপ পড়ছে শিশুর কোমল মনের ওপর। তারা পাচ্ছে না মানসিক বিকাশের সুস্থ পরিবেশ।
পরকীয়ার ফাঁদ বর্তমান ও ভবিষ্যৎকে রুদ্ধ করে দিচ্ছে। পরকীয়ার কারণে সংসারে অশান্তি লেগেই থাকে। পরকীয়াকারী সারাক্ষণ নানা অজুহাত খুঁজতে থাকে তার সঙ্গীর সঙ্গে ঝামেলা পাকানোর জন্য, যেন বৈবাহিক সম্পর্ক ভেঙে তার পরকীয়া সম্পর্ককে বৈবাহিক সম্পর্কে রূপ দিতে পারে। অনেক সময় পরকীয়া হয় শুধু দৈহিক চাহিদা মেটানোর জন্য, যেখানে বিয়ে মুখ্য নয়।
মুক্তির উপায় কী?
এই প্রশ্নের সহজ-সরল কোনো উত্তর নেই। তবে জাগ্রত বিবেক,আত্মোপলব্ধি এবং নিজ নিজ ধর্মীয় বোধ জাগ্রত করাই হচ্ছে পরকীয়া নামক রোগের প্রতিষেধক। আর একটা কথা সবার মনে রাখা উচিত, পরকীয়া কখনো কোনো ইতিবাচক ফল দিতে পারে না। কারণ পরকীয়ার অন্যতম বৈশিষ্ট্য হচ্ছে বর্তমান সম্পর্কের সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করা। সুতরাং যে সম্পর্কের সূত্রপাত বিশ্বাসঘাতকতা থেকে, সেই সম্পর্কে ‘বিশ্বাস’ নামক শব্দটি মরীচিকাতুল্য।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন