আজ ২৭ এপ্রিল। ১৯৯২ সালের ২৭ এপ্রিল মৃত্যুবরণ করেন ঢাকাই চলচ্চিত্রের সোনালি সময়ের অন্যতম জনপ্রিয় অভিনেতা, সংগীতশিল্পী ও মুক্তিযোদ্ধা জাফর ইকবাল। তিনি ছিলেন আশির দশকের বাংলাদেশের একজন জনপ্রিয় অভিনেতা। তার বড় ভাই আনোয়ার পারভেজ ও ছোট বোন শাহনাজ রহমতুল্লাহ। তারা দুজনই সংগীতশিল্পী।
অভিনেতা জাফর ইকবালের ক্রেজ মুক্তিযুদ্ধপরবর্তী সময় থেকে নব্বইয়ের প্রথম পর্যন্ত। ক্যারিয়ার খুব বেশি বড় না। অল্প সময়ে ঢালিউডের গুরুত্বপূর্ণ একজন হয়ে ওঠে। খান আতাউর রহমান 'আপন পর' ছবিতে জাফর ইকবালকে নিয়ে আসে।
সে সিনেমায় বশির আহমেদের গাওয়া 'যারে যাবি যদি যা' গানটি জাফর ইকবালের লিপে জনপ্রিয়তা পায়। তারপর একে একে অসাধারণ সব ছবি উপহার দেয়া শুরু।
প্রায় ১৫০টি ছবিতে অভিনয় করেছে। উল্লেখযোগ্য কিছু নাম : আপন পর, ওগো বিদেশিনী, আশীর্বাদ, ফেরারী, সাধারণ মেয়ে, ফকির মজনু শাহ, নয়নের আলো, একই অঙ্গে এত রূপ, দিনের পর দিন, সূর্য সংগ্রাম, বাদল, অপমান, পরিবর্তন, সিআইডি, ফুলের মালা, মর্যাদা, বন্ধু আমার, উসিলা, লাওয়ারিশ, ভাইবন্ধু, সন্ত্রাস, অবুঝ হৃদয়, সন্ধি, যোগাযোগ, বদনাম, চোরের বৌ, ঘর ভাঙ্গা ঘর, প্রতিরোধ, গর্জন, মিস লংকা, অবদান, সাজানো বাগান, লক্ষীর সংসার, মামা-ভাগ্নে, শঙ্খনীল কারাগার।
জাফর ইকবাল একজন মুক্তিযোদ্ধা শিল্পী, অভিনেতার বাহিরে একজন পাগল প্রেমিকও। সোনিয়া নামের এক মেয়েকে বিয়ে করেছে ঠিকই কিন্তু হৃদয়টা পড়ে ছিল চিত্রনায়িকা ববিতার কাছে।
ববিতাকে ভালোবাসার কথাটা তখন মিডিয়া ও ভক্তপাড়ায় একটা ওপেন সিক্রেট ছিল। 'অবুঝ হৃদয়' ছবিতে 'তুমি আমার জীবন' গানে ববিতার সাথে লিপ-লক দৃশ্য তখন সমালোচনার ঝড় বয়ে গিয়েছিল। আর তখনই তার সাথে হৃদয় দেয়ানেয়াটা দর্শক-ভক্তরা নিশ্চিত হয়ে গিয়েছিল।
প্রেম এক আত্মঘাতী জিনিস তাই জাফর ইকবাল শেষ পর্যন্ত বোহেমিয়ান হয়ে পড়ে। সেই সময়ে তার গাওয়া 'সুখে থাকো ও আমার নন্দিনী' এ গানটা ক্লাসিক হিট হয়ে যায়। ব্যর্থ প্রেমিকের আর্তনাদ প্রকাশে গানটি অনায়াসে সেরা হয়ে উঠে।
আর প্রেম হারানোর বিরহে ফলাফল হিসেবে মদ্যপান ছিল অবধারিত। অতঃপর হার্ট ও কিডনি অকেজো হলো। হাসপাতালের বেডে শুয়ে নিজের শরীরকে অত্যাচারের খনি বানিয়ে ববিতার মুখেই 'তুমি ভালো ছেলে' কথাটা শুনে ১৯৯১ সালের ২৭ এপ্রিল মাত্র ৪১ বছর বয়সে পরপারে চলে যান চির সবুজ জাফর ইকবাল।
ব্রেকিংনিউজ
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন