ব্লু হোয়েল নেশায় কাঁপছে বিশ্ব। নির্ঘাত এ মরণ নেশায় আসক্ত হয়ে পড়ছে যুব সমাজ। এ গেমের সঙ্গে জড়ানো মানে জেনেশুনে মৃত্যুর দিকে এগিয়ে যাওয়া। অনলাইনে ভয়ঙ্কর এ সুইসাইড গেম এখন বাংলাদেশকে মাতিয়ে তুলছে। ইতিমধ্যে একাধিক মৃত্যু হয়েছে ব্লু হোয়েল গেমে। ভয়ঙ্কর সব ধাপ পেরিয়ে পঞ্চাশতম ধাপে গিয়ে সুইসাইড করে এ গেমের ইতি ঘটে। সত্যিই বিজ্ঞান আমাদের কোথায় নিয়ে যাচ্ছে। বিজ্ঞানের ভালো দিক ছেড়ে খারাপ দিকই যেন এগিয়ে যাচ্ছে। অভিভাবকরা সচেতন হলে কি এসব রোধ করা সম্ভব? এন্ড্রয়েড মোবাইল ফোন এখন সবার হাতে হাতে। ইন্টারনেটে সার্চ দিলে ভেসে আসছে সব। রাতের আঁধারে সন্তান কী করছে? বন্ধু-বান্ধবদের সঙ্গে কী করছে? সন্তানের আচরণগত পরিবর্তন কিংবা শারীরিক পরিবর্তনেও কি অভিভাবকরা সচেতন হতে পারেন না? বিজ্ঞান কি নতুন কোনো উপায় বের করবে। যা ব্লু হোয়েল গেমকে ধ্বংস করতে সক্ষম হবে। সকল এন্ড্রয়েড ফোনে সেই অ্যাপস স্বয়ংক্রিয়ভাবে সংযুক্ত থাকবে। কেউ যদি ব্লু হোয়েল গেম তার মোবাইল ফোন সেটে ইনস্টল করার চেষ্টা করেন তাহলে ওই স্বয়ংক্রিয় অ্যাপস তা প্রতিরোধ গড়ে তুলবে। অর্থাৎ কার্যকারিতা হারাবে। যেমন আমাদের পার্সোনাল কম্পিউটারে রয়েছে ফায়ার ওয়াল নামক একটি রক্ষাকবচ। যা হ্যাকারদের কবল থেকে প্রতিনিয়ত আমাদের সুরক্ষিত রাখছে। সময় এসেছে এমন একটি অ্যাপস তৈরি করার। যার নাম হতে পারে এন্টি ব্লু হোয়েল অ্যাপস। বিষয়টি নিয়ে এখনই ভাবা দরকার। পৃথিবীতে রয়েছে নানা ধরনের বিচিত্র মানুষ। বিচিত্র তাদের নেশা। কেউ দুধ বেচে মদ কেনে। কেউবা মদ বেচে দুধ কেনে। একেক জনের একেক গতি। কেউ নিজের স্বার্থ শতভাগ দেখে। কেউবা নিজের স্বার্থের পাশাপাশি অন্যের স্বার্থও দেখে। কেউ জীবনকে এনজয় করে। কেউ জীবনকে বিষিয়ে তুলে। নানা নেশার মানুষ সমাজে। একজন সুন্দর সুঠাম দেহের অধিকারী যুবক দেখতে দেখতে কুৎসিত হয়ে উঠছে। কারণ মরণ নেশার ছোবল তাকে গ্রাস করেছে। পিতা-মাতার স্বপ্ন ভেঙে চুরমার করে দিচ্ছে কেউ কেউ। পৃথিবীতে শখের আর শেষ নেই। নানা রকম শখ। কারো শখ নিজেকে সুন্দর করে অন্যের কাছে উপস্থাপন করা। কারো শখ নিজেকে আড়াল করে রাখা। কারো শখ প্রেম প্রেম খেলা করা। কারো শখ মরণ নেশায় ডুবে থাকা। কেউ পানির বদলে মদ খেয়ে শখ পূরণ করেন। কেউবা পানি খেয়ে ক্ষুধা নিবারণ করেন। এক সময় প্রেমিক-প্রেমিকারা চিঠি লিখে নিজের মনের ভাব আদান-প্রদান করতেন। চৈত্রের ভর দুপুরে গাছতলায় মাদুর পেতে শুয়ে শুয়ে প্রেম পত্র লিখতেন। চিঠির এক কোণায় লিখতেন রাত ১২টা ১ মিনিট। সেই চিঠি কোনো বাহক মারফত পাঠাতেন প্রেমিকের কাছে। বাহককে বশে রাখতে তাকে তোয়াজ করতে হতো নানাভাবে। আর দূরের প্রেমিক-প্রেমিকা হলে পোস্ট অফিসের দরজায় প্রতিদিন কড়া নাড়তেন। তাদের কোনো চিঠি এসেছে কিনা? এ জন্য পোস্ট মাস্টারকেও তাদের বশে রাখতে হতো। সেই চিত্র এখন বদলে গেছে। আধুনিকতার ছোঁয়া বদলে দিয়েছে সবকিছু। এখন ফেসবুক আর ম্যাসেঞ্জারে রাতের পর রাত কথা বলতে পারছেন। মোবাইল ফোনে ঘণ্টার পর ঘণ্টা ভাব বিনিময় করছেন। এসব দেখে এক সময় মোবাইল ফোন কোম্পানিগুলো প্রেমিক-প্রেমিকাদের জন্য অফারও ছেড়েছিল। রাত ১২টা থেকে সকাল ৮টা পর্যন্ত সেই অফারে কাবু হয়ে থাকতো যুব সমাজ। আর এখন কলরেট কমে যাওয়ায় রাত-দিন সমান। যখন খুশি তখন কথা বলা যায়। আর বিশেষ করে ইন্টারনেট বিষয়টিকে আরো সহজ করে দিয়েছে। ইমো, ভাইভারে শুধু কথা বলাই নয়, সামনাসামনি ভাব বিনিময় হয়। এতো গেল প্রেমিক-প্রেমিকার কথা। কেউ কেউ প্রেমে পড়েন মাদকের। গাঁজা থেকে শুরু করে একেবারে বাবায় গিয়ে শেষ হয়। এরপর নিস্তেজ হয়ে রাস্তার পাশে পড়ে থাকে। এভাবে জীবনকে নিয়ে যায় মরণের দিকে। কেউ কেউ নাকি সাপের ছোবলও নেয়। ওহ্ কি যে স্বাদ। ওই স্বাদ তাদের স্বপ্ন জগতে ভাসিয়ে নেয়। কেউ কেউ নিজেকে মেয়েদের কাছে তুলে ধরতে পছন্দ করেন। আবার কেউ কেউ ছেলেদের কাছে নিজেকে তুলে ধরতে পছন্দ করেন। এমন যারা তাদের নেশা অন্ধকার ঘরে সময় কাটানো। আবার কেউ কেউ পরকীয়ায় পড়ে জীবনকে মেলে ধরেন। সন্তান রেখে চলে যান অন্যের হাত ধরে। এসবই নেশা। তবে সব নেশাকে ছাড়িয়ে গেছে ব্লু হোয়েল। ভয়ঙ্কর এ সুইসাইড গেম থেকে বিশ্বকে বাঁচাতে তাই সংশ্লিষ্টদের দ্রুত উদ্যোগ নিতে হবে।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন