ভালো মানের একটি স্মার্টফোনের দাম কতো? আর ভালো মানের ফোন বলতে কী বোঝায়? এই প্রশ্নগুলো হঠাৎ বলাবলি হচ্ছে সামাজিক মাধ্যমে। যদিও ভালো মানের এনড্রয়েড ফোনের সুনির্দিষ্ট কোনো সংজ্ঞা না থাকলেও বাংলাদেশের বাজারে বিশ্ববিখ্যাত ব্র্যান্ডের ফ্ল্যাগশিপ ফোন নামে পরিচিত ফোন লাখ টাকাতেও বিক্রি হচ্ছে।
দুই দশক আগে দেশে যখন মোবাইল ফোনের বাজার বিকশিত হতে শুরু করে, তখন ৫০ হাজার বা তার চেয়ে বেশি দামে যেসব ফোন বিক্রি হতো, এখনকার দিনে সেসব ফোন কেউ কিনবেই না।
আবার কয়েক বছর আগে যখন স্যামসাং এনড্রয়েডচালিত ফোন এস থ্রি বাজারে ছাড়ে, তখন সেটির দাম ছিল লাখ টাকা। একই সুবিধা সম্বলিত ফোন আজকাল ১০ হাজারের কমেও পাওয়া যায়।
মোবাইল ফোন বিপণনকারী প্রতিষ্ঠানের একজন কর্মকর্তা ঢাকাটাইমসকে বলেন, ভালো মানের ফোনের কোনো সংজ্ঞা নেই। তবে আপডেট অপরেটিং সিস্টেম, বেশি র্যামের ফোনকে এই শাখায় ফেলা যায়।
ভালো মানের ফোনের দামের বিষয়টি নিয়ে বলাবলি হচ্ছে মন্ত্রিপরিষদ সচিব শফিউল আলমের ব্রিফিংয়ের পর। সোমবার মন্ত্রিসভার নিয়মিত বৈঠকের সিদ্ধান্ত নিয়ে এক ব্রিফিংয়ে সচিব জানান, মন্ত্রিসভার সদস্য এবং সচিবদেরকে বিনামূল্যে ফোন দেয়ার প্রস্তাবে নীতিগত সায় এসেছে।
সচিব বলেন, যেহেতু ভালো মানের এনড্রয়েড ফোন ৭৫ হাজার টাকার নিচে কেনা যায় না, তাই তাদেরকে এই দামেই ফোন দেয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে।
সচিব যেহেতু এনড্রয়েড ফোনের কথা বলেছেন, তাই বিশ্বজুড়ে ভালো মানের ফোন হিসেবে তুমুল জনপ্রিয় আইফোনকে বাদ দিয়ে দেয়া যায়। কারণ, এর অপারেটিং সিস্টেম আইওএস।
দেশে দামি ফোনের বাজার
বাংলাদেশে দেশের বাজারে অ্যানড্রয়েড অপারেটিং সিস্টেমের ফোনে রাজত্ব করছে স্যামসাং, হুয়াওয়ে, অপো এবং শাওমির মত খ্যাতনা প্রতিষ্ঠানগুলো। এর মধ্যে স্যামসাং ও হুয়াওয়ের ফ্লাগশিপ ফোন গুলোর দাম লাখ খানেকেরও বেশি। অপো এবং শাওমি ফোনের দাম মোটামুটি হাতের নাগালে।
স্যামসাংয়ের সর্বশেষ ফ্লাগশিপ ফোনগুলো হলো গ্যালাক্সি এস নাইন প্লাস, গ্যালাক্সি নোট এইট, গ্যালাক্সি এস এইট এবং এস এইট প্লাসের। এসব ফোনের দাম বেশ চড়া।
স্যামসাং মোবাইল বাংলাদেশের তথ্য মতে, গ্যালাক্সি এস নাইন প্লাসের দাম ১ লাখ ৫ হাজার ৯০০ টাকা। গ্যালাক্সি নোট এইটের দাম ৯৯ হাজার ৯০০ টাকা। গ্যালাক্সি এস এইটের দাম ৭৯ হাজার ৯০০ টাকা, এস এইট প্লাসের দাম ৮৯ হাজার ৯০০ টাকা।
অন্যদিকে হুয়াওয়ের সর্বশেষ ফ্লাগশিপ ফোন মেট ১০ প্রো বাংলাদেশে পাওয়া যাচ্ছে ৮৩ হাজার ৯০০ টাকায়।
মাঝারি দামের আরেকটি ‘ভালো মানের’ ফোন হলো হুয়াওয়ে নোভো থ্রি ই। এই ফোনটির মূল্য ২৭ হাজার ৯৯০ টাকা। মিড রেঞ্চে এই প্রতিষ্ঠানটির আরেকটি ফোন পাওয়া যাচ্ছে। মডেল নোভা টু আই। দাম ২৪ হাজার ৯৯০ টাকা।
তরুণদের কাছে জনপ্রিয় ফোন শাওমি। শাওমির মিডরেঞ্চের ফোনের সংখ্যাই বেশি। এর মধ্যে মি এ ওয়ান বিক্রি হচ্ছে ২১ হাজার ৯৯০ টাকায়। রেডমি ফাইভ প্লাস পাওয়া যাচ্ছে ১৭ হাজার ৯৯০ টাকায়। রেডমি নোট ফোর ১৯ হাজার ৯৯০ টাকায় মিলছে। এছাড়াও ফ্লাগশিপ প্রিমিয়াম ঘরানার ফোন মি মিক্স টু পাওয়া যাচ্ছে ৫৬ হাজার ৪৯০ টাকায়।
অপো বেশ কয়েকটি সেলফি ফোন বাজারে বিক্রি করছে। এর মধ্যে সর্বশেষ ফোনটি হলো অপো এফ সেভেন। ৬ জিবি র্যামের এই ফোনটির মূল্য ৩৫ হাজার ৯৯০ টাকা। এর পরেই আছে অপো এফ ফাইভ। যার দাম ৩২ হাজার ৯৯০ ঢাকা। এফ থ্রির দাম ২৪ হাজার ৯৯০ টাকা। অপো এফ থ্রির প্লাসের দাম ৪০ হাজার ৯০০ টাকা।
অন্যদিকে বাংলাদেশি উৎপাদিত হ্যান্ডসেট উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান ওয়ালটন, সিম্ফনির ‘ভালো মানের’ স্মার্টফোন ২০ হাজার টাকা থেকে ৩০ হাজার টাকার মধ্যে পাওয়া যাচ্ছে।
তবে মন্ত্রী, সচিবদের ফোনের একটি বিষয় থাকে নিরাপত্তা। আর নিরাপত্তার জন্য ব্ল্যাকবেরি বিশ্বজুড়েই সমাদৃত। তবে তাদের রয়েছে নিজস্ব অপারেটিং সিস্টেমস। এর বাইরে গত কয়েক বছর ধরে কানাডিয়ান কোম্পানিটি এনড্রয়েড অপারেটিং সিস্টেম নির্ভর ফোনও তৈরি করছে। আর এই ফোনগুলোর কয়েকটি মডেল বাংলাদেশে বিক্রি করছে একটি প্রতিষ্ঠান।
ব্ল্যাকবেরির সর্বশেষ কি-ওয়ান মডেলটির কালো রঙের সংস্করণ পাওয়া যাচ্ছে বাংলাদেশে। জানুয়ারিতে এটি বাজারে আসার পর এটির দাম ছিল প্রায় ৫৩ হাজার ৯৯০ টাকা। এতে ফিজিক্যাল কি–বোর্ড আছে। সাড়ে চার ইঞ্চি মাপের ডিসপ্লেযুক্ত স্মার্টফোনটিতে ৪ গিগাবাইট র্যাম এবং ৬৪ গিগাবাইট মেমোরি, ৩৫০৫ এমএএইচ ব্যাটারি, পেছনে ১২ ও সামনে আট মেগাপিক্সেলের ক্যামেরা রয়েছে।
(ঢাকাটাইমস
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন