ধুমধাম আয়োজনে বিয়ে করতে কে না চায়। বিশেষ করে নববধূর মন রক্ষা কিংবা বন্ধ মহলের আবদার বলে একটা কথা আছে। তবে বিয়ের খরচ মেটাতে অন্য রকম এক পরিকল্পনা করলেন বেন ফারিনা।
প্রায় ছয় বছর ধরে একসঙ্গে আছেন বেন ফারিনা দম্পতি। তাদের একটি সন্তানও আছে। তারা বিয়ে করার জন্য মনস্থির করলেন। আর বিয়ে আয়োজনে করে ফেললেন এক ‘বিজনেস মডেল’ পরিকল্পনা।
বিয়ের অতিথিদের অনুষ্ঠানে অংশ নেওয়ার জন্য অদ্ভূত এক শর্ত জুড়ে দিলেন বর। বিয়ের অনুষ্ঠানে অংশ নিতে প্রত্যেক অতিথিকে ১৫০ পাউন্ড করে দিতে বললেন তিনি। খবর: বিবিসি বাংলা।
বেন ফারিনা বলেন, আগামী জুন মাসে তিনি প্রেমিকা ক্লেয়ার মোরানকে বিয়ে করতে যাচ্ছেন। আর এই বিয়েটা অতিথিদের জন্য হবে ‘সব কিছু সম্বলিত একটি ছুটির দিন’।
বিয়ের ভেন্যু ঠিক করা হয়েছে ডার্বিশায়ারে। যে বাড়িটিতে অনুষ্ঠান হবে সেখানে পুল আছে এবং স্পা-এরও ব্যবস্থা আছে। ভেন্যুতে তিন দিন থাকতে হবে বিয়ের বর-কনে ও অতিথিদের।
রটেরহ্যামে বসবাসরত বেন ফারিনা এজন্য অবশ্য কিছুটা সমালোচনার মুখেও পড়েন। তবে তিনি বলছেন, তার এমন পরিকল্পনা অনেক অতিথি সুন্দরভাবে গ্রহণ করেছেন।
এই দম্পতির বিয়েতে যে ৬০ জন প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তি ও ২০ জন শিশু উপস্থিত থাকবে সেটা ইতোমধ্যেই নিশ্চিত হয়ে গেছে। যারা আসবেন তারাও সেই অর্থ তাদের দিয়ে দিয়েছেন।
বেন ফারিনা বলেন, ‘কোনো বিয়ের অনুষ্ঠানে গেলে খরচ কিন্তু কম হয় না। শুধুমাত্র একজন ব্যবসায়ীকে টাকা না দিয়ে সত্যিকারের এক বিয়ের অনুষ্ঠানে মানুষ কেন টাকা খরচ করবে না বলুনতো?’
লেস্টারের এই নাগরিক বলেন, ‘আমি আসলে আমার এ পরিকল্পনা তাদের কাছে এমনভাবে বিক্রি করেছি যেন এটা তাদের জন্য একটা অবসর যাপনের প্যাকেজ, সবকিছু সম্বলিত ছুটির দিন। ওই ১৫০ পাউন্ড খরচ করে তারা থাকতে পারছে, খাবার পাচ্ছে, পানীয়ও পাচ্ছে।’
‘এছাড়া বিয়ের ভেন্যুতে স্পা ব্যবস্থা আছে। ইনডোর সুইমিং পুল, গেমস রুম সবই আছে। এমনকি স্থানীয় সুবিধাগুলোও হাতের অনেক কাছে। একটা লেকও আছে, এটা আসলে ছুটি কাটানোর জন্য ছোট্ট একটা রিসোর্ট বলতে পারেন’ যোগ করেন তিনি।
বেন ফারিনা জানান, তিনি ও তার সঙ্গী এক বন্ধুর বিয়েতে গ্রিসে গিয়েছিলেন। বিয়েতে প্রায় সাড়ে পাঁচশ’ পাউন্ড খরচ হয়েছিল এবং সেখানে থাকতে তাদের বারোশ’ পাউন্ড খরচ হয়েছিল।
তিনি বলেন, কোনো বিয়ের অনুষ্ঠানে অংশ নিতে চাইলে সাধারণত একশ’ পাউন্ড খরচ হয় আর বারে বসলেতো ৫০ পাউন্ড খরচ হবেই। আমি কিন্তু অনেক হিসাবনিকাশ করে এই প্রস্তাব দিয়েছি অতিথিদের।
তবে আসল কথা একটু পরেই বললেন বর বেন ফারিনা। তিনি বলেন, ‘আমি জানতাম মোরানকে বিয়ের কথা বললেই সে বলবে কিভাবে অনুষ্ঠান আয়োজন করবো? তাই তাকে আমি বুঝালাম বিষয়টা।’
মোরান বলেন, ‘স্বপ্নেও ভাবেননি এভাবে বিয়ের অনুষ্ঠানটা হবে। আমরা বিয়ের কথা ভাবছিলাম। আমাদের একটা ছোট মেয়েও আছে। বিয়ের অনুষ্ঠান যে আমরা করতে পারবো না জানতাম। কারণ বিয়ের আয়োজন করতে গিয়ে ব্যবসায়ীরা যে পরিমাণ টাকা নেয় সেটা দেওয়া সম্ভব নয়। শুধু ভাবতাম রেজিস্ট্রি করেই হয়তো বিয়েটা সেরে নিতে হবে। বড় অনুষ্ঠান করা সম্ভব নয়।’
তার মতে, ‘এটা একটা দারুণ পরিকল্পনা। আমিতো অপেক্ষায় আছি সেই দিনটির। সে অনেক চিন্তা করে এমন আয়োজন করছে।’
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন