প্রস্তুতি ম্যাচে বাংলাদেশের স্কোর আড়াই শ' ছাড়িয়েছে। ৪৮.১ ওভারে বাংলাদেশ ২৫৫ রানে অল আউট হয়ে গেছে। শেষ ব্যাটসম্যান হিসেবে বিদায় নেন মোস্তাফিজুর রহমান। তিনি রানের খাতাই খুলতে পারেননি।
দুটি হাফসেঞ্চুরির সুবাদে বাংলাদেশ এই সংগ্রহ করে। এ দুটি করেছেন সাকিব আল হাসান আর সাব্বির রহমান। সাকিব ৬৮ এবং ৫২ রান করেন।
এই ম্যাচে নায়ক হিসেবেই যেন প্রত্যাবর্তন ঘটল সাকিব আল হাসানের। তার অনুপস্থিতিতে করুণ হওয়া বাংলাদেশের ব্যাটিং খুব বেশি শক্তিশালী বলে মনে না হলেও তার ব্যক্তিগত স্কোর দলের জন্য দারুণ কিছু হয়ে দাঁড়িয়েছে। তিনি নিজে দারুণ একটি হাফসেঞ্চুরি উপহার দিয়েছেন।
সাকিব আউট হয়েছেন ৬৮ রানে। তিনি ৬৭ বলে ৯টি চার দিয়ে এই স্কোর গড়েন। স্ট্রাইক রেট ছিল ১০১.৪৯।
দুই ম্যাচ টেস্ট সিরিজে লজ্জাজনকভাবে হারার পর এই সিরিজে খেলছে সফরকারী বাংলাদেশ। সেই ক্ষত ভালো না হতেই আবারো ওয়ানডে সিরিজের আগে বাংলাদেশের জন্য এটাই প্রস্তুতি ম্যাচ। টেস্টে টাইগার ব্যাটসম্যানদের খামখেয়ালিপনা দেখেছে গোটা ক্রিকেট বিশ্ব। টপঅর্ডার ও মিডলঅর্ডার ব্যাটসম্যানরা ছিলেন একেবারে অসহায়। সেই রেশ লক্ষ্য করা যাচ্ছে আজকের প্রস্তুতিমূলক ম্যাচটিতেও।
বৃহস্পতিবার ব্লুমফন্টেইনের ম্যানগাউং ওভালে বাংলাদেশ সময় দুপুর ২টায় স্বাগকিতের বিপক্ষে টস জিতে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন টাইগার দলপতি মাশরাফি বিন মর্তুজা।
দক্ষিণ আফ্রিকার কাছে টেস্ট সিরিজে ভয়াবহ ভাবে হারের পর ঘুরে দাঁড়ানোর লক্ষ্যে টাইগার দলের হয়ে ব্যাটিংয়ে নামেন ইমরুল-সৌম্য। শুরুটা একটু ভালোভাবে হলেও দলীয় ৩১ রানের মাথায় কাটা পড়েন দুই ওপেনিং ব্যাটসম্যান সৌম্য-ইমরুল। স্বাগতিকদের বিপক্ষে টেস্ট সিরিজেও এই দুই ব্যাটসম্যান ছিলেন ব্যর্থ। এখানে সেই ধারাবাহিকতা বজায় রাখলেন।
গেল সেই ধাক্কা। এরপর দ্বিতীয় ধাক্কা আসে দলীয় ৬১ ও ৬৩ রানের মাথায়। তখন ফিরেন লিটন (৮) ও মুশফিকুর (২২)। মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ ফেরেন ২৭ বলে ২১ রান করে। এছাড়া নাসির হোসেন ১২, মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন ১৩, মাশরাফি মর্তুজা ১৭ রান করেন। সফিউদ্দিন অপরাজিত ছিলেন।
স্বাগতিকদের বিপক্ষে মূল সিরিজের আগে নিজেদের ঝালিয়ে নিতে দক্ষিণ আফ্রিকা আমন্ত্রিত একাদশের বিপক্ষে এই প্রস্তুতি ম্যাচ খেলছে মাশরাফি বাহিনী।
বাংলাদেশের ওয়ানডে স্কোয়াড : মাশরাফি বিন মোর্ত্তজা (অধিনায়ক), তামিম ইকবাল, লিটন দাস, সৌম্য সরকার, মুমিনুল হক, ইমরুল কায়েস, মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ, মুশফিকুর রহিম, সাকিব আল হাসান, সাব্বির রহমান, নাসির হোসেন, মেহেদী হাসান মিরাজ, মোস্তাফিজুর রহমান, তাসকিন আহমেদ, রুবেল হোসেন ও মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন।
দক্ষিণ আফ্রিকা আমন্ত্রিত একাদশ : জেপি ডুমিনি (অধিনায়ক), ম্যাথুউ ব্রেটজেক, মবিউল বুদাজা, এবি ডি ভিলিয়ার্স, রবি ফাইলিংক, বার্ন হেনরিকস, হেনরিকস ক্লাসেন, কেশব মহারাজ, এইডেন মার্করাম, উইয়ন মাল্ডার, মালোসি সিবোতো, খায়া জন্ডো।
ফোকাস মাশরাফির দিকে
এ দিকে ওয়ানডে অধিনায়ক মাশরাফির ওপরই এখন সব ফোকাস। কারণ মুশফিক ইস্যুতে একটা দূরত্বও সৃষ্টি হয়ে গেছে টিম ম্যানেজম্যান্ট ও খেলোয়াড়দের মধ্যে এটি আর বলার অপেক্ষা রাখে না। মুখ ফুটে বলার নিয়ম নেই। বলেনও না কেউ। কিন্তু ভেতরে ভেতরে মুশফিক ইস্যুতে ক্ষিপ্তও ক্রিকেটাররা। মুশফিক যেমনটি বলেছিলেন, ম্যাচ জিতলে সব ক্রেডিট টিম ম্যানেজম্যান্টের আর ব্যর্থতার সব দায়ভার আমাদের। অনেক কষ্টেই কথাগুলো বলেছিলেন তিনি।
মাশরাফি এ দু’পক্ষের সমন্বয়ের আপ্রাণ চেষ্টা করে যাবেন। যদিও মাশরাফির হজম শক্তি আবার বেশি। কারণ টি-২০ নিয়ে তার সাথেও কম করেনি টিম ম্যানেজম্যান্ট। তবুও এখন সিরিজই মুখ্য। তা ছাড়া ক্রিকেটারদের একটা ধর্ম রয়েছে। সব সমালোচনার উত্তর দেন তারা পারফরম্যান্স দিয়ে। সেটিরই অপেক্ষায় হয়তো তারা; যার প্রস্তুতি আজই করে রাখবেন মাশরাফি-মুশফিক-তামিম-সাকিবরা।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন