বাংলাদেশের বোলিংয়ে চলছে এখন দৈন্যদশা। প্রতিপক্ষের ব্যাটসম্যানদের আউট করতে যেন রীতিমতো যুদ্ধ করতে হচ্ছে টাইগার পেসারদের।উইকেট যেন এখন সোনার হরিণ হয়ে গেছে বাংলাদেশের পেসারদের জন্য।
প্রথম ওয়ানডেতে ২৭৯ রানে লক্ষ্য তাড়া করা দক্ষিণ আফ্রিকার একটি উইকেটও নিতে পারেনি টাইগাররা।
বোলারদের এই ব্যর্থতা অবশ্য নতুন কিছু নয়। গত চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে সেমিফাইনাল খেলা বাংলাদেশের বোলাররা ৪ ম্যাচে নিয়েছেন মাত্র ১২ উইকেট!
পুরো বছরের হিসাবটা আরও করুণ। ২০১৭ থেকে এখন পর্যন্ত ১২ ওয়ানডে খেলে বাংলাদেশের শিকার মাত্র ৫৭ উইকেট, যা প্রতিপক্ষের উইকেট নেয়ার তালিকায় ১২তম!
এমনকি আরব আমিরাতের মতো দলও মাত্র ৭ ওয়ানডেতেই নিয়েছে ৫৭ উইকেট। সমান ১২ ম্যাচে জিম্বাবুয়ের শিকার ৮৩; আর এক ম্যাচ বেশি খেলা আফগানিস্তান নিয়েছে ৯৪ উইকেট।
এ বছর রঙিন পোশাকে ১৩ বোলার ব্যবহার করেছে টাইগাররা। যাদের কেউই একবারও ৫ উইকেট নিতে সমর্থ হননি।
কী দেশের মাটি, কী উপমহাদেশ, ইংল্যান্ড-দক্ষিণ আফ্রিকা- সব কন্ডিশনেই মোটা দাগে ব্যর্থ বাংলাদেশের বোলিং লাইনআপ।
সবশেষ ম্যাচে অভিষেক হল আরেক পেসার সাইফউদ্দিনের। কিন্তু কাজের কাজ হচ্ছে না কিছুই। দ্বিতীয় ম্যাচেই আবারও বাদ পড়লেন তিনি।
এদিকে বোলারদের এমন ব্যর্থতায় শুধু কপালের ভাজগুলো বেড়ে চলেছে বোলিং কোচ কোর্টনি ওয়ালশের।
অথচ সাবেক বোলিং কোচ জিম্বাবুইয়ান পেসার হিথ স্ট্রিকের সময়টা যেন স্বর্ণযুগ ছিল বাংলাদেশের জন্য। ২০১৪ সালের জুলাই থেকে বাংলাদেশ ক্রিকেটের সঙ্গে সম্পৃক্ত হন তিনি।
বাংলাদেশের ক্রিকেটে মোস্তাফিজুর রহমান, তাসকিন আহমেদ, আল আমিন হোসেনদের মতো পেসারদের উত্থান তার সময়েই।
বিশ্বকাপে কোয়ার্টার ফাইনাল সাফল্যের পর ঘরের মাঠে পাকিস্তান, ভারত ও দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে টানা তিনটি ওয়ানডে সিরিজ জয়ে স্ট্রিকের হাতে তৈরি বোলিং আক্রমণের বড় ভূমিকাও ছিল।
তবে ২০১৬ সালের টি২০ বিশ্বকাপের পর তিনি বাংলাদেশের সঙ্গে চুক্তি বাতিল করেন।
দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে চলমান দ্বিতীয় ওয়ানডে ম্যাচেও যেন হিথ স্ট্রিকের কথা মনে করিয়ে দিলেন ক্রিকইনফোর ধারাভাষ্যকাররা।
তাদের কথায়, সর্বশেষ কবে বাংলাদেশ প্রতিপক্ষকে কম রানে অলআউট করেছে মনে পড়ছে না। সম্ভবত নতুন বোলিং কোচ আসায় এমনটি হচ্ছে। হিথ স্ট্রিকের সময় সারা দেশে ভালো ভালো পেসারের আবির্ভাব হয়। মোস্তাফিজ, তাসকিনদের মতো তরুণ বোলারদের আগমণ ঘটে। মাশরাফি-রুবেলদেরও বোলিংয়ে ব্যাপক উন্নতি হয়। জানি না ওয়ালশ কি করছেন।
প্রসঙ্গত, হিথ স্ট্রিক চলে যাওয়ার পর বাংলাদেশের বোলিং কোচ হিসেবে কাজ শুরু করেন সাবেক ক্যারিবীয়ান পেসার কোর্টনি ওয়ালশ।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন