প্রথমে ব্যাটিং করে ৭ উইকেটে ১৬৯ রান তুলেছে রংপুর রাইডার্স।
সোমবার সন্ধ্যা ৬ টায় রাজধানীর শের-ই-বাংলা স্টেডিয়ামে সিলেট সিক্সার্সের বিপক্ষে টস হেরে ব্যাটিংয়ে বিপিএলে নিজেদের পঞ্চম ম্যাচে মাঠে নেমেছে গেইল-ম্যাককালামের রংপুর রাইডার্স।
শুরুটা দুর্দান্ত হয়েছিল রংপুরের। এই ম্যাচেও রাইডার্সদের হয়ে ব্যাটিংয়ের শুরুটা করেন ক্রিস গেইল ও ম্যাককালাম। আট ওভারের স্কোর ৮০ রান যোগ করেন এই দুই তারকা। ২১ বলে ৩৩ রান করেন ম্যাককালাম। সতীর্থ ফিরে যাওয়ার পর বেশিক্ষণ টিকেননি গেইল। ৩৯ বলে পাঁচ ছয় ও দুটি চারে ৫০ রান করেন গেইল।
গেইল-ম্যাককালাম ফেরার পর রানের চাকাটা ধীর হয়ে আসে রংপুরের। মোহাম্মদ মিঠুন-শাহরিয়ার নাফীস-থিসারা পেরেরারা বেশি কিছু করতে পারেননি। তবে রবি বোপারারা ১২ বলে ২৮ রানের ঝড়ে শেষ পর্যন্ত ১৬৯ রান তুলতে সমর্থ হয় রংপুর।
অন্যদিকে চাপে রয়েছে সিলেট সিক্সার্সও। প্রথম তিনটি ম্যাচ জিতে উড়তে থাকা দলটি পরের চার ম্যাচে জয়ের দেখা পায়নি। আজকের ম্যাচ জিতে আবার জয়ের ধারায় ফিরতে চাইবেন নাসির হোসেন-সাব্বির রহমানরা।
সাত ম্যাচে তিন জয় ও একটি ম্যাচ পরিত্যক্ত হওয়ায় সাত পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের চতুর্থ স্থানে রয়েছে নাসির হোসেনের সিলেট সিক্সার্স। অপরদিকে চার ম্যাচে তিনটিতে হেরে টেবিলের তলানিতে রয়েছে মাশরাফির রংপুর।
এর আগে বিপিএলে সহজ জয় পেয়েছে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ানস। এর ফলে পয়েন্ট তালিকার শীর্ষে উঠে এলো দলটি। সোমবার দুপুরে ঢাকাকে চার উইকেটে হারিয়ে সহজ জয় তুলে নেয় তারা।
১২৯ রানের তাড়া করতে নেমে ২৩ রানের মধ্যে তামিম ইকবাল ও লিটন দাসকে হারিয়ে বসে কুমিল্লা। তামিম ইকবাল ও লিটন দাসকে ফিরিয়ে দেন নারাইন-আবু হায়দাররা। ইমরুল কায়েস মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে চেয়েছিলেন, তবে সেটা হতে দেননি সাদ্দাম। এদিকে ড্যারেন ব্রাভো-জস বাটলার ও সাইফুদ্দিনকে ফিরিয়ে দিয়ে ঢাকাকে ম্যাচে ফেরান নারাইন ও আমির।
সতীর্থরা ফিরলেও অন্য প্রান্তে অবিচল থেকে যান শোয়েব মালিক। অপরাজিত ৫৪ রান করে কুমিল্লাকে জিতিয়েই মাঠ ছাড়েন এই পাকিস্তানি অলরাউন্ডার। দলে বাকি ব্যাটসম্যানদের মধ্যে ইমরুল ২০, তামিম ১৮, ব্রাভো ১২ ও বাটলার ১১ রান করেন।
ঢাকার বোলারদের মধ্যে মোহাম্মদ আমির ও সুনীল নারাইন নেন দুটি করে উইকেট। আবু হায়দার রনি ও সাদ্দাম নেন একটি করে উইকেট।
এর আগে ১৮.৩ ওভারে মাত্র ১২৮ রান করে অলআউট হয় ঢাকা ডায়নামাইটস। টস জিতে প্রথমে ব্যাটিং করতে নেমে হাসান আলীর তোপে পড়ে ঢাকা। নিজের প্রথম ওভারেই এভিন লুইস ও মেহেদী মারুফকে তুলে নেন এই পাক বোলার। এরপর অবশ্য কুমার সাঙ্গাকারা ও সুনিল নারাইনের ব্যাটে ঘুরে দাঁড়ায় ঢাকা। তখন পর্যন্ত ঢাকা ডায়নামাইটস ১২ ওভারে দুই উইকেট হারিয়ে ৯৭ রান করে ভাল অবস্থানে ছিল। দলীয় ১০৪ রান করে রান আউট হন সাঙ্গাকারা। লঙ্কান কিংবদন্তি করেন ২৮ রান। ৪৫ বলে ৭৬ রান করা নারাইন আউট হন দলীয় ১১৪ রানে।
এরপরই খেই হারিয়ে ফেলে দলটি। বাকি সময় শুধু যাওয়া আসার মধ্যে ছিল সাকিবসহ ঢাকার অন্য ব্যাটসম্যানরা। তৃতীয় উইকেট জুটিতে এই দুজন তোলেন ৯২ রান। নারাইন ও সাকিবকে ফিরিয়ে কুমিল্লাকে ম্যাচে ফেরান সাইফুদ্দিন।
এরপর আবার হাসানের তোপের মুখে পড়ে ঢাকা। আরো তিন উইকেট তুলে নিয়ে ঢাকার ইনিংসটাকে গুটিয়ে দেন তিনি। মাত্র ২১ বলে ২০ রান খরচায় পাঁচ উইকেট নেন এই পাকিস্থানী ফাস্ট বোলার। সাইফুদ্দিন নেন দুটি উইকেট।
এবারে লিগে এখন পর্যন্ত পয়েন্ট টেবিলে দারুণ অবস্থানে রয়েছে কুমিল্লা ও ঢাকা। শেষ ম্যাচ জয়ের ফলে শীর্ষে রয়েছে কুমিল্লা। ৬ ম্যাচে ৫ জয় ও এক হারে ১০ পয়েন্ট অর্জন করেছে তামিম ইকবালের নেতৃত্বে থাকা দলটি। শেষ পাঁচ ম্যাচেই জয় পেয়েছে একবারের চ্যাম্পিয়নরা।
অন্যদিকে ৭ ম্যাচে ৪ জয় ও এক হারে ৯ পয়েন্ট নিয়ে লিগ টেবিলের শীর্ষত্ব হারিয়ে দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে আফ্রিদি-পোলার্ডদের ঢাকা। একটি ম্যাচ বৃষ্টির কারণে পরিত্যক্ত হলে এক পয়েন্ট পায় দলটি।
ঢাকা ডায়নামাইটস
দেশি : সাকিব আল হাসান, মোসাদ্দেক হোসেন, আবু হায়দার, মোহাম্মদ শহীদ, জহুরুল ইসলাম, মেহেদী মারুফ, নাদিফ চৌধুরী, সাকলাইন সজীব, সাদমান ইসলাম, নূর আলম সাদ্দাম, খালেদ আহমেদ।
বিদেশি : কুমার সাঙ্গাকারা, শহীদ আফ্রিদি, শেন ওয়াটসন, সুনীল নারাইন, মোহাম্মদ আমির, এভিন লুইস, কেভন কুপার, রন্সফোর্ড বিটন, রোভম্যান পাওয়েল, ক্যামেরন ডেলপোর্ট, জো ডেনলি, আকিল হোসেইন, শাহীন আফ্রিদি, কাইরন পোলার্ড।
কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ানস
দেশি : তামিম ইকবাল, ইমরুল কায়েস, লিটন দাস, মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন, আল আমিন হোসেন, আরাফাত সানি, অলক কাপালি, মেহেদী হাসান, মেহেদী হাসান রানা, এনামুল হক, রকিবুল হাসান।
বিদেশি : শোয়েব মালিক, হাসান আলী, ফাহিম আশরাফ, ইমরান খান, ফখর জামান, জস বাটলার, কলিন মানরো, মারলন স্যামুয়েলস, ডোয়াইন ব্রাভো, ড্যারেন ব্রাভো, মোহাম্মদ নবী, রশিদ খান, সলোমন মিরে, রুম্মন রাইস।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন