দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে টেস্টে ব্যর্থতার পর দ্বিতীয় টেস্ট শেষে কোচ চান্ডিকা হাথুরুসিংহকে নিয়ে কড়া সমালোচনা করেছিলেন টেস্ট অধিনায়ক মুশিফিকুর রহিম। ওই ঘটনায় বিসিবির সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন বলেছিলেন, মুশফিকের মন্তব্য দেশের ক্রিকেটের ভাবমূর্তি নষ্ট করেছে। সোমবার মিরপুরে বিসিবির সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন জানিয়েছেন, দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে দ্বিতীয় টেস্ট যখন শেষ হলো, তারপরই হাথুরুসিংহে পদত্যাগত্রটা লিখেছে।
তাতে অনেকটাই পরিস্কার, ওই টেস্টে অধিনায়ক মুশফিকের সাথে প্রধান কোচ হাথুরুসিংহের সাথে কিছু একটা হয়েছে। যে কারণেই জাতীয় দলের প্রধান কোচ থেকে পদত্যাগের সিদ্ধান্তটা নিয়েছে হাথুরুসিংহে। দক্ষিণ আফ্রিকা ওই টেস্টে কিপিং ছেড়ে বাউন্ডারিতে ফিল্ডিং করতে দেখা যায় মুশফিককে।
এরপর ম্যাচ শেষে মুশফিক বলেছিলেন, “কোচরা চেয়েছেন বাইরে ফিল্ডিং করি। টিম ম্যানেজমেন্ট যেটা বলবে, সেটাই তো করতে হবে।”
অবশ্য মুশফিকের সেই বক্তব্যের পর পাপন বলেছিলেন, “সে কোথায় ফিল্ডিং করবে, সে সিদ্ধান্ত টিম ম্যানেজমেন্টের ছিল না। সিদ্ধান্তটি ছিল তার ব্যক্তিগত। কেউ চাপিয়ে দেয়নি।”
তবে দক্ষিণ আফ্রিকা সফর শেষে গত ৯ নভেম্বর বিসিবির কাছে পদত্যাগ পত্র দেন চান্ডিকা হাথুরসিংহে। কিন্তু ঠিক কী কারণে কোচ থেকে পদত্যাগ করেছেন তার কারণ এখনও জানে না বিসিবি। ইতোমধ্যে হাথুরুসিংহের পরিবর্তে টাইগারদের অন্তর্বর্তী কোচ হিসেবে খালেদ মাহমুদ সুজনকেই বেছে নিয়েছে বিসিবি।
এ বিষয়ে সোমবার সন্ধ্যায় মিরপুরে পাপন বলেন, “একদম পরিষ্কার করে যে কিছু বলেছে সেটা নয়, এইজন্যই আমরা তার আসার অপেক্ষা করছিলাম। সে বলুক, কেন সে এই সিদ্ধান্তটা নিয়েছে। ২-১ দিনের মধ্যেই তার আসার কথা ছিল। সিইওর সঙ্গে কথা হয়েছে, সে জানিয়েছে কয়েকদিন পরে আসবে।”
সিনিয়র ক্রিকেটারদের সঙ্গে তার কোন সমস্যাই ছিল কিনা এমন প্রশ্নে পাপন বলেন,“এটা আমি রিপোর্ট না পাওয়া পর্যন্ত বলতে পারবো না। তবে হাথুরু সিদ্ধান্তটা যে ওই সময়েই (দ্বিতীয় টেস্ট) নিয়েছে এ ব্যাপারে কোন সন্দেহ নেই।”
এছাড়া পাপন বলেন, “প্রত্যেকটা সফরে আমি থাকি কিংবা আমাদের বোর্ডের কেউ থাকেন। এবার কিন্তু তার সঙ্গে আমার যোগাযোগ হয়নি। প্রথম টেস্টের পর একদিনই তার সঙ্গে কথা হয়েছিল। ওটাই পুরো সফরের একবার কথা হয়। কথা বলে মনে হয়েছে, এমন কোন সমস্যা নেই। সব নরম্যাল। কিন্তু দ্বিতীয় টেস্টের পর যেহেতু সে পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছে, মনে হয় ওই সময় তিনি সিদ্ধান্ত নিয়েছে। কি কারণে পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছে, তার কাছ থেকে না শুনে মন্তব্য করা আসলে কঠিন। এগুলো আমরা আন্দাজ করতে পারি, কিন্তু নিশ্চিত হয়ে বলতে পারি না।”
প্রধান কোচ নেই এখন বিসিবি কি করে? এমন প্রশ্নে-“আমি আগেও বলেছি কেউ যদি থাকতে না চায়, তাকে আমরা জোড় করে রাখতে চাই না। তবে তার কাছ থেকে কিছু জিনিস জানা দরকার। একজন পেশাদার কোচ হিসেবে সে সব সময় যা করে, পুরো সিরিজের রিপোর্ট এবং পদত্যাগের কারণ জানা দরকার। এখন সে যদি মনে করে কোন কারণ ছাড়া শ্রীলঙ্কা দলের কোচের দায়িত্ব পালন করবেন, সেটা ভিন্ন ইস্যু। সেটা তার মুখ থেকে জানা দরকার।”
এছাড়া পাপন বলেন,“হাথুরুসিংহের জন্য আমরা অপেক্ষা করছি না। অপেক্ষা করছি তার রিপোর্টের জন্য। আমাদের জানতে হবে, আমাদের কোন কারণে নাকি ওর ব্যক্তিগত কারণে সে যাচ্ছে। ওর ব্যক্তিগত হলে সমস্যা নেই। আমাদের যদি কিছু থাকে তাহলে যেন জানায়। ওটা জানলেই যে কিছু একটা হবে তেমন না। জাস্ট আমাদের জানা দরকার।”
কোচের পদত্যাগের পর আপনি বলেছেন, সিনিয়র ক্রিকেটারদের কেউ কেউ কোচের পদত্যাগে খশি হবে। তাহলে কি সিনিয়র খেলোয়াড়দের সাথে কোন ঝামেলার কারণেই সে পদত্যাগ করেছেন এমন প্রশ্নে পাপন বলেন,“সমস্যা আছে এটা মিডিয়াতেই বেশি আসতো। গত কয়েক বছরে আমি কোন সমস্যাই দেখিনি। সিনিয়র খেলোয়াড় বলতে আমরা পাঁচজনকে ধরি। এখানে মাশরাফি-তামিম-সাকিব কাছে কখনোই শুনিনি সমস্যা আছে। রিয়াদেরতো কারও সঙ্গেই কোন সমস্যা নেই। একটা থাকতে পারে, যেহেতু মুশফিকের কয়েকটা স্টেইটম্যান্ট কিছু কথা হয়েছে। এই সিরিজেও হয়েছে। তারপরও আমার মনে হয় কোন সমস্যা থাকার কথা নয়।”
নিউজবাংলাদেশ
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন