ব্রিসবেনের মাটিতে পা দিয়েই ভবিষ্যৎবাণী করে ফেললেন এড মিলার। ইংল্যান্ড অ্যাশেজ জিতবে ৩-২ ব্যবধানে। কত লোকে কত কিছুই তো বলে! মিলার আবার কে! এমন প্রশ্নে বলতে হয়, এই মিলারকে সেই কত লোকের তালিকায় ফেলা যাবে না। কারণ যখন জানবেন কেবল অ্যাশেজ দেখতে ইংল্যান্ড থেকে ২২ দেশ ঘুরে অস্ট্রেলিয়ায় এসেছেন এ ভদ্রলোক, পথে একবারও চড়েননি বিমানে, অনেকটা পথই এসেছেন পায়ে হেঁটে, তখন তার কথাকে সামান্য গুরুত্ব দিতেই হয়! এমন ক্রিকেটপ্রেম যার, তার ক্রিকেটপ্রজ্ঞাও নিশ্চয় একেবারে ফেলনা নয়!
পেশায় শিক্ষক এড মিলারের ইংল্যান্ড থেকে অস্ট্রেলিয়াগামী সফর শুরু হয় চলতি বছরের জুলাইয়ে। এক বছর চাকুরী না করার সিদ্ধান্ত নিয়ে তবেই সফরের শুরু। ভিন্ন কিছু করে দেখাতে চান, তাই সিদ্ধান্তটাও হওয়া চাই ব্যতিক্রমধর্মী । যেমন ভাবা, তেমন কাজ। মিলার বেরিয়ে পড়লেন পায়ে হেঁটে অ্যাশেজ সফরে।
বেলজিয়াম থেকে শুরু করে বলতে অর্ধ-পৃথিবীই ঘোরা হয়ে গেছে মিলারের। যাত্রা পথে মিশ্র অভিজ্ঞতার মুখোমুখি হয়েছেন। অস্ট্রিয়ার খাঁড়া বরফ আচ্ছাদিত পাহাড় হেঁটে পার হতে হয়েছে। আকস্মিক ঝড় ও বন্যায় একবার মরতে মরতে বেঁচে গেছেন। পায়ে চলার সেতুও ডুবে ছিল বন্যায়। তারপরও ঠিকই অস্ট্রিয়া পেরিয়ে অন্য দেশে গেছেন মিলার। শেষে পা পড়েছে অস্ট্রেলিয়ায়।
পথে মানুষের ভালোবাসা ও সাহায্য দুহাতভরে পেয়েছেন এ ক্রিকেট ভক্ত শিক্ষক। পানি পথে অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে পা রাখতে ইন্দোনেশিয়ার মানুষদের সাহায্য পেয়েছেন। বৈরি রাশিয়ার মানুষদের কাছ থেকেও পেয়েছেন সমান সাহায্য। এমনকি অস্ট্রেলিয়ার ডারউইন থেকে ব্রিসবেনে যেতে যখন তার কাছে ২ হাজার ডলার হাঁকাচ্ছিল ট্যাক্সি চালকরা, তখন দিন প্রতি ১০ ডলারে তাকে প্রথম অ্যাশেজের ভেন্যুতে পৌঁছে দিয়েছেন এক নারী।
তবে শুধু খেলা দেখতেই অস্ট্রেলিয়ায় আসেননি মিলার। পথে পথে সেরেছেন একটি মহৎ কর্মও। টেস্টিকুলার ক্যান্সারের বিরুদ্ধে জনগণকে সচেতন করার পাশাপাশি তহবিল সংগ্রহ করেছেন। খেলার মাঠে দর্শকদের কাছেও তহবিল সংগ্রহ করার ইচ্ছা তার। আইসিসিকে দেয়া সাক্ষাৎকারে সেজন্য আবেদন জানিয়ে রেখেছেন।
‘সন্দেহাতীতভাবে আমার জীবনের সেরা অভিজ্ঞতা। পথে পথে বিভিন্ন সংস্কৃতির মানুষের সঙ্গে মিশতে পারা আমার কাছে ছিল দারুণকিছু। পথে টেস্টিকুলার ক্যান্সারের জন্য তহবিল গড়েছি। মাঠেও দর্শকদের কাছে চাইব। খেলা দেখতে আসা ক্রিকেটভক্তরা চাইলে আমার বক্সে একটা কয়েন ফেলতে পারেন।’
পুরো ভ্রমণে বিমানে না চড়লেও শেষপর্যন্ত আকাশে উড়তেই হচ্ছে মিলারকে। হেঁটে কিংবা গাড়িতে চড়ে দেখতে চাইলে দ্বিতীয় টেস্টের ভেন্যু অ্যাডিলেডে সময় মত পৌঁছানো হবে না। তাই বিমানে চড়েই সেখানে যাওয়ার ইচ্ছে ক্রিকেট পাগল ইংলিশ শিক্ষকের।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন