আর মাত্র কিছুসময় অপেক্ষা। ঠিক সন্ধ্যায় বিপিএলের পঞ্চম আসরের ফাইনালের লড়াইয়ে মাঠে নামবে মাশরাফির রংপুর রাইডার্স ও সাকিবের ঢাকা ডায়নামাইটস।
দুই দলের দুই অধিনায়কই কিংবদন্তী। একজন জাতীয় দলের ওয়ানডে অধিনায়ক আরেকজন টেস্ট ও টি-টোয়েন্টি দলের। দেশসেরা এই দুই ক্রিকেটারের লড়াই দেখতে মুখিয়ে রয়েছে লাখো-কোটি ক্রিকেটপ্রেমী।
নিজেদের সেরাটা দিয়েই ফাইনালে পৌঁছেছে দুই দল। তাই মহারণে কেউ কাউকে ছেড়ে কথা বলবে না তা স্পষ্ট।
মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৬টায় মিরপুরের শের-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে খেলাটি শুরু হবে।
বিপিএলের গত চার আসরের শিরোপা কার্যত ভাগাভাগি করে নিয়েছেন মাশরাফি এবং সাকিব। প্রথম দুই আসরে মাশরাফির নেতৃত্বেই শিরোপা ঘরে তোলে ঢাকা গ্লাডিয়েটরস। তাঁর নেতৃত্বাধীন ঢাকা গ্ল্যাডিয়েটরস ২১ ম্যাচের ১৬টিতেই জেতে।
প্রথমবার বরিশাল বার্নাস ও দ্বিতীয়বার চিটাগং কিংসকে হারায় মাশরাফির ঢাকা। ২০১৫ সালে তৃতীয় আসরে মাশরাফিকে দলে ভেড়ায় কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স। পুরো আসরে দাপট দেখিয়ে ফাইনালে বরিশাল বুলসকে হারিয়ে শিরোপা ঘরে তোলে তারা। গত বছর ম্যাশের সম্রাজ্যে হানা দেন সাকিব। ঢাকা ডায়নামাইটস চ্যাম্পিয়ন হয় বিশ্বসেরা অলরাউন্ডারের নেতৃত্বে। তাই মাশরাফির সামনে চতুর্থ আর সাকিবের সামনে টানা দ্বিতীয় শিরোপার হাতছানি।
শিরোপা খরা কাটাতে ম্যাশকে দলে টানে উত্তরবঙ্গের দলটি। সিদ্ধান্তটা যে ভুল ছিলো না তা টুর্নামেন্টের পরতে পরতে প্রমাণ দিয়েছেন মাশরাফি। ব্যাটে বলে দারুণ নৈপুণ্যের পাশাপাশি দূরদর্শী অধিনায়কত্বে দলকে তুলেছেন ফাইনালে। ১২ ম্যাচে ৬ জয় নিয়ে কোনোভাবে শেষ চারে জায়গা পাওয়া রংপুরই এখন শিরোপার শক্ত দাবিদার!
কোয়ালিফায়ার-এলিমিনেটরে দাপুটে দুই জয় জানান দিচ্ছে সেটারই। লিগ-পর্বে পারফরম্যান্স আহামরি না হলেও শেষ চারে রংপুর আবির্ভূত হয়েছে দুর্দান্ত এক দল হিসেবে। আর এর পেছনে অবশ্যই বড় অবদান মাশরাফি বিন মুর্তজার। সামনে থেকেই নেতৃত্ব দিয়েছেন দলকে। বোলিংয়ে ধারাবাহিক ভালো করেছেন, ১৩ ম্যাচে নিয়েছেন ১৪ উইকেট।
দলের প্রয়োজনে দেখা গেছে তাঁর ব্যাটিং ঝলকও, ১৩ ম্যাচে করেছেন ১৩১ রান। অপরদিকে স্বভাবসুলভ অলরাউন্ড নৈপুণ্য দেখিয়েছেন সাকিবও। ব্যাট হাতে ১২ ম্যাচে ১৮৫ রান করেছেন। আর ২১ উইকেট নিয়ে আসরের সর্বোচ্চ উইকেটশিকারীও তিনিই।
কাগজে-কলমের শক্তি মাঠেও দেখিয়েছে সাকিবের ঢাকা ডায়নামাইটস। গোটা আসরে দাপট দেখানো দলটি গ্রুপ পর্বের ১২ ম্যাচে ৭ জয়ের বিপরীতে হেরেছে মাত্র ৪টিতে। কোয়ালিফারে কুমিল্লার বিপক্ষে ৯৫ রানের বিশাল জয় নিয়ে ফাইনালে পা রেখেছে তারা। তাই গেইল-ম্যাককালামদের মোটেও ভয় পাচ্ছে না রাজধানীর দলটি। অন্তত এমনটাই মত দলের কোচ খালেদ মাহমুদ সুজনের। তার মতে, তারাই সেরা দল। ভয় পাবেনই বা কেন? যে দলে কাইরোন পোলার্ড, সুনীল নারাইন, এভিন লুইস, শহিদ আফ্রিদি, সাকিব আল হাসানের মতো টি-টোয়েন্টি স্পেশালিস্টরা আছেন তাদের আবার ভয় কিসের!
তবে সুজন মুখে মুখে যাই বলুক। ভাবতে তাদের হবেই! বিপিএলে চলতি আসরের দু'টি সেঞ্চুরিই এসেছে রংপুরের ব্যাটসম্যানদের ব্যাটেই। তাও সবশেষ দুই ম্যাচে। গেইল এবং চার্লসদের তাণ্ডব কিছুটা হলেও সাকিবদের কপালে ভাজ ফেলবে এটা বলার অপেক্ষা রাখে না। তার সঙ্গে যোগ হয়েছেন ব্রেন্ডন ম্যাককালাম। গোটা টুর্নামেন্টে নিজের ছায়া হয়ে থাকা এ কিউই খোলস ছেড়ে বের হয়েছেন শেষ সময়ে। কুমিল্লার বিপক্ষে ৪৬ বলে ৭৮ রানের ইনিংস ঘোষণা দিচ্ছে নিজেকে ফিরে পাবার।
সবদিক বিবেচনায় শক্তির খুব বেশি তারতম্য নেই দু'দলের। তাই ফাইনালের উত্তাপটাও একটু বেশি। এখন দেখা যাক ট্রফিটা কে উঁচিয়ে ধরেন, সাকিব না মাশরাফি।
ব্রেকিংনিউজ
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন