তবু গচ্চা ১১৭ কোটি টাকাতবু গচ্চা ১১৭ কোটি টাকা
ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগ (আইপিএল), অস্ট্রেলিয়ান বিগ ব্যাশ টি২০, বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ (বিপিএল), ক্যারিবিয়ান প্রিমিয়ার লিগ (সিপিএল) ও পাকিস্তান সুপার লিগের (পিএসএল) আদলে এ বছর ফ্র্যাঞ্চাইজিভিত্তিক টি২০ লিগ শুরু করার কথা ছিল দক্ষিণ আফ্রিকারও। কিন্তু স্পন্সর ও টিভি সম্প্রচার চুক্তির সংকটের কারণে শেষ পর্যন্ত প্রথম বছর আসরটি আলোর মুখ দেখেনি। এক বছরের জন্য লিগটি স্থগিত করা হয়। মূলত বড় ধরনের আর্থিক লোকসানের ভয়েই লিগ স্থগিত করে দক্ষিণ আফ্রিকা ক্রিকেট বোর্ড (সিএসএ)। তবু পার পায়নি তারা। টুর্নামেন্ট না হলেও প্রথম বছর মোট ১ কোটি ৪১ লাখ ৬০ হাজার ডলার বা ১১৭ কোটি টাকা লোকসান দিতে হচ্ছে। টুর্নামেন্ট এগিয়ে নিলে তাদের আড়াই কোটি ডলার লোকসানে পড়ার সম্ভাবনা ছিল।
আসলে লোকসানের কারণ চুক্তিবদ্ধ খেলোয়াড়দের বেতন। লোকসানের প্রায় অর্ধেক ব্যয় হবে বেতনের পেছনে। যেসব খেলোয়াড়ের সঙ্গে এরই মধ্যে চুক্তি করেছে আটটি ফ্র্যাঞ্চাইজি, তাদের বেতন দিতে হবে দক্ষিণ আফ্রিকান বোর্ডকেই। টুর্নামেন্ট মাঠে না গড়ালেও চুক্তিবদ্ধ খেলোয়াড়দের ৬০ শতাংশ বেতন পরিশোধ করার বাধ্যবাধকতা রয়েছে। মোট তিন কিস্তিতে এ অর্থ পরিশোধ করবে বোর্ড। তবে এজন্য ঋণ করতে হবে না প্রোটিয়া বোর্ডকে। কেননা ‘শক্ত আর্থিক কাঠামো’ থাকার দাবি করা সিএসএর কোষাগারে এ মুহূর্তে মজুদ রয়েছে ৩ কোটি ৯৩ লাখ ৪০ হাজার ডলার, যার সাহায্যে তারা ক্রিকেটারদের পাওনা পরিশোধ করতে সমর্থ হবে। বুধবার বোর্ডের পরিচালনা পর্ষদের এক বৈঠক শেষে লোকসানের খবর দেয়ার পাশাপাশি নিজেদের আর্থিক সক্ষমতার কথাও জানানো হয়।
টি২০ টুর্নামেন্ট করতে না পারার কারণ খতিয়ে দেখতে গত অক্টোবরে অভ্যন্তরীণ একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে সিএসএ। এ কমিটি আসর পরিচালনা, খেলোয়াড়দের বেতন, স্টাফ নিয়োগ, খেলোয়াড় ও ডেলিগেশন ব্যবস্থাপনা, স্ট্র্যাটেজি ও সিদ্ধান্ত প্রণয়নের মতো বিষয়গুলো খতিয়ে দেখেছে। এ নিয়ে তারা বিশদ প্রতিবেদন পেশ করেছে, যার ভিত্তিতেই আর্থিক লোকসানের তথ্য জানতে পেরেছে বোর্ড। প্রতিবেদনে টি২০ গ্লোবাল লিগকে ‘অটেকসই’ বলেও অভিহিত করা হয়েছে।
এখন নতুন করে টুর্নামেন্ট নিয়ে ভাবছে দক্ষিণ আফ্রিকা বোর্ড। বিশ্বের বিভিন্ন দেশের টি২০ লিগের মডেল অনুসরণ করে জুতসই একটি টুর্নামেন্টের পরিকল্পনা তাদের। সবকিছু ঠিক থাকলে আগামী নভেম্বর নাগাদ টি২০ গ্লোবাল লিগ আয়োজন করা হতে পারে। নতুন মডেল বোর্ডে অনুমোদন পেলে নতুন স্পন্সর ও টিভি চুক্তির প্রক্রিয়া শুরু করা হবে। লজিস্টিক সমস্যা ও আর্থিক লোকসানের শঙ্কায় স্থগিত হয় টি২০ গ্লোবাল লিগ। প্রথম আসর শুরুর কথা ছিল ৩ নভেম্বর, যা মুলতবি রয়েছে ২০১৮ সালের নভেম্বর পর্যন্ত।
টি২০ গ্লোবাল লিগে ফ্র্যাঞ্চাইজি কিনেছেন বলিউড সুপারস্টার শাহরুখ খান ও আরেক বলিউড অভিনেত্রী প্রীতি জিনতা। ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগ ও ক্যারিবিয়ান সুপার লিগে ফ্র্যাঞ্চাইজির মালিক শাহরুখ টি২০ গ্লোবাল লিগে কেপটাউন নাইট রাইডার্সের স্বত্বাধিকারী। পার্ল শহরভিত্তিক ফ্র্যাঞ্চাইজি স্টেলেনবখ কিংসের মালিক প্রীতি, যিনি আইপিএলে কিংস ইলেভেন পাঞ্জাবের একাংশের মালিক। টি২০ গ্লোবাল লিগে বেনোনি জালমির মালিক পাকিস্তানের জাভেদ আফ্রিদি, যিনি পিএসএলে পেশোয়ার জালমির কর্ণধার। এছাড়া ব্লোয়েমফন্টেইন সিটি ব্লেজার্সের মালিক সুশীল কুমার, ডারবান কারান্দার্সের মালিক রানা ফাওয়াদ, জো’বার্গ জায়ান্টসের মালিক জিএমআর গ্রুপ, নেলসন ম্যান্ডেলা বে স্টারসের মালিক অজয় শেঠি ও প্রিটোরিয়া মেভারিকসের মালিক হিরেন ভানু। ক্রিকইনফো
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন