ত্রিদেশীয় সিরিজের চতুর্থ ম্যাচে প্রথমে ব্যাট করে শ্রীলঙ্কাকে ১৯৯ টার্গেট দিয়েছে জিম্বাবুয়ে। প্রতিপক্ষ বোলারদের সাফল্যে এবং ব্যাটসম্যানদের ব্যর্থতায় ৩৬ বল বাকি থাকতেই অল আউট হয়েছে জিম্বাবুয়ে।
রবিবার দুপুর ১২টায় মিরপুর শেরে বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে শুরু হয় ম্যাচটি। একা দারুণ লড়েছিলেন অবসর ভেঙে ফিরে আসা ব্রেন্ডন টেলর। তার হাফ সেঞ্চুরির পরও ৪৪ ওভারে ১৯৮ রানেই গুটিয়ে যায় দলটি।
শেরে বাংলা স্টেডিয়ামে দিনের শুরুতে ৪৪ রানের ওপেনিং জুটিও গড়েছিল তারা। কিন্তু জিম্বাবুইয়ানদের ইনিংস ভেঙে পড়ে থিসারা পেরেরার দুর্ধর্ষ বোলিংয়ে। শুধু এ জুটিই ভাঙেননি, টপ অর্ডারের চারজন ব্যাটসম্যানকেই আউট করেছেন তিনি। দলীয় ৫৬ রানের প্রথম তিন উইকেট তুলে ক্রেমারের দলকে বিপদে ফেলে দেন মিডিয়াম পেসার।
এরপর মাঝে ফিরে একাই দলকে টেনে নেওয়া ব্রেন্ডন টেলরকেও ফেরান পেরেরা। দারুণ বল করেছেন নুয়ান প্রদিপও। ৩টি উইকেট পেয়েছেন তিনি। আর চায়নাম্যান লক্ষন সান্দাকান পেয়েছেন ২টি উইকেট।
জিম্বাবুয়ের পক্ষে সর্বোচ্চ ৫৮ রানের ইনিংস খেলেছেন টেলর। ৮০ বলের ইনিংসে ৬টি চার মেরেছেন এ উইকেটরক্ষক-ব্যাটসম্যান। দলীয় ৭৩ রানে ৫ উইকেট হারানোর পর পঞ্চম উইকেটে ম্যালকম ওয়ালারকে নিয়ে দলের হাল ধরেছিলেন টেলর। ৬৬ রানের জুটিও গড়েছিলেন । তবে ওয়ালারের বিদায়ের পর আবার ভেঙে পড়ে জিম্বাবুয়ের ইনিংস। আর টেলরের বিদায়ের পর কার্যত শেষ হয়ে যায় জিম্বাবুয়ের বড় রানের আশা।
তবে জিম্বাবুয়ের পুঁজি দুইশ রানের কাছাকাছি যায় শেষ দিকে অধিনায়ক গ্রায়েম ক্রেমারের ব্যাটে। ৪২ বলে ৩৪ রানের ইনিংস খেলেন তিনি। এছাড়া ম্যালকম ওয়ালার ২৪, সলোমান মিরে ২১ ও হ্যামিল্টন মাসাকাদজা ২০ রান করেন। বাংলাদেশের বিপক্ষে ৪৯ ওভারে অল আউট হয়েছিল জিমম্বাবুয়ে। এবার শ্রীলঙ্কার জেতা জরুরি ম্যাচে তারা শেষ ৬ ওভার হাতে রেখে।
ত্রিদেশীয় সিরিজের চতুর্থ ম্যাচে আজকের ম্যাচটাই না ‘সেমিফাইনাল’ হয়ে যায়। মিরপুর শেরে বাংলা জাতীয় স্টেডিয়ামে টস জিতে ব্যাটিং করেছে জিম্বাবুয়ে। আগের ম্যাচে আগে ব্যাট করে জিম্বাবুয়ে ১২ রানে হারিয়েছে শ্রীলঙ্কাকে। টস হেরে সেবার ব্যাটিং পেয়েছিল জিম্বাবুয়ে। আজ জিতলে জিম্বাবুয়েও ফাইনালে। হলো তো ‘সেমিফাইনাল’ নামকরণের সার্থকতা? আর শ্রীলঙ্কা জিতলে সে ক্ষেত্রে টুর্নামেন্টের পরের দুই ম্যাচ পাবে প্রাণ।
ফাইনালের আশা টিকিয়ে রাখতে শ্রীলঙ্কার এ ম্যাচে জয়টা খুব জরুরী। চন্ডিকা হাথুরুসিংহের দলের জন্য সমীকরণটা বেশ কঠিন। শেষ দুটি ম্যাচেই জিততে হবে। পাশাপাশি হিসেব করতে হবে বোনাস পয়েন্টেরও। জিততে হবে জিম্বাবুয়েরও। তবে হারলেও আরও একটা সুযোগ পাবে তারা। লিগ পর্বে নিজেদের শেষ ম্যাচ তারা খেলবে স্বাগতিক বাংলাদেশের বিপক্ষে।
ত্রিদেশীয় সিরিজটার যে প্রেক্ষাপটে দাঁড়িয়ে এই ম্যাচ, তাতে এটিই হয়ে যেতে পারে সেমিফাইনাল। আবার হতে পারে কোয়ার্টার ফাইনালও। কোনটি হবে, তা নির্ভর করছে ম্যাচের ফলের ওপর। জিম্বাবুয়ের জয় এটিকে দেবে সেমিফাইনালের মর্যাদা, শ্রীলঙ্কা জিতলে কোয়ার্টার ফাইনাল।
জিম্বাবুয়ের সবচেয়ে বড় ভরসা লঙ্কানদের বিপক্ষে আগের ম্যাচেরই ম্যাচসেরা সিকান্দার রাজা। সিরিজে দুই ম্যাচেই ফিফটি পেয়েছেন, উইকেট তিনটি। নিজেই বলেছেন, বিপিএলের অভিজ্ঞতাই এর রহস্য। আরভিনের কথাতেও এর প্রতিধ্বনি, ‘ও বিপিএলে খেলেছে।
নিজেদের প্রথম ম্যাচে বাংলাদেশের কাছে বড় ব্যবধানে হারলেও দ্বিতীয় ম্যাচে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে জয় তুলে নেয় জিম্বাবুয়ে। এদিকে জিম্বাবুয়ের পর বাংলাদেশের কাছেও হেরে যায় হাথুরুর শিষ্যরা। তাই এ ম্যাচে জয়ের কোন বিকল্প নেই দলটির।
এদিকে তিন জাতির এই সিরিজে দুই জয়ে এরই মধ্যে ফাইনাল নিশ্চিত করেছে বাংলাদেশ। বাংলাদেশের বিপক্ষে ৮ উইকেটের হার দিয়ে নিজেদের মিশন শুরু করলেও দ্বিতীয় ম্যাচে শ্রীলঙ্কাকে ১২ রানে হারায় জিম্বাবুয়ে।
শ্রীলঙ্কা একাদশ: উপল থারাঙ্গা, কুশল পেরেরা, দীনেশ চান্ডিমাল, ডিকভেলা, কুশল মেন্ডিস, আসলে গুনারত্নে, থিসারা পেরেরা, আকিলা ধনঞ্জয়া, সুরাঙ্গা লাকমল, লাকশান সান্দাকান, নুয়ান প্রদীপ।
জিম্বাবুয়ে একাদশ: হ্যামিল্টন মাসাকাদজা, সলোমন মিরে, ক্রেইগ আরভিন, ব্রেন্ডন টেলর, সিকান্দার রাজা, পিটার মুর, ম্যালকম ওয়ালার, গ্রায়েম ক্রেমার (অধিনায়ক), ব্লেসিং মুজারাবানি, টেন্ডাই চাতারা, কাইল জার্ভিস।
সংক্ষিপ্ত স্কোর :
জিম্বাবুয়ে : ১৯৮ (মাসাকাদজা ২০, মিরে ২১, আরভিন ২, টেলর ৫৮, রাজা ৯, ওয়ালার ২৪, মুর ০, ক্রেমার ৩৪, জার্ভিস ৫, চাতারা ২*, মুজারাবানি ০; লাকমাল ০/২৩, প্রদিপ ৩/২৮, থিসারা ৪/৩৩, ধনঞ্জয়া ০/৪৫, সান্দাকান ২/৫৭, গুনারাত্নে ০/৪।)
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন