বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দল টি টোয়েন্টি ক্রিকেট খেলছে ২০০৬ সাল থেকে। সেই ম্যাচে বাংলাদেশ জিম্বাবুয়েকে ৪৩ রানে হারিয়েছিল।
২০০৫ সালের ১৭ই ফেব্রুয়ারি প্রথমবারের মতো আন্তর্জাতিক টি টোয়েন্টি ম্যাচ আয়োজিত হয় অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ডের মধ্যে। খবর বিবিসির
প্রথম টি টোয়েন্টি বিশ্বকাপ আয়োজিত হয় ২০০৭ সালে। সেবার বিশ্বকাপের প্রথম ম্যাচেই ওয়েস্ট ইন্ডিজকে হারিয়েছিল বাংলাদেশ।
কিন্তু এরপর আর টি টোয়েন্টি বিশ্বকাপ বা কোনো সিরিজে বাংলাদেশ তেমন ভাল করতে পারেনি।
বাংলাদেশ ২০০৯, ২০১০ ও ২০১২ সালের ওয়ার্ল্ড টি টোয়েন্টিতে আয়ারল্যান্ডসহ সবগুলো ম্যাচে হেরেছিল।
২০১৪ সালে ঘরের মাটিতে ওয়ার্ল্ড টি টোয়েন্টির বাছাইপর্বে হংকংয়ের বিপক্ষে ২ উইকেটে হারে বাংলাদেশ। এরপর মূলপর্বেও সবগুলো ম্যাচেই হারের মুখ দেখে বাংলাদেশের টি টোয়েন্টি দল।
২০১৬ সালের ওয়ার্ল্ড টি টোয়েন্টিতেও ভারতের বিপক্ষে জয়ের সুযোগ থাকা সত্ত্বেও হেরে যায় বাংলাদেশ, বাছাইপর্বে পর বড় দলগুলোর বিপক্ষে জয় পায়নি বাংলাদেশ।
সেই টি টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ওমানের বিপক্ষে জয়ের পর টানা ৮ ম্যাচ হেরেছে বাংলাদেশ। ২০১৭ সালে শ্রীলংকার বিপক্ষে টি টোয়েন্টি সিরিজে এক ম্যাচে জয়ের পর আবারো টানা চার ম্যাচে হেরেছে বাংলাদেশ।
বাংলাদেশের কি কোন নির্দিষ্ট টি টোয়েন্টি স্কোয়াড আদৌ আছে?
বাংলাদেশ জাতীয় দলের সাবেক ক্রিকেটার ও ক্রিকেট বিশ্লেষক নিয়ামুর রশীদ রাহুল বলেন, ‘২০০৬-০৭ সাল থেকে শুরু করা হলেও ঘরোয়া ক্রিকেটে টি টোয়েন্টি এসেছে মূলত ২০০৯ বা ২০১০ সাল থেকে। বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ হচ্ছে কিন্তু এটা মূলত ফ্র্যাঞ্চাইজ-ভিত্তিক - এখানে অধিকাংশই বিদেশী খেলোয়াড়দের দাপট থাকে।’
আগে একাদশে চারজন বিদেশী খেলাতে পারলেও, ২০১৭ সাল থেকে বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের দলগুলো পাঁচজন বিদেশী ক্রিকেটার খেলানোর অনুমতি পেয়েছে। ফলে দেশী ক্রিকেটারদের সুযোগ আরো সংকুচিত হয়েছে।
রাহুলের মতে, বাংলাদেশের টি টোয়েন্টি দলটা মূলত ওয়ানডে ও টেস্ট স্কোয়াডের একটি সংমিশ্রণ। যারা ওয়ানডে খেলছে, তারাই টেস্ট খেলছে, আবার তারাই টি টোয়েন্টি খেলছে। কিন্তু অস্ট্রেলিয়া, ইংল্যান্ড বা নিউজিল্যান্ডে তিন ফরম্যাটের খেলোয়াড়দের মধ্যে তারতম্য থাকে।
যেমন সদ্য শেষ হওয়া শ্রীলংকার বিপক্ষে টেস্ট সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচে সাব্বির রহমানকে দলে নেয়া হয়। কারণ হিসেবে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের প্রধান নির্বাচক মিনহাজুল আবেদীন নান্নু জানান, টি টোয়েন্টি সিরিজের কথা মাথায় রেখেই তাকে টেস্ট দলে নেয়া হয়েছে।
নিয়ামুর রশিদ রাহুল বলেন, ‘এই ফরম্যাটে খেলোয়াড় বেশি বেশি তুলে আনতে হলে তিন ফরম্যাটে তিনটি ভিন্ন সম্পূর্ণ ঘরোয়া লিগ খুব দরকার। তাতে করে বোঝা যাবে কে কোন ফরম্যাটে ভাল। দল গঠনেও সুবিধা হবে।’
এক্ষেত্রে রাহুলের পরামর্শ, ঢাকা প্রিমিয়ার ডিভিশন ক্রিকেটের মতো ওয়ানডে টুর্নামেন্ট টি টোয়েন্টি ফরম্যাটেও করাটা প্রয়োজন। তাতে বৈচিত্র্য বাড়বে ক্রিকেটারের।
যারা খেলছে টি টোয়েন্টি তাদের সক্ষমতা কতটুকু?
নিয়ামুর রশীদ রাহুলের মতে, টি টোয়েন্টি ক্রিকেটের তীব্রতা অনেক বেশি। এখানে শুধু ব্যাটিংটা জানলেই হবে না, কখনো ভাল বলে ঝুঁকি নিয়ে মারতে হয়। সেক্ষেত্রে কব্জির জোর ও বলের সাথে চোখের যোগাযোগটা জরুরী।
এক্ষেত্রে শ্রীলংকান ব্যাটসম্যান দাসুন সানাকাকে উদাহরণ হিসেবে দেখিয়েছেন তিনি। সানাকার ঘরোয়া টি টোয়েন্টি রেকর্ড অনেক ভাল। নিয়মিত ছক্কা হাঁকাতে পারদর্শী তিনি। যেমন বাংলাদেশের বিপক্ষে শেষ টি টোয়েন্টিতে ১১ বলে ৩০ রান করেছেন। এই গতিতে রান তোলাটা গুরুত্বপূর্ণ।
নিয়ামুর রশীদ রাহুলের মতে, একজন ক্রিকেটারের লাইফস্টাইলটা বেশ গুরুত্বপূর্ণ। ক্রিকেট খেলাটাকে কতটা গুরুত্ব দিচ্ছে সে। এক্ষেত্রে জ্যেষ্ঠ ক্রিকেটারদের অনুসরণ করার কথা জানিয়েছেন তিনি।
রাহুল বলেন, ‘ক্রিকেটারদের মানসিকতায়ও পরিবর্তন আনতে হবে। যেমন সাকিব আল হাসান, মাশরাফি, মুশফিক, তামিমের লাইফস্টাইল একরকম যারা একটু নবাগত তরুণ তাদের জীবনধারণ একরকম। তাই সিনিয়র ক্রিকেটাররা নিয়মিত পারফর্ম করেন আর তরুণদের ভাল করাটা তেমন নিয়মিত থাকে না।’
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন