বাংলাদেশ ভারতের বিপক্ষে দ্বিতীয়বারের মতো কোনো আসরের ফাইনালে মুখোমুখি হচ্ছে। সন্ধ্যায় কলম্বোতে সাকিব আল হাসানের নেতৃত্বে নিদাহাস ট্রফির শিরোপা জেতার লড়াইয়ে ভারতের বিপক্ষে মাঠে নামবে বাংলাদেশ। এর আগে বাংলাদেশ মোট চারবার দুইয়ের অধিক দল নিয়ে করা টুর্নামেন্টের ফাইনালে ওঠেছিলো।
২০০৯ সালে ত্রিদেশীয় সিরিজের ফাইনালে মুখোমুখি হয় বাংলাদেশ ও শ্রীলংকা। সেবার বাংলাদেশ ১৫২ রান তোলে শুরুতে ব্যাট করে। মাত্র ৬ রানে শ্রীলংকার ৫ উইকেট পড়ে যায়। তবে শেষদিকে লংকান কিংবদন্তী স্পিনার মুত্তিয়া মুরালিধরন ব্যাট হাতে ১৬ বলে ৩৩ রান করে দুই উইকেটে শ্রীলংকাকে ম্যাচ জেতান। খবর বিবিসির
২০১২ সালে এশিয়া কাপে ফাইনালে মুখোমুখি হয় পাকিস্তান ও বাংলাদেশ। ঢাকায় মিরপুর শের-এ-বাংলা ক্রিকেট স্টেডিয়ামে এই ম্যাচটিতে দুই রানে হেরে যায় বাংলাদেশ। শেষ ওভারে ৬ বলে ৯ রান প্রয়োজন ছিল। এই ম্যাচটিতে হেরে মাঠেই কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন বাংলাদেশের ক্রিকেটাররা।
২০১৬ তে এশিয়া কাপের টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটের টুর্নামেন্টের ফাইনালে ভারতের মুখোমুখি হয় বাংলাদেশ। তবে এই ম্যাচটিতে ৮ উইকেটে হেরে যায় বাংলাদেশ। তবে এবারই প্রথম বাংলাদেশ ফাইনালে খেলছে মাশরাফি কে ছাড়াই। এর আগের চারটি ফাইনালে মাঠে ছিলেন তিনি।
ভারতের বিপক্ষে জিততে বাংলাদেশের দরকার ৪ কৌশল
নিদাহাস ট্রফির ফাইনাল ম্যাচে আজ রোববার সন্ধ্যায় মুখোমুখি হচ্ছে বাংলাদেশ ও ভারত। শ্রীলংকার কলম্বোর প্রেমাদাসা স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত হবে এই ম্যাচটি। বাংলাদেশ ২০১৬ সালে ভারতের বিপক্ষে এশিয়া কাপ টি-টোয়েন্টির ফাইনালে মুখোমুখি হয়েছিল। সেবার ৮ উইকেটে হেরে গিয়েছিল মাশরাফি বিন মর্তুজার নেতৃত্বাধীন দলটি।
চলতি ত্রিদেশীয় টি-টোয়েন্টি টুর্নামেন্টেও ভারতের বিপক্ষে জয় পায়নি বাংলাদেশ। প্রথম ম্যাচে ভারতের সাথে ৬ উইকেটে ও দ্বিতীয় দেখায় ১৭ রানে হেরে যায় বাংলাদেশ। ২০১৫ সালের দ্বিপাক্ষিক ওয়ানডে সিরিজের পর আর ভারতের বিপক্ষে জয় পায়নি বাংলাদেশ।
বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের গেম ডেভেলপমেন্ট কোচ নাজমুল আবেদীন ফাহিমের মতে ভারতের বিপক্ষে জয়ের জন্য নির্দিষ্ট কিছু ব্যাপার মাথায় রেখে এগুতে হবে। তার মতে, ভারতের মূল শক্তি তাদের টপ অর্ডার। শেখর ধাওয়ান ও রোহিত শর্মা এই দলটির নিউক্লিয়াস। এ দুজনকে দ্রুত ফেরাতে হবে।
তিনি বলেন, ভারতের প্রধান ব্যাটসম্যান ও বোলারদের কথা মাথায় রেখে খেলতে হবে।
ফাহিমের মতে- বাংলাদেশ এখন একটি ভাল সময়ের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। এই ছন্দটা গুরুত্বপূর্ণ। টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে ছন্দে থাকা খুব জরুরী। ছোট সময়ের খেলা, গতি বদলায় খুব দ্রুত। তাই এই ছন্দ কাজে লাগানোর ওপর নির্ভর করবে কে জিতবে।
বাংলাদেশের টপ অর্ডারের ভাল করাটা খুব গুরুত্বপূর্ণ হবে বলে মনে করেন বাংলাদেশের ক্রিকেটারদের এই মেন্টর।
শ্রীলংকার বিপক্ষে এই সিরিজে দুটি ম্যাচেই জয় পেয়েছে বাংলাদেশ। দুটি ম্যাচেই তামিম ইকবাল রান পেয়েছেন। এটা দলের ব্যাটিংয়ে ভারসাম্য এনেছে।
তিনি বলেন, ব্যাটিং হোক বা বোলিং শুরুটা ভাল করা জরুরী। শুরুতে পিছিয়ে পড়লে ছন্দ ফিরে পাওয়াটা কঠিন হয়ে দাঁড়ায়। এখন পর্যন্ত, দ্বিপাক্ষিক সিরিজ বাদে কোনো সিরিজ বা টুর্নামেন্টের ফাইনাল ম্যাচে জয় পায়নি বাংলাদেশ।
২০০৯ সালে ঢাকায় বাংলাদেশ, জিম্বাবুয়ে এবং শ্রীলংকার মধ্যে ত্রিদেশিয় সিরিজের ফাইনালে শ্রীলংকার কাছে ২ উইকেটে হেরে যায় বাংলাদেশ। ২০১২ সালে এশিয়া কাপ ফাইনালে পাকিস্তানের সাথে ২ রানে হারে বাংলাদেশ। ২০১৬ সালের এশিয়া কাপ ফাইনালে ভারতও ৮ উইকেটে পরাজিত করে বাংলাদেশকে।
সর্বশেষ বাংলাদেশ, জিম্বাবুয়ে এবং শ্রীলংকার মধ্যে ত্রিদেশিয় সিরিজে শ্রীলংকার কাছেও ৭৯ রানে হেরে যায় বাংলাদেশ। নিদাহাস ট্রফির ফাইনাল খেলা কলম্বোর প্রেমাদাসা স্টেডিয়ামে সন্ধ্যা ৭.৩০ মিনিটে মাঠে নামবে বাংলাদেশ-ভারত। আজ বাংলাদেশ-ভারতের মধ্যে এটি অষ্টম টি-টুয়েন্টি ম্যাচ হতে যাচ্ছে। দেখে নেই বাংলাদেশ ভারতের টি-টোয়েন্টির পরিসংখ্যান।
ম্যাচ: ৭
বাংলাদেশ জয়: ০
ভারত জয়: ৭
দলীয় সর্বোচ্চ
বাংলাদেশ: ১৫৯/৫, কলম্বো ২০১৮
ভারত: ১৮০/৫ নটিংহ্যাম ২০০৯
দলীয় সর্বনিম্ন
বাংলাদেশ: ১২১/৭, ঢাকা ২০১৬
ভারত: ১৪৬/৭, বেঙ্গালুরু ২০১৬
সর্বোচ্চ ব্যবধানে জয়
ভারত: ৪৫ রানে জয়ী, ঢাকা ২০১৬
ভারত: ৮ উইকেটে জয়ী, ঢাকা ২০১৪
বাংলাদেশ এখনো কোন ম্যাচ জেতেনি।
সর্বনিম্ন ব্যবধানে জয়
ভারত: ১ রানে জয়ী, বেঙ্গালুরু ২০১৬
ভারত: ৬ উইকেটে জয়ী, কলম্বো ২০১৮
সর্বাধিক রান
ভারত: রোহিত শর্মা ৭ ম্যাচ ৩০০ রান
বাংলাদেশ: সাব্বির রহমান ৫ ম্যাচ ১৫৯ রান
সর্বোচ্চ ব্যাক্তিগত
ভারত: ৮৯ রান, রোাহিত শর্মা কলম্বো ২০১৮
বাংলাদেশ: ৭২*, মুশফিকুর রহীম কলম্বো ২০১৮
সর্বাধিক ফিফটি
ভারত: রোহিত শর্মা ৭ ম্যাচে ৩টি
বাংলাদেশ: মুশফিকুর রহীম ৭ ম্যাচে ১টি
সর্বাধিক ছক্কা
বাংলাদেশ: সাব্বির রহমান ৫ ম্যাচে ৫টি
ভারত: রোহিত শর্মা ৭ ম্যাচে ১২টি
সর্বাধিক উইকেট
বাংলাদেশ: আল আমিন হোসেন ৪ ম্যাচে ৭টি, বর্তমান দলে থাকা রুবেল হোসেন ৩ ম্যাচে ৫টি।
ভারত: অশ্বিন ৪ ম্যাচে ৬টি, বর্তমান দলে থাকা ঠাকুর ১ ম্যাচে ৩টি।
সেরা বোলিং
ভারত: প্রজ্ঞান ওঝা ৪ ওভারে ২১ রানে ৪ উইকেট
বাংলাদেশ: আল আমিন হোসেন ৪ ওভারে ৩৭ রানে ৩ উইকেট।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন