বাংলাদেশ সময় সন্ধ্যা সাতটা বেড়ে ৩০ মিনিট। শ্রীলঙ্কার প্রেমাদাসা স্টেডিয়ামে শুরু হয়েছে বাংলাদেশ বনাম ভারতের মধ্যে নিদাহাস ট্রফির ফাইনাল ম্যাচ। ফাইনালের উত্তেজনা শ্রীলঙ্কার প্রেমাদাসা স্টেডিয়াম ছাপিয়ে ভারত মহাসাগর পারি দিয়ে রাজধানী ঢাকাসহ সারা দেশে ছড়িয়ে পরেছে।
বাংলাদেশ-ভারতের হাই ভোল্টেজ ক্রিকেট খেলা দেখার জন্য বিকেল থেকেই বাইরের কাজ তারাতারি শেষ করে বাড়ি ফেরার তাড়া দেখা যায় সবার মধ্যেই। সন্ধ্যার পর পরই রাজধানীর রাস্তায় লোকজন কমে আসে। কমে আসে শপিংমলগুলোতে লোকজনের আনাগোনা। সুপার শপগুলোতেও দেখা যায় সন্ধ্যার আগেই দৈনিন্দন প্রয়োজনীয় বাজার করে ফেলছেন অনেককেই।
ধানমন্ডির একটি সুপার শপে কথা হয় বেসরকারি চাকরিজীবী ফারহানা নামের একজন নারীর সঙ্গে তিনি বাংলা ইনসাইডারকে বলেন, ‘অফিস শেষ করে কেনা কাটা করতে আসলে খেলা পুরোটা দেখা হবে না তাই অফিস থেকে এক ঘণ্টার ছুটি নিয়ে বাজারের কাজটা শেষ করলাম।’
কারওয়ান বাজারে অফিস টাইম শেষে সকলের মধ্যেই তাড়াহুড়া দেখা যায়। কথা হয় মামুন নামে এক ব্যাক্তির সঙ্গে যিনি মিরপুর এক নম্বরে যাবেন। তিনি বলেন, ‘প্রতিদিন অফিস শেষ করে কারওয়ান বাজারে বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা দিয়ে তারপর বাড়ির দিক রওনা দেই। আজকে খেলা দেখার জন্য একটু তাড়াতাড়ি যাচ্ছি।’
দুদিন সাপ্তাহিক বন্ধ থাকার পর সপ্তাহের প্রথম কর্মদিবস রোববার মোটামুটি সবখানেই ভিড় ও কাজের চাপ স্বাভাবিক ভাবেই বেশি থাকে। তবে আজকে বাংলাদেশের ফাইনাল খেলা থাকার কারণে অফিস-আদালত ব্যাংক ও বীমা অফিসের চিত্র অন্য যেকোনো রোববারের থেকে ভিন্ন এবং কিছুটা ফাঁকা। একটি বেসরকারি ব্যাংকে গিয়ে দেখা যায় বাংকে লোকজন কম। ব্যাংকের একজন কর্মকর্তার সাথে কথা বললে তিনি জানান আজকে লেনদেন ও কাজের চাপ কমে বলে জানান।
সারাদেশে আজ সারাদিন মুল আলোচনার বিষয় বাংলাদেশ ও ভারতের ফাইনাল খেলা। অফিস আদালতে, শপিংমলে, রাস্তাঘাটে সবাই ফাইনাল খেলা নিয়ে আলোচনা করছে। আজকের খেলা দেখার জন্য অফিসের কাজ তারাতারি শেষ করার দিকে মনযোগ ছিল বেশির ভাগ মানুষের।
একটা সময় ছিল যখন ভারত-পাকিস্তান ক্রিকেট ম্যাচ হলেই চরম উত্তেজনা থাকত মাঠে এবং মাঠের বাইরের দর্শকদের মধ্যে। কিন্তু এখন সেই দিন আর নেই। ক্রমাগত পাকিস্তান ক্রিকেটের অবনতির কারণে ভারত পাকিস্তান খেলা এখন আর আগেরমত উত্তেজনার রুপ নেয়া না। তবে ২০১৫ সালের বিশ্বকাপ থেকে বাংলাদেশ-ভারত ম্যাচ হলেই সেই ভারত-পাকিস্তানের ম্যাচের রুপ ফিরে আসে। সবার মধ্যে উত্তেজনা ও আগ্রহ বেড়ে যায় কয়েকগুন।
রাজধানীর ব্যস্ততম অঞ্চল ফার্মগেটে অনান্য দিনের তুলনায় লোকজন কম দেখা যায়। এছাড়া মহাখালি, কারওয়ান বাজার, বাংলামোটর, পল্টন, মতিঝিল এলাকাতেও প্রায় একই দৃশ্য দেখা যায়।
যাত্রাবাড়ীর সিএনজি অটোরিকশা চালক মোকছেদুল যাত্রীর জন্য অপেক্ষা করছিলেন ধানমন্ডি ২৭ এ তাঁকে আজকের খেলা দেখবে কি না জানতে চাইলে বলেন, ‘আজকে ভোরে বের হইছি রাতে বাংলাদেশের খেলা দেখবো বলে। ৭ টার পর আর গাড়ি চালাব না।’
রিকশা চালক জব্বার বলেন, ‘সারা জীবনই তো রিকসা চালামু টাকা কামামু আইজ কামাই একটু কম করুম তাও খেলা দেখুম আমি। বাংলাদেশের খেলা আবার ফাইনাল খেলবে বিদেশে আমরা না দেখলে কি হইব?’
বাংলাইনসাইডার/
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন