শেষ কিছু টেস্ট ভালো যায়নি পাকিস্তানের। জয়ের দেখা নেই। শেষ সফরে ইংল্যান্ডে ২-২ এ টেস্ট সিরিজ ড্র করার সুখস্মৃতি। তখন দলটাও ছিল অভিজ্ঞ। কিন্তু এবার? অনভিজ্ঞতার ছাপ থাকলেও পাকিস্তানের কোচ মিকি আর্থার আত্মবিশ্বাসী। বৃহস্পতিবার ইংল্যান্ডের বিপক্ষে লর্ডস টেস্ট দিয়ে শুরু দুই ম্যাচের এবারের সিরিজ। আর আর্থার বলছেন, 'ভয়-ডরহীন' পাকিস্তান দল স্বাগতিক ইংলিশদের ধসিয়ে দেওয়ার প্রস্তুতি নিয়ে আছে। তাদের কেবল জয় এবং জয়ই চাই।
ইংল্যান্ডও যে চাপে নেই তা নয়। অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ডে তাদের শেষ সফর ছিল জয়হীন। অ্যাওয়ের বাজে রেকর্ড তাতে আরো দীর্ঘ হয়েছে মাত্র। দেশের বাইরে এই সংস্করণে ১৩ ম্যাচ জয়হীন তারা। এখন স্বস্তির নিঃশ্বাস নিতে পাকিস্তানকে হারিয়ে দেশের মাটিতেই জয়ে ফেরাটা গুরুত্বপূর্ণ তাদের জন্য।
ওদিকে পাকিস্তানও অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে বাজে সময় কাটিয়েছে আগের টেস্টগুলোতে। জয় নেই। আছে অকল্যান্ডে ৫৮ রানে অল আউট হওয়ার লজ্জাও। আয়ারল্যান্ডের অভিষেক টেস্টটা ৫ উইকেটে জিতে কিছুটা স্বস্তিতে ফিরেছে তারা। কিন্তু দলটা তো টেস্ট পরিবারের নবীনতম সদস্য।
কিন্তু লর্ডস টেস্টের আগে প্রবল আত্মবিশ্বাস নিয়ে পাকিস্তানের দক্ষিণ আফ্রিকান কোচ মিকি আর্থার বলেছেন, 'আমরা এখানে জয় না তুলে নেওয়ার জন্য আসিনি।' তরুণ ও ভয়-ডরহীন ক্রিকেটাররা আর্থারের ভরসা। সেটাই বলছিলেন তিনি, 'এটা বদলে যাওয়া দল, তরুণদের, ভয়-ডরহীন ক্রিকেটার এবং দারুণ স্কিলের ক্রিকেটারদের দল। যদি এটা কাজে লাগাতে পারি সবকিছু আমাদের পক্ষেই যাবে। তারা ইংল্যান্ডকে অবশ্যই চাপে ফেলবে।'
ইংল্যান্ডের ব্যাটিং অর্ডারে এসেছে পরিবর্তন। অধিনায়ক জো রুট তিন নম্বরে, উইকেটকিপার জনি বেয়ারস্টো পাঁচে এবং জস বাটলারকে ফিরিয়ে এনে সাতে দেওয়া হয়েছে। জ্যাক লিচ ইনজুরিতে। তার জায়গায় টেস্ট অভিষেক হতে পারে সমারসেটের স্পিনার ডমিনিক বেসের।
আর্থার প্রতিপক্ষের কথা টেনে বলছিলেন, 'নিজেদের কন্ডিশনে ইংল্যান্ড বিদেশের চেয়ে ভিন্ন দল। বাটলারের দিকে আমাদের চোখ রাখতে হবে নিশ্চিতভাবেই। ইংল্যান্ড দলে আক্রমণ শক্তি বাড়াবে সে।'
দুই বছর আগে সিরিজ ড্র করে যাওয়া পাকিস্তান দলে এখন অভিজ্ঞ মিসবাহ উল হক, ইউনিস খান নেই। অবসর নিয়েছেন। পাকিস্তান ভরসা করবে আজহার আলি, আসাদ শফিকের ব্যাটে। তবে পাকিস্তানের প্রধান নির্বাচক ইনজামাম উল হকের ভাগ্নে ইমাম উল হক হতে পারেন পাকিস্তানের টেস্ট দলের নতুন তারকা। আইরিশদের বিপক্ষে টেস্ট অভিষেক হয়েছে। সফরে এর মাঝে তিনটি ফিফটি করেছেন। একটি আইরিশদের বিপক্ষে।
'ইনজুরি চেয়ে একেবারে ভিন্ন চরিত্র সে।' ২২ বছর বয়সী বাঁহাতি ওপেনার ইমামুল সম্পর্কে আর্থার বলেছেন, 'আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে চাপের মুখেও সে আমাদের জন্য খুব সুন্দর খেলেছে। সময়ের সাথে ও বদলাতে জানে।' আর্থারের মতে দুই বছর আগে সফর করা দলটির চেয়ে এই দলটি গোছানো, 'আমরা অবিশ্বাস্যরকম ফিট একটি দল। ছেলেরা বিস্ময়কররকম শক্ত পরিশ্রম করেছে। ২০১৬ সালে যখন এখানে এসেছিলাম তখন এমনটা ছিল না। আমরা প্রায় ফিটনেস রাজত্বেই ঢুকেছি। আমাদের খেলা ব্র্যান্ড ক্রিকেটও আক্রমণাত্মক।'
পাকিস্তানের বোলিং বাঁহাতি ২৬ বছরের পেসার মোহাম্মদ আমিরের উপর নির্ভরশীল। ইংল্যান্ডে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি এবং টেস্টে সাফল্য আছে তার। আছে শেষ মৌসুমে এসেক্সের সাথে কাউন্টি চ্যাম্পিয়নশিপ জেতার অভিজ্ঞতা। এখানেই ২০১০ সালে তার ক্যারিয়ার স্পট ফিক্সিং এর কারণে শেষ হতে বসেছিল। লর্ডসেই। উঠে এসেছেন ৫ বছরের নিষেধাজ্ঞা কাটিয়ে। পাকিস্তান স্পিনে পাচ্ছে অভিজ্ঞ ইয়াসির শাহের জায়গা নেওয়া মাত্র ১৯ বছরের লেগ স্পিনার শাদাব খানকে।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন