বিদেশ থেকে প্রশিক্ষিত জুয়াড়ি এনে রাজধানীতে চলছে পশ্চিমা ধাঁচের ক্যাসিনো ব্যবসা। অবৈধ হলেও দিন দিন বড় হচ্ছে এ ব্যবসার পরিসর। রাজধানীর নামিদামি রেস্টুরেন্টে এসব ক্যাসিনোয় প্রতি রাতে উড়ছে শতকোটি টাকা। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কাছেও এ-সংক্রান্ত বেশকিছু অভিযোগ রয়েছে।
রাজধানীর বিভিন্ন ক্লাব-রেস্টুরেন্টে ক্যাসিনো ব্যবসার অভিযোগ পাওয়ার পর এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে পুলিশ সদর দপ্তরকে নির্দেশ দিয়েছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। ওই নির্দেশনার সঙ্গে অভিযোগের একটি কপিও সংযুক্ত করা হয়েছে। নির্দেশনা হাতে পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছে পুলিশ সদর দপ্তর। নির্দেশনা অনুযায়ী এরই মধ্যে কাজও শুরু করেছে তারা।
জানতে চাইলে পুলিশ সদর দপ্তরের এআইজি (মিডিয়া) সোহেলী ফেরদৌস বলেন, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা মোতাবেক আমরা কাজ শুরু করেছি। বেশ কয়েকটি ক্যাসিনোর অস্তিত্বও পাওয়া গেছে। এছাড়া বেশির ভাগ ক্লাবেই বসছে জুয়ার আসর। সব তথ্য যাচাই শেষে মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা মোতাবেক এ ব্যাপারে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।
যেসব রেস্টুরেন্টের বিরুদ্ধে ক্যাসিনো ব্যবসার অভিযোগ উঠেছে সেগুলোতে সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, ক্যাসিনোর প্রতিটি বোর্ডের পাশে হলুদ রঙের শার্ট আর কালো রঙের প্যান্ট পরা ২০-২২ বছরের তিনজন করে নারী। নামে রেস্টুরেন্ট হলেও সেখানে নগদ টাকা জমা দিয়ে চিপ (প্লাস্টিক কার্ড) সংগ্রহ করছেন জুয়াড়িরা। একবার চিপ শেষ হয়ে গেলে আবারো টাকা জমা দিয়ে চিপ সংগ্রহ করছেন কেউ কেউ। জুয়াড়িদের অনেকেই এভাবে সর্বস্ব খুইয়ে বাড়ি ফিরছেন।
জানতে চাইলে এক ভুক্তভোগী বলেন, বন্ধুদের সঙ্গে পার্টিতে অংশ নিতে একবার ক্যাসিনোতে যাই। আলোকসজ্জিত একটি কক্ষে জুয়ার আসর দেখতে পাই। পরে জানতে পারি, এটাই ক্যাসিনো। আগ্রহের বশে বন্ধুরা মিলে ক্যাসিনোয় খেলতে শুরু করি। এরপর দিনের পর দিন অর্থ খোয়াতে থাকি।
রাজধানীতে অনানুষ্ঠানিক ক্যাসিনোয় দৈনিক কী পরিমাণ অর্থ লেনদেন হয়, সে ব্যাপারে সুনির্দিষ্ট কোনো হিসাব নেই। তবে একটি গোয়েন্দা সংস্থার তথ্য অনুযায়ী, একেকটি ক্যাসিনোয় প্রতি রাতেই ২-৩ কোটি টাকার লেনদেন হয়। ক্যাসিনোয় আগতদের মধ্যে রয়েছে উচ্চবিত্ত থেকে শুরু করে মধ্যবিত্তরাও।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন