মাত্র দুই দিনের থেমে থেমে বৃষ্টিতেই রাজধানীর প্রধান প্রধান সড়কসহ অধিকাংশ এলাকা এখন পানির নিচে। এতে ময়লা-আবর্জনা আর বিষাক্ত বর্জ্যমিশ্রিত নোংরা পানিতে হাবুডুবু খাচ্ছে নগরবাসী। এই পরিস্থিতিতে নগরীর বিভিন্ন এলাকার ভুক্তভোগী লোকজন আক্ষেপ করে বলছেন, দুই মেয়রের উন্নয়নের জোয়ারে নোংরা পানিতে ডুবছি আমরা।
ঢাকার দুই মেয়রের জনপ্রিয় স্লোগানটি আজ আবার মনে পড়ে। স্লোগানটি হলো ‘ক্লিন ঢাকা, গ্রিন ঢাকা, মানবিক ঢাকা, স্মার্ট ঢাকা ও উন্নত নগরী গড়া’।
টানা দুই দিনের এই বৃষ্টি সত্যিই বেকায়দায় ফেলেছে ঢাকার দুই মেয়রকে। আজ সকাল থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টিতেই রাজধানীর বিভিন্ন রাস্তা, গলিপথ, হাট-বাজার, অফিস ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সামনে কোথাও হাঁটু পানি আবার কোথাও কোমর পানি জমেছে।
বাংলাদেশ সচিবালয় থেকে শুরু করে খিলগাঁও, বাসাবো, আজমপুর, শ্যামপুর, মাদারটেক, মালিবাগ, রামপুরা এবং পুরান ঢাকার অধিকাংশ এলাকায় মারাত্মক জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। এমনকি নিউমার্কেট থেকে আসাদগেট পর্যন্ত থৈ থৈ পানি।
এখনো চিকুনগুনিয়ার ভয়াবহতা শেষ হয়নি। তার ওপর আবার বৃষ্টি আর জলাবদ্ধতা। রাস্তা, ড্রেন, ফুটপাত গলি পথের এতো উন্নয়ন গেল কোথায়? এসব প্রশ্ন নগরবাসীর।
অথচ জলাবদ্ধতা, যানজট নিরসনের বিষয়ে গত দৃই বছরে ঢাকার দৃই মেয়র সরকারের সংশ্লিষ্ট ২৬টি সংস্থার কর্মকর্তাদের দফায় দফায় সভা সেমিনার আর মন ভোলানো বক্তব্য দিয়েই যাচ্ছেন। কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হচ্ছে না- এমন অভিযোগ নগরবাসীর।
এদিকে কাঁঠালবাগান, কাওরান বাজার, হাতিলঝিল এলাকা, বনানী, কুড়িল বিশ্বরোড, ভাসানটেক, মিরপুর রোকেয়া সরণি, মিরপুর কাজীপাড়া সেনপাড়া, ১০ নম্বর, কালশী, রূপনগর, কল্যাণপুর, পীরেরবাগ, আদাবর, মোহাম্মদপুরসহ ঢাকা উত্তরের অধিকাংশ এলাকায় জলাবদ্ধতায় আটকে পড়েছে নগরবাসী।
সরেজমিন পরিদর্শনকালে এসব চিত্র চোখে পড়ে।
আজকের বৃষ্টিতে নগরীর অধিকাংশ রাস্তার দুই দিকে হাঁটু থেকে কোমর পর্যন্ত পানি জমে গেছে। এর মধ্যে ধানমণ্ডি ২৭ নম্বর সড়কও একই রকম জলমগ্ন। পানি জমেছে আশপাশের অলিগলিতেও। দুপুরে স্কুলফেরত শিক্ষার্থীদের এই পানি দিয়ে হেঁটেই ঘরে ফিরতে দেখা গেছে।
জলাবদ্ধতার কারণে সড়কে সৃষ্টি হয়েছে তীব্র যানজট। বাস বা ব্যক্তিগত গাড়িতে করে সোবহানবাগ থেকে আসাদ গেট পর্যন্ত আধা কিলোমিটারেরও কম পথ যেতে সময় লেগেছে দেড় ঘণ্টার মতো। অনেক গাড়ির ভেতরে পানি ঢুকে গেছে। পানির কারণে সিএনজিচালিত অনেক অটোরিকশা ও গাড়ি বিকল হয়ে পড়েছে সড়কের ওপর।
দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে সড়কটি পরিদর্শনে এসে ঢাকা দক্ষিণের মেয়র সাঈদ খোকন স্বচক্ষে দেখে গেছেন এই পরিস্থিতি। তবে সে জন্য হাঁটুপানিতে নামতে হয়েছে তাকেও।
অপরদিকে ঢাকা উত্তরের মেয়র আনিসুল হক দুপুরের পর বৃষ্টিতে জলাবদ্ধতা দেখার জন্য বনানীতে গেছেন বলে জানান তার কর্মকর্তারা। মেয়র আনিসুল হক বনানী ১৮ নম্বর সড়ক এলাকা পরিদর্শন করেছেন।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন