গুলিস্তানের বঙ্গবাজার থেকে ফুলবাড়িয়া মার্কেটের দিকে যেতে হাতের বাঁয়ে বাংলাদেশ পুলিশের সদর দপ্তর এবং সঙ্গেই ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন। প্রতিষ্ঠান দুটির পেছনের ফুটপাত চলাচলের জন্য কেউ ব্যবহার করতে পারে না। তবে প্রস্রাব করার জন্য অনেকেই অবাধে ব্যবহার করে। ছবি: আবদুস সালাম
দেয়ালের ওপারে সরকারের গুরুত্বপূর্ণ দুটি প্রতিষ্ঠান রয়েছে। একটি পুলিশ সদর দপ্তর। আরেকটিতে ঢাকা দক্ষিণের নগরপিতা বসেন। পাশাপাশি এ প্রতিষ্ঠান দুটির সামনের দেয়াল ও ফুটপাত মোটামুটি পরিচ্ছন্ন ও চলাচলের উপযোগী হলেও পেছনের অবস্থা সম্পূর্ণ উল্টো। পেছনের দেয়ালটি মূত্র বিসর্জনের অবাধ জায়গা। নোংরা তো আছেই।
যদিও ওই ফুটপাতের পাশেই পাবলিক ও মোবাইল টয়লেট; কিন্তু সেগুলোর ব্যবহার নেই বললেই চলে। এর বদলে ফুটপাত ব্যবহার হচ্ছে সমানে। ‘এখানে প্রস্রাব করা নিষেধ’—এই লেখাকে তুড়ি মেলে চলছে মূত্রত্যাগ। আধা ঘণ্টা সময়ের মধ্যেই প্রস্রাব করতে দেখা গেছে চারজনকে।
রাজধানী ঢাকার গুলিস্তানের বঙ্গবাজার থেকে ফুলবাড়িয়া মার্কেটের দিকে যেতে হাতের বাঁয়ে বাংলাদেশ পুলিশের সদর দপ্তর এবং সঙ্গেই ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি)। প্রতিষ্ঠান দুটির পেছনের ফুটপাত চলাচলের জন্য কেউ ব্যবহার করতে পারে না। তবে প্রস্রাব করার জন্য অনেকেই অবাধে ব্যবহার করে।
গত সোমবার দুপুরে গিয়ে দেখা যায়, পুলিশ সদর দপ্তরের অংশের দেয়ালে লেখা—‘এখানে প্রস্রাব করা নিষেধ’। ঠিক লেখাটির সামনেই একজন বসে পড়লেন মূত্রত্যাগের জন্য। দেয়ালে প্রস্রাব করার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি উত্তর না দিয়ে চলে যান।
এই ফুটপাত ঘেঁষে এখানে পাবলিক টয়লেট ও মোবাইল টয়লেট আছে। পাবলিক টয়লেটটি কিছুটা ব্যবহৃত হলেও মোবাইল টয়লেট কেউ ব্যবহার করে না। আধা ঘণ্টা সময়ের মধ্যে ওই দেয়ালেই চারজন প্রস্রাব করেন। পাবলিক টয়লেটের সামনে দাঁড়িয়ে থাকা ফুলবাড়িয়া মার্কেটের জুতা ব্যবসায়ী মো. মানিক দেয়ালে প্রস্রাব করা নিয়ে বলেন, ‘যাদের কমনসেন্স নাই, তারাই করে। পাবলিক টয়লেট থাকার পরেও তারা রাস্তায় দাঁড়ায়া যায়।’ তিনি আরও বললেন, সিটি করপোরেশন থেকেও কেউ এসব দেখতে আসে না।
এই ফুটপাতে হাঁটার কোনো অবস্থা নেই। চায়ের দোকান, স্যাঁতসেঁতে পরিবেশ, দুর্গন্ধ, ভাঙাচোরা আসবাব, ময়লার ভাগাড়—সবই আছে ফুটপাতটিতে। আর রাস্তা দখল করে আছে অসংখ্য বাস। পথচারীরা হাঁটে বাসের ফাঁকে ফাঁকে। বাবুল মিয়া ফুলবাড়িয়ায় বিআরটিসির বাস স্টপেজে যাবেন। তিনি বলেন, ‘বাড়ি গেলে এই রাস্তাই ব্যবহার করি। কিন্তু এত খারাপ অবস্থা। গন্ধে ফুটপাতে ওঠা যায় না। সিটি করপোরেশনের দেয়ালেই যদি মানুষ এসব করে, তাইলে বাকি জায়গার আর কী হইতে পারে।’
ডিএসসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা খান মোহাম্মদ বিলাল বিষয়টি নিয়ে প্রথম আলোকে বলেন, ‘ওখানে পাবলিক টয়লেট আছে। মানুষ না মানলে কী করতে পারি। উচ্ছেদ-প্রক্রিয়া সব সময়ই চলতে থাকে।’
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন