টানা তিন দিনের বৃষ্টিতে রাজধানীর প্রায় দুই-তৃতীয়াংশ সড়কে কোমর পানি জমে গেছে। আর বাকি সড়কগুলোতে জমেছে হাঁটু পানি। শহরের প্রধান কিছু সড়ক বাদে অধিকাংশ সড়ক ছোটখাটো খালে রূপ ধারণ করেছে। ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন সূত্রে জানা গেছে, রাজধানীর প্রায় দুই-তৃতীয়াংশ সড়ক বর্তমানে পানির নিচে। মহল্লার গলির সব রাস্তাই পানির নিচে। তবে কিছু প্রধান সড়ক এখনও জেগে আছে। এদিকে, রাজধানীর অধিকাংশ এলাকার নিচতলার বাসায় পানি প্রবেশ করেছে। একদিকে শহরের সড়কে জলাবদ্ধতা অন্যদিকে ঘরের মধ্যে পানি। এসব মিলিয়ে রাজধানী ঢাকা রূপ নিয়েছে ‘মনোমুগ্ধকর’ জলরাশিতে- এমনটি বলছিলেন সকালে অফিসের পথে বের হয়ে ভিজে বাসায় ফেরা কর্মজীবী মাহামুদ রানা।
রাজধানীর বাসাবো এলাকায় তার বাসা, অফিস ধানমন্ডি ২৭। সকাল নয়টার দিকে বাসা থেকে বের হয়ে মুগদা বিশ্ব রোডে যেতে পুরাটা পথ তাকে পানির মধ্য দিয়ে হাঁটতে হয়েছে।
এরপর একটা রিকশা নিয়ে রাজারবাগ পুলিশ লাইনের সড়ক ধরে পল্টন যেতে আরামবাগ, ফকিরাপুল এলাকায় কোমর সমান পানি দেখতে পান তিনি। তবে বিশ্ব রোডে পানি নেই এমনটা জানান রানা।
এদিকে, গত দু’দিন ধরে রাজধানীর চরম জলাবদ্ধতা দূর করার জন্য মাঠে কাজ করছে ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন। কিন্তু, জলাবদ্ধতা নিরসনের প্রধান দায়িত্বে থাকা ঢাকা ওয়াসার কোনো কর্মকর্তার দেখা মেলেনি।
ঢাকা উত্তর ও ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের প্রকৌশলী বিভাগের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সিটি করপোরেশনের ড্রেনের পানি গিয়ে জমা হচ্ছে ঢাকা ওয়াসার ড্রেনে ও খালে। মূলত ওয়াসার ড্রেনের পানি নড়ছে না। এজন্য রাজধানীতে পানি বেড়েই চলছে।
এ বিষয়ে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের প্রধান প্রকৌশলী শাহাবুদ্দিন পরিবর্তন ডটকমকে বলেন, ‘জলাবদ্ধতা নিরসনের দায়িত্ব আমাদের নয়। তবুও নাগরিক ভোগান্তি দূর করার জন্য গত তিন দিন ধরে আমাদের কর্মীরা মাঠে কাজ করছে।’
তিনি অভিযোগ করেন, জলাবদ্ধতার নিরসনের দায়িত্বে থাকা ঢাকা ওয়াসা কাজ করছে না। কারণ ওয়াসার কাজের ওপর নির্ভর করে করপোরেশনের কাজ। ওয়াসার পাম্প থেকে পানি অপসারণ করা হয়। যদি ওয়াসা ঠিকভাবে পানি অপসারণ না করে, তাহলে শহরের জলাবদ্ধতা কমবে না।
ঢাকা ওয়াসার বিরুদ্ধে একই অভিযোগ ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের অতিরিক্ত সহকারী প্রকৌশলী শরিফের। তিনি বলেন, আমাদের লোকরা জমে থাকা ময়লায় পানির গতি করে দিচ্ছে। কিন্তু, ওয়াসা কোথায় তাদের স্থান থেকে পানি নড়ছে না।
নাগরিকদের জলাবদ্ধতা থেকে নিরসন দেওয়ার লক্ষে দুই সিটি করপোরেশনের প্রতিটি জোনে ২০ জনের অধিক কর্মী কাজ করছেন ড্রেনে যেন মলা জমে পানি আটকে না থাকে তার জন্য।
রাজধানীর জলাবদ্ধতা নিরসনের দায়িত্বে থাকা ঢাকা ওয়াসার এমডি তাসকিন এ খানের মোবাইলে যোগাযোগ করেও তাকে পাওয়া যায়নি।
এরপর ঢাকা ওয়াসার প্রধান প্রকৌশলী কামরুল হাসানের মোবাইলে একাধিকবার ফোন দেওয়া হয়। কিন্তু, তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন