আবারও দখলদার, জবরদখল, চাঁদাবাজির খপ্পরে পড়ে যানজট আর মাদকের আস্তানা হয়ে উঠছে তেজগাঁওয়ের ট্রাক স্ট্যান্ড এলাকার ব্যস্ততম সড়কের দুই পাশ। আবারও পুরনো সেই যানজট আর মানুষের ভোগান্তির প্রতীক হয়ে উঠেছে সড়কটি।
গত দুই বছর অনেকটাই নিয়ন্ত্রিত ও সুশৃঙ্খল হয়ে উঠলেও এখন আবার পুরনো ছবিতে ফিরে গেছে তেজগাঁওয়ের ট্রাক স্ট্যান্ড এলাকাটি।
সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, তেজগাঁওয়ের ট্রাক স্ট্যান্ড এলাকার সাত রাস্তা মুখেই যত্রতত্র রাখা হয়েছে মিনি ট্রাক থেকে শুর করে বড় বড় লরি। শুক্রবার ছুটির দিনেও বিকেল বেলায় একইভাবে ট্রাক স্ট্যান্ডের জন্য নির্ধারিত জায়গাটির বাইরে ট্রাক ও কভার্ডভ্যান ড্রাইভার্স ইউনিয়নের সামনেও যত্রতত্র ছড়িয়ে ছিটিয়ে রাখা হয়েছে ট্রাক, লরি, কাভার্ডভ্যান।
তেজগাঁও রেলগেইটের সিগন্যাল পড়ার পর যানজট ছড়িয়েছে ওই ইউনিয়ন কার্যালয় পেরিয়ে।
পরিস্থিতি দেখে আড়ংয়ের কর্মকর্তা সুশীল দেবনাথ বিরক্ত নিয়ে পরিবর্তন ডটকমকে বলেন, একজন মানুষের ইচ্ছাই একটি ভালো কাজ ধরে রাখে- এই তেজগাঁও এলাকা তার প্রমাণ। আনিসুল হক আন্তরিক ছিলেন বলেই এলাকাটি উদ্ধার করে সুশৃঙ্খল রাখা সম্ভব হয়েছিলো। কিন্তু তিনি মারা যাওয়ার এক মাস পার হতে না হতেই আবার দখল হতে থাকে এলাকাটি।
সিএনজি চালক বরিশালের উজিরপুরের সাইদ আলী প্রশ্ন রেখে বলেন, মেয়র মারা গেছেন বলেই কি এই এলাকায় আর আইনকানুন কিছু থাকবে না?
প্রয়াত মেয়র আনিসুল হক যতগুলো কাজের জন্য সমাদৃত হয়েছিলেন তার মধ্যে অন্যতম ছিল এই তেজগাঁও ট্রাক স্ট্র্যান্ড এলাকাটি দখলমুক্ত করে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনা। একাজ করতে গিয়ে আনিসুল হককে প্রভাবশালীদের চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে হয়েছিল।
সেসময় ট্রাক স্ট্যান্ডের জন্য নির্ধারিত প্রায় ১৫ একর জায়গা অবৈধ দখলমুক্ত হয়েছিলো।
তেজগাঁও ট্রাক স্ট্যান্ডের রাতের ছবি আরও ভয়াবহ। আনিসুল হক মারা যাওয়ার কয়েকদিন পর থেকেই সেখানে সন্ধ্যা নামার পরই পুরো এলাকা দখলে যায় ট্রাক লরির। যত্রতত্র ট্রাক রেখে কোনও রকম একটি গাড়ি চলাচলের পথ রাখা হয়। একটি গাড়ি আটকা পড়লে পুরো এলাকা পড়ে যানজটের মুখে।
প্রয়াত আনিসুল হকের ব্যক্তিগত কর্মকর্তা মিজানুর রহমান পরিবর্তন ডটকমকে বলেন, ট্রাক স্ট্যান্ড আবার দখল হওয়ার খবর তারাও শুনেছেন। বর্তমান প্যানেল মেয়রকেও বিষয়টি জানানো হয়েছে।
মিজানুর রহমান ট্রাক স্ট্যান্ড এলাকায় মেয়রের নির্দেশ বাস্তবায়ন করতেন।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, সাত রাস্তা থেকে তেজগাঁও রেলগেইট পর্যন্ত রাস্তায় যত্রতত্র ফুটপাত ঘেঁষে এক একটি ট্রাক একবার রাখতে ১০০ থেকে ১২০ টাকা পর্যন্ত চাঁদা নেওয়া হয়। তার ভাগ যায় বিভিন্ন পর্যায় পর্যন্ত।
জানতে চাইলে বাংলাদেশ ট্রাক ও কাভার্ডভ্যান ড্রাইভার্স ইউনিয়নের সভাপতি তালুকদার মো. মনির দাবি করেন দিনের বেলায় এই রাস্তায় অবৈধ পার্কিং হয় না। যেহেতু রাতে ১০টার পর থেকে সকাল ৭টা পর্যন্ত শহরের যেকোনও জায়গায় ট্রাক লরির লোড আনলোড বৈধ তাই কিছু ট্রাক এই রাস্তায় থাকে।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের প্যানেল মেয়র ওসমান গণি পরিবর্তন ডটকমকে বলেন, তারা বিষয়টি দেখবেন। রোববার ওই এলাকায় পরিদর্শনেও যাবেন।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন