ঈদের আনন্দ পরিবারের সঙ্গে ভাগাভাগি করতে রাজধানী ছেড়ে গ্রামে গিয়েছিলেন লাখো মানুষ। ঈদ উদযাপন শেষে নিজ নিজ কর্মস্থলে ফিরে যাচ্ছেন সবাই। তবে ঢাকা ছেড়ে অাসতে যেমন পরিবহন সংকটে ভুগেছিলেন সাধারণ মানুষ, তেমনি ঢাকায় ফিরে যেতেও একই সমস্যায় পড়ছেন তারা।
এই সুযোগে এক শ্রেণির অসাধু ব্যবসায়ী রাজধানীতে চলাচলকারী লোকাল বাসগুলোকে মহাসড়কে নামিয়ে কয়েকগুণ বেশি অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছেন। এসব পরিবহনের মহাসড়কে চলাচলের কোনো অনুমতি না থাকলেও বিভিন্ন স্পটে চাঁদা দিয়ে ম্যানেজ করেই চলাচল করছে বাসগুলো।
গাইবান্ধা জেলার সাদুল্যাপুর থানার ধাপেরহাট নামক এলাকায় দেখা গেছে, বেশ কিছু ঢাকার লোকাল বাস যাত্রীর জন্য দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করছে। এসব বাসের মধ্যে রয়েছে চন্দ্রা থেকে গাবতলী হয়ে গুলিস্তানে চলাচলকারী ‘ঠিকানা পরিবহন’; বনশ্রী রামপুরা থেকে নিউমার্কেট হয়ে মোহাম্মাদপুর চলাচলকারী ‘তরঙ্গ প্লাস পরিবহন’; যাত্রাবাড়ী সাইন বোর্ড হয়ে গুলিস্তান ও নারায়ণগঞ্জ চলাচলকারী ‘রজনীগন্ধা পরিবহন’। এ ছাড়াও রংপুরের পীরগঞ্জ এলাকায় দেখা গেছে, মিরপুর থেকে গুলিস্তান ও সদরঘাটে চলাচলকারী ‘বিহঙ্গ পরিবহন’সহ বেশ কিছু লোকাল বাস।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, শুধু গাইবান্ধা ও রংপুর নয়, উত্তরবঙ্গের সব জেলাতেই ঈদ উপলক্ষে এমন শত শত বাস এসেছে। অার এসব বাস ঈদের দুই দিন পর থেকে ঢাকায় ফেরা যাত্রীদের নিয়ে রওনা হচ্ছে ঢাকায়। কারণ এই সময় যাত্রীর চাপ থাকে অনেক বেশি। তখন এসব সড়কে চলাচলকারী হানিফ, শ্যামলী, এসঅার, নাবিল গাড়িতে সিট না পেয়ে বাধ্য হয়েই এই গাড়িগুলোতে যেতে হয় মানুষকে। এই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে সংশ্লিষ্টরা যাত্রীদের কাছে থেকে দ্বিগুণ ভাড়া আদায় করে।
ঠিকানা পরিবহনের সুপারভাইজার একরাম হোসেন প্রিয়.কমকে জানান, ধাপেরহাট থেকে ঢাকার গাবতলী পর্যন্ত যাবে তাদের গাড়ি। এ জন্য প্রতি সিটের ভাড়া এক হাজার টাকা দিতে হবে। স্বাভাবিকভাবে এখান থেকে ঢাকার বাস ভাড়া ৫০০ টাকা। ঈদ উপলক্ষে হানিফ ও শ্যামলী গাড়িতে সিট বিক্রি হচ্ছে ৮০০ টাকায়।
লোকাল বাসে এত বেশি ভাড়া কেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘ভাই অামাদের তো লং রোডের পারমিশন নাই। রাস্তাঘাটে পুলিশ, শ্রমিক নেতা কতজনকে চাঁদা দিতে হয়। আর ঈদের সময় এত দূর আইছি তো, একটু টাকা কামানের লাইগাই। তাই ভাড়া একটু বেশিই।’
এই বিষয়ে জানতে চাইলে তরঙ্গ প্লাস পরিবহনের চালক মমিনুর ইসলাম প্রিয়.কমকে জানান, তারা প্রতি বছরই দুই ঈদের সময় তাদের তরঙ্গ প্লাস পরিবহনের বেশ কিছু গাড়ি নিয়ে অাসেন। ঈদের সময় রাজধানীতে তেমন যাত্রী পাওয়া যায় না। সে কারণে ঈদের পরে কয়েক দিন তাদের বসেই থাকতে হয়। তাই ঢাকার বাইরে গাড়ি নিয়ে এলে বাড়তি কিছু টাকা উপার্জন হয়।
ঠিকানা গাড়িতে করে ঢাকায় যাওয়া রবিউল ইসলাম নামের এক যাত্রী প্রিয়.কমকে বলেন, ‘কী অার করমু ভাই। গার্মেন্টসে কাজ করি, টাইমমতো অফিসে জয়েন করতে না পারলে চাকরি থাকব না। তাই বেশি ভাড়া দিয়েই এই গাড়িতে যাইতে হচ্ছে।’
তরঙ্গ প্লাস পরিবহনের সুৃৃমন মিয়া নামের এক যাত্রী জানান, তার ছোট ভাই গতকাল ৮০০ টাকায় হানিফ গাড়িতে করে ঢাকায় গেছেন। কিন্তু তিনি সিট না পাওয়ায় এই গাড়িতে যাচ্ছেন ৯৫০ টাকায়।
প্রিয়
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন