রাজধানীর মহাখালী ফ্লাইওভারের গোড়ায় গাড়িচাপায় সেলিম ব্যাপারী (৪৮) নিহত হওয়ার ঘটনার একাধিক প্রত্যক্ষদর্শী জানিয়েছেন, গাড়িটি চালাচ্ছিলেন নোয়াখালী-৪ আসনের এমপি একরামুল করিম চৌধুরীর ছেলে শাবাব চৌধুরী। পুলিশের একটি দায়িত্বশীল সূত্র বলছে, ‘গাড়িটির মালিক এমপি একরামুল করিম চৌধুরীর স্ত্রী কামরুন নাহার শিউলি।’ এরপরও গাড়ি ও গাড়ির চালককে শনাক্ত করতে পারেনি পুলিশ। ঘটনার দু’দিন পর পুলিশ বলছে, ক্লোজড সার্কিট (সিসি) ক্যামেরার ফুটেজ দেখে কে গাড়ি চালাচ্ছিলেন তা শনাক্ত করা হবে। আর গাড়ির মালিকের পরিচয় নিশ্চিত হতে বিআরটিএ-তে যোগাযোগ করা হবে।
বৃহস্পতিবার দুপুরে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে ডিসি (মিডিয়া) মাসুদুর রহমান সাংবাদিকদের বলেন, ওই ঘটনায় একটি মামলা হয়েছে। গাড়ির মালিককে শনাক্ত করার চেষ্টা চলছে। ঘটনার সময় যিনি গাড়ি চালাচ্ছিলেন তাকে শনাক্ত করতে আশপাশের সিসি ক্যামেরার ফুটেজ সংগ্রহ করে বিশ্লেষণ করা হবে। পাশাপাশি প্রত্যক্ষদর্শীদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। ঘটনার সময় গাড়ি কে চালাচ্ছিলেন সে সম্পর্কে নিশ্চিত হয়ে অভিযান চালানো হবে। তিনি আরও বলেন, ঘটনা সংঘটিত হয়েছে খুব বেশি সময় পার হয়ে যায়নি। তথ্য-প্রমাণ সংগ্রহের পরই আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে। পুলিশের তদন্ত কার্যক্রম অব্যাহত আছে। মাসুদুর রহমান বলেন, অপরাধের সঙ্গে কোনো ব্যক্তির সংশ্লিষ্টতা থাকলে সে ক্ষেত্রে তথ্য-প্রমাণ লাগবে। প্রথমে গাড়ির মালিক খুঁজে বের করা হবে। পরে কে গাড়িটি চালাচ্ছিলেন তা বের করতে হবে। তারপরই আইনি প্রক্রিয়া শুরু করতে হবে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, মঙ্গলবার রাতে সেলিম বনানী সেতু ভবন সংলগ্ন ফ্লাইওভার পার হচ্ছিলেন। এ সময় বেপরোয়া গতিতে আসা একটি প্রাইভেট কার সেলিমের পায়ের ওপর তুলে দেয়। চাপা খেয়ে সেলিম গাড়ির বাম্পার চেপে ধরেন। তখন ব্যাক গিয়ারে দিয়ে আবারও সেলিমকে চাপা দেন চালক। এ সময় ফ্লাইওভারের গার্ডারে ধাক্কা খেয়ে পড়ে যান সেলিম। এতে তার মাথা ছিন্নভিন্ন হয়ে যায়। ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়। চালকের পরনে ছিল এক রঙের শার্ট ও কালো প্যান্ট। মোটরসাইকেলে করে ওই গাড়ির পিছু নিলে সেটি ন্যাম ভবনের সামনে গিয়ে থামে। গাড়ি থেকে বেরিয়ে আসেন এমপি একরামুল করিম চৌধুরীর ছেলে শাবাব চৌধুরী। সেখানে পিছু নেয়া প্রত্যক্ষদর্শীদের সঙ্গে শাবাব চৌধুরীর প্রচণ্ড বাকবিতণ্ডা হয়। সেলিম ব্যাপারীর জামাতা আরিফুল ইসলাম ভুইয়া যুগান্তরকে বলেন, ওই গাড়ির চালক ছিলেন এমপি একরামুল করিম চৌধুরীর ছেলে শাবাব চৌধুরী। বিষয়টি আমরা পুলিশকে জানিয়েছি। তিনজন প্রত্যক্ষদর্শীও বিষয়টি পুলিশকে জানিয়েছেন। তারপরও কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না পুলিশ।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন