আগামী একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে টার্গেট করে কেন্দ্র থেকে তৃণমূল পর্যন্ত দলকে চাঙ্গা করার উদ্যোগ নিয়েছে বিএনপি। এর অংশ হিসেবে এবার সম্মিলিতভাবে মাঠে নামছেন বিএনপি পন্থি ৩’শ জন বুদ্ধিজীবী। সব জেলা ও মহানগরে ১৭ দিনের সাংগঠনিক সফর করার প্রস্তুতি নিচ্ছেন বিএনপি পন্থি এসব বুদ্ধিজীবীরা। আগামী ২২ এপ্রিল থেকে শুরু হয়ে ৭ মে পর্যন্ত তাদের সফর করার কথা রয়েছে। বিএনপির নির্ভরযোগ্য একটি সূত্রে এমন তথ্য জানা গেছে।
সূত্রটি জানায়, বুদ্ধিজীবীদের এ সফরের বিষয়ে দুই-এক দিনের মধ্যেই কেন্দ্র থেকে জেলা ও মহানগর নেতাদের কাছে চিঠি পাঠানো হবে। নির্বাচনী হোমওয়ার্কের পাশাপাশি দলের অভ্যন্তরীণ কোন্দল মিটিয়ে দলকে একটি শক্তিশালী প্লাটফরমে নেওয়াই এ সফরের উদ্দেশ্য।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, আগামী ২২ এপ্রিল শনিবার বেলা ১১টায় রাজধানীর মিরপুর সড়কে অবস্থিত গণস্বাস্থ্য ট্রাস্ট কেন্দ্রে একটি সভা করবেন বুদ্ধিজীবীরা। সন্ধ্যা পর্যন্ত ওই সভায় তারা আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে একটি কৌশলপত্র তৈরি করবেন। যাতে নির্বাচন ও রাজনৈতিক দিক-নির্দেশনা, আন্তর্জাতিক লবিং কৌশল, মিডিয়া,সিভিল সোসাইটি ও এনজিও বিষয়ক ক্ষেত্রে দলের করণীয় সম্পর্কে সুনির্দিষ্ট পরামর্শ থাকবে।
সভা শেষে রাতে তারা বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সঙ্গে দেখা করে কৌশলপত্রটি হস্তান্তর করবেন। তাছাড়া দলীয় বুদ্ধিজীবীদের বিকল্প শক্তি হিসেবে কাজে লাগানোর রূপরেখাও দলের চেয়ারপারসনকে দেয়া হবে।
সূত্র মতে, সভায় ঢাকা, চট্টগ্রাম, রাজশাহীসহ দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, মানবাধিকার কর্মী, আইনজীবী, পেশাজীবীদের বাছাই করা ৩০০ জনকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। বিভিন্ন কারণে অনিচ্ছুক, হতাশ ও শিথিল ব্যক্তিদের বাদ দিয়ে মাঝ বয়সী ও তরুণদের প্রাধান্য দেয়া হয়েছে নতুন এই উদ্যোগে।
সূত্র জানায়, গত দুই মাস ধরে তিন সদস্যের একটি কমিটি কৌশলপত্র প্রণয়ন ও দলীয় বুদ্ধিজীবীদের সংগঠিত করার জন্য কাজ করছেন। এতে রয়েছেন- গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের ডা. জাফরউল্লাহ চৌধুরী এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক দুই ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর এমাজউদ্দিন আহমদ ও প্রফেসর আনোয়ারউল্লাহ চৌধুরী।
ডা. জাফরউল্লাহ চৌধুরী ও প্রফেসর এমাজউদ্দিন আহমদ বিএনপির পক্ষে সরব থাকলেও প্রফেসর আনোয়ারউল্লাহ চৌধুরী জেনারেল মাসুদউদ্দিনের বেয়াই হওয়ায় দলে কোণঠাসা হয়ে ছিলেন। পরবর্তীতে প্রফেসর মনিরুজ্জামান মিয়ার মৃত্যুজনিত শূন্যতায় আনোয়ারউল্লাহ চৌধুরী ফেনীর বাসিন্দা হিসেবে দলে নিজের বিরাগভাজন ইমেজ দূর করতে সমর্থ হন।
তিন সদস্যের মূল কমিটিকে সাংবাদিক গ্রুপের পক্ষে সার্বক্ষণিক সহায়তা করছেন সাংবাদিক ও দলের ভাইস চেয়ারম্যান শওকত মাহমুদ, সৈয়দ আবদাল আহমদ ও কাদের গণি চৌধুরী। এনজিও গ্রুপের পক্ষে সহায়তা করছেন সিনিয়র সাংবাদিক মাহফুজউল্লাহ।
বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক গ্রুপের পক্ষে রয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাদা দলের নেতা ও জিয়াউর রহমান ফাউন্ডেশনের সমন্বয়ক প্রফেসর আল মোজাদ্দেদী আল-ফেসানী, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামের ইতিহাস বিভাগের প্রফেসর শাহ আলম, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রত্বতত্ত্ব বিভাগের প্রফেসর সৈয়দ কামরুল আহসান ও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞানের প্রফেসর তারেক ফজল।
বিএনপির শাসনামলে ভাইস চ্যান্সেলরসহ বিভিন্ন পদে কাজ করেছেন- এমন কয়েকজন পুরো কার্যক্রমের দাপ্তরিক ও ড্রাফটিং-এর কাজ সামলাচ্ছেন। এদের মধ্যে রয়েছেন প্রফেসর আবদুল লতিফ মাসুম, প্রফেসর খলীলুর রহমান ও প্রফেসর তারেক মুসলেহউদ্দিন প্রমুখ।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ও সাংবাদিক শওকত মাহমুদ যমুনা নিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, ‘আগামী শনিবার একটি সভার দাওয়াত পেয়েছি আমি। প্রফেসর ড. এমাজউদ্দিন স্যার আমাকে দওয়াত করেছেন। তবে কি কারণে সভাটি হবে সে বিষয়ে আমি কিছু যানিনা।’
তবে বিষয়টি স্বীকার করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি ড. এমাজউদ্দিন আহমেদ যমুনা নিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, ‘আগামী শনিবার গণসাস্থ্য ট্রাস্ট কেন্দ্রে আমারা একটি সভার আয়োজন করেছি। সেখানে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক, মানবধিকার কর্মীরা উপস্থিত থকবেন।’ কি বিষয় নিয়ে এ সভার আয়োজন করা হয়েছে সে বিষয়ে জনতে চাইলে তিনি বলেন, শনিবার আসেন। আসলেই বুঝতে পারবেন কি নিয়ে বৈঠক হয়েছে।
jamunanews24.com
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন