জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় (জবি) শাখা ছাত্রলীগের ১ বছর মেয়াদী কমিটি গঠনের চার বছর পর গত ৩০ মার্চ জবি ছাত্রলীগের সম্মেলন হলেও এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত নতুন কমিটির দেখা মেলেনি। সম্মেলনে আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক ওবায়দুর কাদের ছাত্রলীগের পকেট কমিটি হবেনা এমন বক্তব্য দিলেও ত্যাগী নেতারা মনে করছেন পকেট কমিটির লোকজন ঠিক করতেই বিলম্ব হচ্ছে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের।
কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের বিশ্বস্ত সূত্রে জানা যায়, সব ধরণের হিসাব-নিকাশ প্রায় শেষের দিকে। যে কোন সময় ঘোষণা করা হতে পারে জবি শাখা ছাত্রলীগের কমিটি। তবে কাদেরকে দিয়ে গঠন করা হবে ছাত্রলীগের সুপার এ ইউনিট তা নিশ্চিত করে বলা না গেলেও যাদের নাম উঠে আসছে তারা হলেন আপেল মাহমুদ, হারুনুর অর রশিদ, সাইফুলাহ ইবনে আহমেদ সুমন, শেখ জয়নুল আবেদীন রাসেল ও মো. ইব্রাহিম ফরাজী।
সূত্র জানায়, ক্লিন ইমেজের কাউকে নেতৃত্বে আনা হবে। তারা বলছেন, বিশ্বজিৎ হত্যাকাণ্ডের মধ্য দিয়ে ছাত্রলীগ ও আওয়ামী লীগকে সমালোচিত করেছে এ শাখা সংগঠনটি। বর্তমান সরকারের এবং পুরান ঢাকায় ছাত্রলীগের ইমেজ বৃদ্ধির জন্য এ সংগঠনকে ঢেলে সাজানোর চিন্তা করছেন তারা।
জানা যায়, ২০১২ সালের ৩ অক্টোবর অনেকটা কাকতলীয়ভাবেই জবি ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক হিসেবে নেতৃত্বে আসেন এফ এম শরিফুল ইসলাম ও এস এম সিরাজুল ইসলাম। এর পরই আলাদিনের চেরাগ হাতে পাওয়ার মতোই নিয়োগ বাণিজ্য, ভর্তি বাণিজ্য, দখল, চাঁদাবাজিসহ বিভিন্ন অবৈধ উৎস থেকে তারা কোটি কোটি টাকা আয় করেন। এছাড়াও ছাত্রী লাঞ্ছনা, শিক্ষকদের মারধর করারও অভিযোগ রয়েছে তাদের বিরুদ্ধে। আর ২০১২ সালের ৯ ডিসেম্বর নৃশংসতম বিশ্বজিৎ হত্যাকাণ্ডও ঘটে এ কমিটির আমলেই। এ মামলায় ছাত্রলীগের ৮ জনের ফাঁসি ও ১৩ জনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। তবে ধরা ছোঁয়ার বাইরেই থেকে গেছে তৎকালীন জবি ছাত্রলীগের শীর্ষ নেতৃত্বে থাকা শরিফ-সিরাজ।
নানাভাবে বিতর্কিত এ কমিটির মেয়াদ ১ বছর হলেও অদৃশ্য কারণে তা ৪ বছর পর বিলুপ্ত ঘোষণা করা হয়। তবে কমিটি বিলুপ্তির ২১ দিন পেরিয়ে গেলেও এখনও কমিটি ঘোষণা করতে পারেনি কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ। জবি ছাত্রলীগের সম্মেলনের পর বেগম রোকেয়া ও ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্মেলন হয়েছে সাথে সাথে নতুন কমিটিও হয়ে গেছে। কিন্তু জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগ কমিটি শূন্য রয়েছে এখনও।
ছাত্রলীগের একাধিক পদপ্রত্যাশী নেতা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ছাত্রলীগের নীতি-নির্ধারকরা মুখে ‘লবিং-তদবির এ কাজ হবেনা’ বললেও মূলত মাইম্যান ছাড়া ছাত্রলীগে কেউ নেতৃত্বে আসছেনা। মাইম্যান দ্বারা ছাত্রলীগকে কুক্ষিগত করে রাখছে সাবেক কিছু নেতৃবৃন্দ।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি সাইফুর রহমান সোহাগ পূর্বপশ্চিমকে বলেন, বিভিন্ন কারণে জবি ছাত্রলীগের কমিটি দিতে বিলম্ব হচ্ছে, তবে আর দু,একদিনের মাঝেই কমিটি দেয়া হবে।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন