‘রাষ্ট্র বিরোধী ও আইন শৃঙ্খলা পরিপন্থী নাশকতা সামগ্রীর খোঁজে’ পুলিশ রাজধানীর গুলশানে খালেদা জিয়ার কার্যালয়ে অভিযানের মাধ্যমে অফিসটি ‘তছনছ করেছে’ বলে বিএনপির পক্ষ থেকে অভিযোগ করা করা হয়েছে। শনিবার সকাল ৭টা থেকে সাড়ে নয়টা পর্যন্ত কার্যালয়ে এ অভিযান চালানো হয়। কিন্তু পুলিশের রিপোর্টে দাবি করা হয়, তল্লাশি চলে সকালে ৮টা থেকে নয়টা পর্যন্ত।
বিএনপির পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হচ্ছে, অভিযানে পুলিশের প্রাপ্তি ‘শূন্য’। অর্থাৎ তারা কিছুই পায়নি। পুলিশও এটি স্বীকার করেছে। তাহলে কেন এই অভিযান?
অভিযানে পুলিশ কিছু পায়নি জানিয়ে বিএনপি সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, ‘এই অভিযানের পর পুলিশ বলেছে যে অভিযানে তাদের প্রাপ্তি শূন্য। বিএনপি চেয়ারপারসনের প্রধান নিরাপত্তা কর্মকর্তা কর্নেল (অব.) তৌহিদের কাছে কাছে তারা এ বিষয়ে বলেছে। আমিও সেখানে ছিলাম।’
প্রত্যক্ষদর্শী ও বিএনপি সূত্রে জানা গেছে, শনিবার সকাল সাড়ে ৬টার দিকে আকস্মিকভাবে গুলশান কার্যালয়ের সামনে হঠাৎ করেই পুলিশ মোতায়েন হয়। ৭টার দিকে গুলশান জোনের ডিসি মোস্তাক আহমেদের নেতৃত্বে পুলিশের একটি দল গুলশানে খালেদা জিয়ার কার্যালয়ে ঢোকে। কার্যালয়ের ভেতরের কলাপসিবল গেটের তালা ভেঙ্গে পুলিশ কার্যালয়ের মূল ভবনে প্রবেশ করে। এসময় পুলিশ ৩টি ভবনটিতে তল্লাশি চালায়। তল্লাশির সময় চারটি কক্ষের তালা ভেঙ্গে ভেতরে ঢুকে এবং তালাগুলো নিয়ে যায়।
পুলিশ কার্যালয়ে প্রবেশ করে অফিসের দুই কর্মচারী রাশেদুল ইসলাম ও আমিনুল ইসলাম স্বপনকে একটি কক্ষের মধ্যে আটকে রাখে। এছাড়া তাদের মোবাইল ফোনও ছিনিয়ে নেয়। তবে তল্লাশি শেষে যাওয়ার সময় তাদের মোবাইল ফোন ফেরত দেয় পুলিশ।
রাশেদুল পরিবর্তন ডটকমকে বলেন, ‘পুলিশ কলাপসিবল গেটের তালা ভেঙ্গে ভেতরে ঢোকে এবং চারটি কক্ষের তালা ভাঙ্গে। আমাদেরকে একটি রুমে আটকে রাখে। আমাদের মোবাইলে ফোন নিয়ে বন্ধ করে রেখে দেওয়া। তল্লাশি শেষে যাওয়ার সময় আমাদের মোবাইল ফোন ফিরিয়ে দেয়।’
কার্যালয়ে রাষ্ট্রবিরোধী তথ্য আছে বলে এক ওয়ারেন্টের ভিত্তিতে অভিযান চালানো হয়েছে বলে জানান গুলশান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবু বকর সিদ্দিক।
অজ্ঞাতনামা যে জিডির প্রেক্ষিতে অভিযান চালানো হয়েছে এতে বলা আছে, ‘গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জানা যায়, গুলশান থানাধীন রোড-৮৬, বাড়ি-০৬-এ এবং এর আশপাশ এলাকায় রাষ্ট্রবিরোধী ও আইন শৃঙ্খলা পরিপন্থি এবং রাষ্ট্রের শৃঙ্খলা বিনষ্টসহ নাশকতামুলক কর্মকাণ্ডে সাধারণ জনগোষ্ঠীকে অংশগ্রহনের আহ্বানমুলক বিভিন্ন বক্তব্য সম্বলিত বিপুল পরিমাণ রাষ্ট্রীয় নাশকতা সৃষ্টির সামগ্রী আছে। এর পরিপ্রেক্ষিতেই পুলিশ অভিযান চালায়।’
বিএনপির পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়েছে, ‘অভিযানের সময়ে পুরো কার্যালয়ের কাগজপত্র তছনছ করে দেওয়া হয়েছে। পুলিশ অনুমতি ছাড়াই কার্যালয়ের প্রধান ফটকের গেটের তালা ভেঙে কার্যালয়ে প্রবেশ করে। অফিসের ভেতরে থাকা ক্লোজড সার্কিট ক্যামেরা (সিসি টিভি) ভেঙে ফেলা হয় বলেও দলের নেতারা অভিযোগ করেছেন।
অভিযানের পরপরই কার্যালয়ে দলের শীর্ষ নেতা থেকে শুরু করে কর্মীরাও পরিস্থিতি দেখতে আসতে শুরু করেন। তারা কার্যালয়ের সামনে বিক্ষোভও করেন।
অভিযানের পর কার্যালয়ে আসেন দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, ভাইস চেয়ারম্যান মোহাম্মদ শাহজাহান, যুগ্ম মহাসচিব হাবিব উন নবী খান সোহেল, সাংগঠনিক সম্পাদক ইমরান সালেহ প্রিন্স, শামা ওবায়েদ, সহ-আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক ফাহিমা নাসরিন মুন্নী, জাসাস সহ-সভাপতি শায়রুল কবির খান, স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি শফিউল বারী বাবু, সাধারণ সম্পাদক আবদুল কাদের ভুইয়া জুয়েল, যুবদলের সভাপতি সাইফুল ইসলাম নীরব, সাধারণ সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, মহিলা দলের সভাপতি আফরোজা আব্বাস প্রমুখ।
পাঠক মন্তব্য
বর্তমান সরকার যা করতেছে ভাল করতে চেনা,
পত্র পত্রিকায় খবর এসেছিলো খালেদা জিয়ার হাতে ৯০০ সংসদ সদস্য পদপ্রার্থীর তালিকা আছে সরকার যখন বি এন পির ভেতরে থাকা সরকারী দলের দালালদের মাধ্যমে তা হস্তগত করতে ব্যর্থ হয়ে পুলিশি তল্লাসির নামে তা হস্তগত করলো, এই সাধারণ হিসাবটি দেশের মানুষ ঠিকই বুঝেছে......
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন