ঢাকায় বসে এমপিরা কী করছেন? জামায়াত-শিবিরের নেতাকর্মীরা আওয়ামী লীগের পতাকাতলে সমবেত হচ্ছে , নৌকার বিরুদ্ধে আরেক জন দাঁড়িয়ে যায় বিদ্রোহী মনোভাবে আমাদের পরাজয় ঘটছে, সংসদ সদস্যদের সঙ্গে সংগঠনের নেতাকর্মীদের সৃষ্ট দূরত্ব দিন দিন স্পষ্ট হচ্ছে, দলের ভেতর বিশৃঙ্খলা জানছেন তৃণমূলের নেতারাও, এর ফলে সাধারণ মানুষ ও নেতাকর্মীদের মাঝে ফারাক তৈরি হচ্ছে। আজ প্রধানমন্ত্রীকে কাছে পেয়ে এভাবেই এমপিদের চুলচেড়া আমলনামা বিশ্লেষণ করলেন তৃণমূল থেকে আসা নেতারা।
শনিবার গণভবনে আওয়ামী লীগের বর্ধিত সভায় স্থানীয় নেতাদের সঙ্গে সংসদ সদস্যদের দুরুত্বের বিষয়টিসহ নানা অভিযোগ উত্থাপন করেন জেলার নেতারা।
তৃণমূলের নেতাদের বক্তব্য শেষ হলে সমাপনী বক্তব্যে শেখ হাসিনা বলেন, ‘প্রত্যেক সংসদ সদস্যকে নিজ জেলার নেতাদের সঙ্গে মিলেমিশে কাজ করতে হবে।’
শেখ হাসিনা মঞ্চে বসে থেকে সবার বক্তব্য শোনেন। পরে সবার অভিযোগ, অনুযোগ ও পরামর্শের জবাব দেন তিনি।
চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা সভাপতি মোসলেম উদ্দিন বলেন, ‘আমাদের সরকারের টানা দুই মেয়াদে ক্ষমতায় থাকার ফলে যে উন্নয়ন হয়েছে সে হিসাবে আমরা জাগরণ সৃষ্টি করতে পারিনি। সংসদ সদস্যদের সঙ্গে সংগঠনের নেতাকর্মীদের দূরত্ব তৈরি হয়েছে।’ এই দূরত্ব কাটিয়ে তুলতে শেখ হাসিনার দৃষ্টি আকর্ষণ করেন তিনি।
সিলেট মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি বদরুদ্দিন কামরান বলেন, ‘আমাদের সিলেট বিভাগে মোট ১৯টি আসন। সেখানে যারা প্রার্থীদের বিজয়ী করতে তৃণমূলের প্রত্যেক নেতাকর্মীর ঘাম ঝরেছে। কিন্তু বিজয়ী হয়ে সেসব সংসদ সদস্যদের মধ্যে সাধারণ মানুষ ও নেতাকর্মীদের ফারাক তৈরি হয়েছে। ফলে আগামীতে চুলচেরা বিশ্লেষণ করে মনোনয়ন দেবেন।’
রংপুর বিভাগের পক্ষে রংপুর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক রেজাউল করিম রাজু বলেন, ‘এমপিরা নির্বাচিত হয়ে বলয়ের বাইরে যেতে পারেন না। আর বলয়ের কারণে অমুককে তমুককে দিয়ে কমিটি দেওয়া হয়। জামায়াত-শিবিরের নেতাকর্মীরা আওয়ামী লীগের পতাকাতলে সমবেত হয়। তারা কাদের ছত্রচ্ছায়ায় আওয়ামী লীগে ঢুকছে সেটা তদন্ত করে দেখতে হবে। এগুলো শক্ত হাতে দমন না করলে আমার মত আওয়ামী লীগের নিবেদিত নেতারা টিকে থাকতে পারবে না।
ঢাকা বিভাগের পক্ষে টাঙ্গাইল জেলার সভাপতি ফজলুর রহমান ফারুক বলেন, ‘আমরা ঐক্যবদ্ধ থাকব, নেতৃত্ব নিয়ে প্রতিযোগিতা যাব না। এক ও অভিন্ন থেকে এগিয়ে যাবো। কেউ ভিন্ন চিন্তায় ভিন্ন হব না।’
খুলনা জেলার সভাপতি হারুন উর রশীদ বলেন, ‘দলের মধ্যে শৃঙ্খলা এনে দিলে শেখ হাসিনার সরকার বার বার দরকার এই শ্লোগানও দিতে হবে না।’ তিনি বলেন, ‘আমরা বিভিন্ন সময়ে স্থানীয় সরকার নির্বাচনগুলোতে দেখেছি আপনি (শেখ হাসিনা) মনোনয়ন দেন। কিন্তু নৌকার বিরুদ্ধে আরেক জন দাঁড়িয়ে যায়। তাই শৃঙ্খলা অতীব জরুরি হয়ে পড়েছে। দলের বিরুদ্ধে যদি আমিও যাই আমার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিন।’
বরিশাল জেলা শাখার সভাপতি আবুল হাসনাত আব্দুল্লাহ বলেন, ‘আমরা বরিশাল বিভাগে ঐক্যবদ্ধ। তবে কোথাও কোন বিভেদ থাকলে, ভুল বোঝাবেঝি থাকলে মীমাংসা হবে না কেন?’।
ময়মনসিংহ বিভাগের পক্ষে ময়মনসিংহ জেলার সভাপতি জহিরুল হক খোকা বলেন, ‘আগামী নির্বাচনে জাতীয়ভাবে কাজকর্মই শুধু জনগণ বিবেচনা করবে না, বিবেচনা করবে স্থানীয়ভাবে এমপিরা কী করছেন, সেই প্রশ্ন আসবে? সেদিকেও খেয়াল রাখতে হবে। ’
যমুনা নিউজ
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন