দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের ওপর সন্ত্রাসী হামলাকারীদের অবিলম্বে গ্রেফতার করে শাস্তি প্রদানের দাবি জানিয়েছে বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া।
রবিবার (১৯ জুন) সন্ধ্যায় রাজধানীর গুলশানে একটি রেস্তোরাঁয় জাতীয় পার্টি (কাজী জাফর) উদ্যোগে আয়োজিত ইফতার মাহফিলে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
খালেদা জিয়া বলেন, আজকে চট্টগ্রাম (রাঙ্গুনিয়া) যে ঘটনা ঘটেছে তাতে করে প্রমাণ হয় যে, দেশে যতো সন্ত্রাস বিশৃঙ্খলা, অরাজকতা সব আওয়ামী লীগ করছে। তাদের দায়িত্ব যতটুকু তা পালন করেনি। চট্টগ্রামে একটা দুর্ঘটনা ঘটেছে, বিএনপি একটি বড় রাজনৈতিক দল হিসেবে মহাসচিবের নেতৃত্বে সেখানে একটি টিম গেছে। সেই টিম সেখানে দেখবে তারপর সাহায্য সহযোগিতা করবে। রাস্তাঘাট খারাপ ছিল আমাদের (বিএনপির) লোকেরাই তা টিক করে দিয়েছে। কিন্তু সেখানে যেই মাত্র বিএনপি গেছে তাই আওয়ামী লীগের লোকজন বিএনপির নেতাদের ওপর আক্রমণ করেছে। এই যদি দেশের অবস্থা হয় যে বিএনপির লোক কোথাও গেলেই আক্রমণ করতে হবে তাহলে বুঝতেই পারছেন আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকলে এদেশের মানুষের কোনো নিরাপত্তা নেই। যেখানে বিএনপি নিরাপদ নয়, সেখানে দেশের অন্য মানুষ কীভাবে নিরাপদ? যে কোনো মানুষের ওপর যখন তখন হামলা হচ্ছে। গ্রেফতার পর্যন্ত করা হয় না।
তিনি বলেন, আমি জানতে চাই- বিএনপির মহাসচিবের ওপর যে হামলা হলো তারপর কতজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। অবিলম্বে তাদেরকে গ্রেফতার করতে হবে এবং শাস্তি দিতে হবে, জেলে পাঠাতে হবে। আমরা এর বিচার চাই। এর থেকে প্রমাণ হচ্ছে যে, আজকে দেশে নির্বাচন অবশ্যই হতে হবে।
নির্বাচন প্রসঙ্গে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া বলেন, আমরা নির্বাচন চাই। বিএনপি নির্বাচনের অংশ গ্রহণ করবে এই ভয়ে আওয়ামী লীগ ভীত হয়ে গেছে। কারণ বিএনপি ও ২০ দলীয় জোট নির্বাচনে অংশ গ্রহণ করলে আওয়ামী লীগের কোনো ভবিষ্যত নাই। সেজন্য আওয়ামী লীগ জেনে শুনেই বিএনপি এবং ২০ দলীয় জোটকে নির্বাচন থেকে দূরে সরিয়ে রাখতে শয়তানি শুরু করেছে। বিভিন্ন জায়গায় ইফতার মাহফিলে পর্যন্ত হামলা চালাচ্ছে।
‘‘সে জন্য আমি পরিস্কারভাবে দেশবাসী ও আন্তর্জাতিকভাবে বলতে চাই-‘ হাসিনাকে ক্ষমতায় রেখে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থেকে নির্বাচন দিলে এই নির্বাচনে কেউ অংশ গ্রহণ করবে না। এবং সেই নির্বাচন দেশে হতে দেয়া হবে না। তাই আমরা ঈদের পরপরেই সহায়ক সরকারের রুপরেখা দেবো।নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে একটা নির্বাচন হতে হবে। আওয়ামী লীগের অধীনে, হাসিনার অধীনে কোনো নির্বাচন হবে না, হেত দেয়া হবে না। কারণ আওয়ামী লীগ থাকলে তার গুন্ডাবাহিনী থাকবে, তাদের ছেলা ছামান্ডা যাকে যেখানে বসিয়েছে তারা সেখানে থাকবে এবং তাবেদার নির্বাচন কমিশন তাদের(আওয়ামী লীগের) তাবেদারী করে যেকোনোভাবে আওয়ামী লীগকে নির্বাচনে জেতাবে এবং জিতানোর চেষ্টা করবে। সেজন্য আওয়ামী লীগকে ক্ষমতার বাইরে রেখে নিরপেক্ষ লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরি করে নির্বাচন হতে হবে। তাহলেই বুঝা যাবে আওয়ামী লীগের সমর্থন কতটুকু এবং তাদের পায়ের নিচে কতটুকু মাটি আছে?’’
তিনি বলেন, দেশের অবস্থা খুব খারাপ। আওয়ামী লীগের অত্যাচারে মানুষ অতিষ্ট।এদের কোনো নীতি নেই আদর্শ নেই।শুধু লুটপাট করে।এমনকি দেশে আবার ৭৪ সালের মতো বিরাজমান পরিস্থিতি সৃষ্টি হচ্ছে। সন্ত্রাসীদের হাতে দেশের মানুষ জিম্মি হয়ে গেছে। যেভাবে তথাকথিত আওয়ামী লীগ সরকার ট্যাক্স বসিয়ে মানুষকে শেষ করে দিয়েছে।তার ওপর চালের দাম বেড়েই যাচ্ছে। সবকিছুই বাংলাদেশে এখন সর্বাধিক। দেশি-বিদেশি বিনোয়োগ নেই।
দেশের মানুষকে আওয়ামী লীগ থেকে সতর্ক করে দিয়ে খালেদা জিয়া বলেন, আওয়ামী লীগ থেকে সাবধান হউন। দেশকে বাঁচান, দেশের মানুষকে বাঁচান, নিজেরা বাচুন এবং পরিবার পরিজনদের বাঁচাতে আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ হউন। প্রয়োজনে শান্তিপূর্ণ কর্মসূচির মা্ধ্যমে এই সরকারকে বিদায় করতে রাজপথে নামতে হবে।জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে।
ইফতার মাহফিলে বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোটের শীর্ষ নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
ব্রেকিংনিউজ
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন