বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আরমগীরের গাড়িবহরে হামলার প্রভাব আগামী জাতীয় নির্বাচনেও পরতে পারে বলে মন্তব্য করেছেন রাষ্ট্রবিজ্ঞানী দিলারা চৌধুরী । সোমবার বিবিসি বাংলাকে দেয়া এক সাক্ষাতে তিনি একথা বলেন।
তিনি আরো বলেন, একটি বড় রাজনৈতিক দল এমন চাপে থাকলে সেটি দেশের চলমান রাজনৈতিক সংকটকে আরও ঘনীভূত করবে। আমরা চাই নিরপেক্ষ অংশীদারিত্বমূলক নির্বাচন হোক। বিএনপি ও খালেদা জিয়াকে বিরোধী দল হিসেবে সরকার ও জনগণ দেখে। তো বিরোধী দলকে এমন দমন নিপীড়নের মুখে যে নির্বাচন হবে সেটি তো ২০১৪ সালের ৫ই জানুয়ারি’র মতোই হবে। সেটি দেশকে আরও সংকটে ফেলবে।
উল্লেখ্য, রাঙ্গামাটি যাবার পথে রোববার মির্জা ফখরুলের গাড়িবহরে হামলার ঘটনায় কয়েকজন আহত হয় বলে দলের পক্ষ থেকে জানানো হয়। রাঙ্গামাটিতে পাহাড়ধ্বসে ক্ষতিগ্রস্তদের মধ্যে ত্রাণ বিতরণের জন্য যাওয়ার পথে চট্রগ্রামের রাঙ্গুনিয়ায় দলের মহাসচিবসহ নেতাদের ওপর রোববারের হামলার ঘটনার জন্য সরকারের শীর্ষ পর্যায়কেই দায়ী করছে বিএনপি।
সোমবার বিক্ষোভ কর্মসূচির আগে দুপুরে ঢাকায় এক সংবাদ সম্মেলনে দলটির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রিজভী আহমেদ অভিযোগ করেন যে প্রধানমন্ত্রীর উস্কানিতে উৎসাহ পেয়েই সন্ত্রাসীরা বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের গাড়ি বহরে হামলা করেছে। আর বিএনপির সিনিয়র নেতাদের একজন খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, সামনের নির্বাচনকে সামনে রেখে বড় ধরনের পরিকল্পনার অংশ হিসেবে সরকার বিএনপির যে কোন কর্মসূচিতেই বাধা দিচ্ছে বা হামলা করছে।
তিনি আরো বলেন, তারা কণ্ঠ স্তব্ধ করতেই সভা সমাবেশ করতে দিচ্ছেনা। মিটিং করতে দেয় না। ইফতারে পর্যন্ত বাধা দেয়। রাঙ্গুনিয়ায় মহাসচিবের গাড়িতে আক্রমণ করলো। যখন সব দলের অংশগ্রহণে নির্বাচনে যাওয়ার কথা বলেছি তখন থেকেই আমাদের নির্বাচন থেকে দূরে রাখার জন্য সরকার এসব ষড়যন্ত্র করছে। কিন্তু ২০১৪ সালের ৫ই জানুয়ারির মতো নির্বাচন আর বাংলাদেশে হবে না।
বিএনপির দপ্তর বিভাগ এবং চেয়ারপার্সনের প্রেস উইং থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, ঢাকায় দলটিকে উন্মুক্ত স্থানে সমাবেশের অনুমতি দেয়া হয়েছে প্রায় এক বছর আগে। দলটির দাবি রাঙ্গামাটিতেই লংগদুতে সম্প্রতি পাহাড়ীদের বাড়িঘরে আগুনের ঘটনার পর তাদের একটি প্রতিনিধি দল বাধার মুখে সেখানে যেতে পারেনি। মাদারীপুরে দলীয় কর্মসূচি আর নরসিংদী, মৌলভীবাজার ও নেত্রকোনায় ইফতার মাহফিল ভন্ডুল হয়েছে। নাটোর, কুমিল্লাসহ কয়েকটি জায়গায় ইফতার আয়োজনের অনুমতিই মেলেনি।
তবে এসব অভিযোগ কিংবা আগামী নির্বাচনকে সামনে রেখে এমন বিশ্লেষন আমলে নিতেই রাজী নন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ। তার দাবি বিএনপির কোন কর্মসূচিতেই কেউ বাধা দেয়নি বরং নিজেদের সাংগঠনিক দুর্বলতা ঢাকার জন্য সরকারের বিরুদ্ধে রাজনৈতিক কর্মকা-ে বাধা দেয়ার অভিযোগ করে থাকে।
তিনি আরো বলেন, বিএনপি তো অহরত কর্মসূচি পালন করছে। মির্জা আলমগীর নিজেই করেছেন দুই-তিন আগেও। তাদের দলের নেতারা অসংখ্য কর্মসূচি গত কয়েক বছরে পালন করেছেন। তাই বিএনপিকে সুযোগ দেয়া হচ্ছে না এটি অত্যন্ত ভুল অভিযোগ।
আওয়ামী লীগের এই নেতা অবশ্য বলছেন বিএনপি মহাসচিবের ওপর হামলার ঘটনার সাথে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছে, যদিও এটিকে একটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা বলেই মনে করছেন তারা।
সূত্র : বিবিসি বাংলা।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন