মিশরের রাজধানী কায়রোতে আরব লীগের বৈঠকে সৌদি জোট ও কাতারি কূটনীতিকদের মধ্যে উত্তপ্ত বাক্যবিনিময় হয়েছে। দুপক্ষ একে অপরকে আক্রমণ করে বক্তব্য দিয়েছে। বৈঠকের একপর্যায়ে কাতারের পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী সুলতান বিন সা’দ আল-মুরাইখি অভিযোগ করেন, কাতারের বর্তমান আমিরকে উৎখাত করে অল্প পরিচিত যুবরাজ শেখ আবদুল্লাহ বিন আলি আল থানিকে ক্ষমতায় বসাতে চেয়েছিল সৌদি আরব।
সৌদি জোটই সেই অল্প পরিচিত ওই যুবরাজকে লাইমলাইটে নিয়ে এসেছিল বলেও অভিযোগ করেন এই কাতারি কূটনীতিক। খবর: আলজাজিরা।
অবশ্য সৌদি কূটনীতিক আহমেদ আল-কাত্তান এই অভিযোগ অস্বীকার করেন। আবার সৌদির ক্ষমতার দিকেও ইঙ্গিত দেন তিনি। কাত্তান বলেন, ‘সৌদি আরব কোনো শাসকগোষ্ঠিকে পরিবর্তন করতে গিয়ে এরকম সস্তা প্রক্রিয়ার দ্বারস্থ হয় না। তবে আপনাদের এটা মনে রাখতে হবে- আল্লাহ চাইলে সৌদি রাজ যা চায় তাই করতে পারে।’
জবাবে মুরাইখি বলেন, ‘এসব হলো হুমকি। আমার জানা নেই, তার এ ধরনের হুমকি দেয়া কিংবা এভাবে কথা বলার কর্তৃত্ব আছে কিনা।’
এসময় সৌদি কূটনীতিকের পক্ষ নিয়ে চলমান অচলাবস্থার জন্য কাতরকে দায়ী করে বক্তব্য দিতে থাকেন সংযুক্ত আরব আমিরাতের পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী আনোয়ার গারাশ। তিনি দাবি করেন, কাতারই শান্তি চায় না।
জবাবে কাতারি প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘গারাশ হয়তো বলতে ভুলে গেছেন যে, অবরোধ আরোপকারী এই চারটি দেশই ১৯৯৬ সালে কাতারের বিরুদ্ধে সামরিক পদক্ষেপ নিতে চেয়েছিল।’
এরপর সৌদি কূটনীতিকের সমর্থনে এগিয়ে আসেন মিশরীয় পররাষ্ট্রমন্ত্রী সামেহ শুকরী। কাতারি কূটনীতিকের বক্তব্যকে অগ্রহণযোগ্য অভিহিত করে তিনি বলেন, ‘সন্ত্রাসবাদকে সমর্থনের ব্যাপারে কাতারের দীর্ঘ ইতিহাস আমরা জানি। সিরিয়া, লিবিয়া, ইয়েমেন এমনকি মিশরের ভেতরে অর্থ ও অস্ত্র সরবরাহ করেছে কাতার।’
মিশরে ব্যাপক প্রাণহানির জন্য কাতারকে দায়ী করেন মিশরীয় পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
উল্লেখ্য, ২০১৩ সালে সামরিক বাহিনী কর্তৃক উৎখাতের আগ পর্যন্ত মিশরে গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত মুসলিম ব্রাদারহুড সরকারকে সমর্থন দিয়েছিল কাতার।
মুসলিম ব্রাদারহুডের সঙ্গে সম্পর্কচ্ছেদের জন্য কাতারকে আহ্বান জানিয়ে আসছিলে আরব দেশগুলো। আরব দেশগুলো মুসলিম ব্রাদারহুডকে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে দেখে। কাতার মনে করে মুসলিম ব্রাদারহুডের গণতান্ত্রিক সরকারকে সমর্থন দিয়ে তারা কোন অবৈধ কাজ করেনি।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন