সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়াতে নিজের নামে কোনো সম্পদ নেই এমন দাবি করে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন সরকারের কাছে বিদেশে বিএনপি নেতাদের যে সেকেন্ড হোমের কথা বলা হচ্ছে তার তালিকা প্রকাশের দাবি জানিয়েছেন।
তিনি বলেছেন, ‘মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুর, কানাডায় বিএনপি নেতাদের যে সেকেন্ড হোম আছে তার তালিকা প্রকাশ করুন। চ্যালেঞ্জ করছি, আমাদের বিরুদ্ধে এসব কল্পকাহিনীর সত্যতা গত ১০ বছর প্রমাণ করতে পারেনি, এখনও পারবে না।’
বৃহস্পতিবার নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে ড. মোশাররফ এই চ্যালেঞ্জ দেন।
বুধবার জাতীয় সংসদে প্রধানমন্ত্রীর জন্য নির্ধারিত প্রশ্নোত্তর পর্বে জাতীয় পার্টির (জাপা) সাংসদ ফখরুল ইমামের এক সম্পূরক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ও জিয়া পরিবারের সদস্যদের নামে বিদেশে কী কী সম্পদ আছে তা নিয়ে তদন্ত চলছে। সত্যতা যাচাই করে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া হবে।
খালেদা জিয়ার পরিবারের বিদেশে থাকা সম্পদের বিষয়ে গ্লোবাল ইন্টেলিজেন্স নেটওয়ার্কের (জিআইএন) সাম্প্রতিক একটি প্রতিবেদন তুলে ধরে জাতীয় পার্টির এই সংসদ সদস্য বিষয়টি প্রধানমন্ত্রী জানেন কি না এবং এ বিষয়ে কোনও পদক্ষেপ নিয়েছেন কিনা তা জানতে চান। পরে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
রিপোর্টটি পাঠকালে ফখরুল ইমাম বলেন, ‘দুবাইসহ অন্তত ১২টি দেশে জিয়া পরিবারের সম্পদ আছে। এই সম্পদের পরিমাণ এক হাজার দুইশ কোটি টাকা।’ প্রশ্ন করতে গিয়ে এই সংসদ সদস্য জানান, দুবাইয়ে খালেদা জিয়ার মালিকানায় একটি শপিং মল রয়েছে। কাতারে বহুতল বাণিজ্যিক ভবন ‘ইকরা’র মালিক আরাফাত রহমান কোকো। বেগম জিয়ার ভাগ্নে শাহিন আহমেদ তুহিনের নামে কানাডায় তিনটি বাড়ি রয়েছে। বিএনপির সাবেক আইনমন্ত্রী আমিনুল হকের নামে লন্ডনের স্ট্রাটফোর্ড ও অলগেটে দু’টি অ্যাপার্টমেন্ট রয়েছে। লন্ডনে বাড়ি আছে ব্যারিস্টার মওদুদ আহমেদেরও। বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাসের স্ত্রীর নামে দুবাইতে রয়েছে অ্যাপার্টমেন্ট। সিঙ্গাপুরে মির্জা আব্বাস তার সন্তানের নামে দু’টি অ্যাপার্টমেন্ট কিনেছেন। মালয়েশিয়ায় মির্জা আব্বাসের স্ত্রীর নামে ‘সিটি সেন্টার-২’ এ তিনটি ২৫০০ বর্গফুটের বাণিজ্যিক জায়গা (স্পেস) রয়েছে। বিএনপির আরেক নেতা নজরুল ইসলাম খানের সিঙ্গাপুরে অ্যাপার্টমেন্ট রয়েছে। সিঙ্গাপুরে ‘মেরিনা বে’ নামে বিলাসবহুল হোটেলের শেয়ার রয়েছে বিএনপি সরকারের সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী এবং স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশারফের। মেরিনা বে হোটেল অ্যান্ড রিসোর্টের ১৩ হাজার শেয়ারের মালিক তিনি। খন্দকার মোশারফের সিঙ্গাপুরে দু’টি বিলাসবহুল অ্যাপার্টমেন্ট রয়েছে। মালয়েশিয়ায় রয়েছে তিনটি অ্যাপার্টমেন্ট।
সংবাদ সম্মেলনের এর জবাব দিতে গিয়ে বিএনপি নেতা মোশাররফ বলেন, ‘গতকাল সংসদে বিএনপি ও আমার নামে সম্পদের যে সব তথ্য দেয়া হয়েছে তা মিথ্যা ও বানোয়াট। রাজনৈতিক উদ্দেশে ও কাল্পনিক গল্প জড়িয়ে বিএনপিকে নানাভাবে ঘায়েল এবং বিএনপি নেতাকর্মীদের মধ্যে বিভ্রান্ত সৃষ্টি করাই এর উদ্দেশ্য।
তিনি বলেন, ‘মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুর, কানাডায় বিএনপি নেতাদের যে সেকেন্ড হোম আছে তার তালিকা প্রকাশ করুন। চ্যালেঞ্জ করছি, আমাদের বিরুদ্ধে এসব কল্পকাহিনীর সত্যতা গত ১০ বছর প্রমাণ করতে পারেনি, এখনও পারবে না।’
সংবাদ সম্মেলনে দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘বিএনপির সিনিয়র নেতৃবৃন্দের নামে বিদেশে যে কল্পিত সম্পদের কথা বলা হয়েছে তা হাস্যকর। আমরা চ্যালেঞ্জ করে বলতে চাই-এই ধরণের কল্পকাহিনীর কোনো প্রমাণ তারা ১০ বছর তন্ন তন্ন করে খুঁজেও বের করতে পারেননি, এখনও পারবেন না। এই মিথ্যাচার শুধুমাত্র দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া এবং বিএনপি’র নেতৃবৃন্দের ভাবমূর্তি বিনষ্ট করবার হীন উদ্দেশ্যে করা হচ্ছে।’
ঢাকাটাইমস
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন