বিশেষ প্রতিনিধি
রোহিঙ্গা শরণার্থী ক্যাম্পে শিখ এনজিও'কে অনুমোদন দিলেও শেখ হাসিনা সরকারের পক্ষ থেকে মুসলিম এনজিও'কে বাধা দেয়া হচ্ছে। আজ বুধবার প্রথম আলো সংবাদ প্রকাশ করেছে "
রোহিঙ্গাদের ত্রাণ দিতে তিন এনজিওকে বারণ" শিরোনামে।
প্রথম আলোর প্রতিবেদনে বলা হয়, রোহিঙ্গা শরণার্থীদের মধ্যে ত্রাণকাজ চালাতে তিনটি বেসরকারি সংস্থাকে (এনজিও) নিষেধ করেছে সরকার। এই সংস্থাগুলো ত্রাণ বিতরণের নামে ভিন্ন কিছু করছে বলে অভিযোগ আছে। আজ বুধবার সংসদ ভবনে অনুষ্ঠিত পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির বৈঠকে মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে এ কথা জানানো হয়।
বৈঠক শেষে কমিটির সদস্য মাহজাবিন খালেদ প্রথম আলোকে বলেন, মুসলিম এইড, ইসলামিক রিলিফ ও আল্লামা ফজলুল্লাহ ফাউন্ডেশন নামের তিনটি এনজিওকে রোহিঙ্গাদের মধ্যে ত্রাণ বিতরণ করতে নিষেধ করা হয়েছে।
মাহজাবিন বলেন, তাঁরা কক্সবাজার গিয়ে শুনেছেন, কিছু বেসরকারি সংস্থা সেখানে ত্রাণ বিতরণের নামে অন্য কিছু করছে। ত্রাণ বিতরণের নামে অন্য কিছু প্রচার করা বন্ধ করার জন্য বলা হয়েছে। আর যারাই ত্রাণ দিতে আসবে, তাদের যাচাই-বাছাই করা এবং সমন্বয় কমিটির মাধ্যমে ত্রাণ বিতরণের কথা বলা হয়েছে।
মুসলিমদের দ্বারা পরিচালিত এনজিওর বিরুদ্ধে 'অন্য কিছু করা'র অভিযোগ পেলেও ভারত থেকে আসা শিখদের দ্বারা পরিচালিত এনজিওর বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ খুঁজে পায়নি শেখ হাসিনার সরকার।
গত কিছুদিন আগে ডেইলি সান এর সংবাদে বলা হয়, "এবার বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্তে ‘গুরু কা লঙ্গরখানা’ খোলার মাধ্যমে রোহিঙ্গাদের পাশে দাঁড়িয়েছে শিখদের খালসা এইড নামের একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন। বৃহস্পতিবার (১৪ সেপ্টেম্বর) ভাত এবং সবজি রোহিঙ্গা শিবিরে বিতরণের মাধ্যমে এ ‘গুরু কা লঙ্গরখানা’র কার্যক্রম শুরু করে সংগঠনটি।
সংস্থার ম্যানেজিং ডিরেক্টর অমরপ্রীত সিং জানান, বাংলাদেশ সরকারের সহায়তা নিয়ে রবিবার থেকে তাঁরা বাংলাদেশের সীমান্ত শহর টেকনাফে লঙ্গরখানা চালু করবে। তবে এর আগে বৃহস্পতিবার তারা শাহপরি দ্বীপে এই লঙ্গরখানা খুলেছে। মিয়ানমার থেকে আসা রোহিঙ্গারা নদী পথে এখানেই প্রথম নামে।
রোহিঙ্গাদের জন্য কাজ করছিলো এমন ৩টি ইসলামিক এনজিও-এর কার্যক্রম নিষিদ্ধ করেছে সরকার। সরকারের পক্ষ থেকে তাদের ত্রাণ তৎপরতা চালাতে নিষেধ করা হয়েছে।
এনজিও ৩টি হলো মুসলিম এইড বাংলাদেশ, ইসলামিক রিলিফ এবং আল্লামা ফয়জুল্লাহ ফাউন্ডেশন।
আজ বুধবার সংসদ ভবনে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির বৈঠকে মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে এ তথ্য জানানো হয়।
কমিটির সভাপতি দীপু মনির সভাপতিত্বে বৈঠকে কমিটির সদস্য পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী, প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম, মুহাম্মদ ফারুক খান, গোলাম ফারুক খন্দকার প্রিন্স এবং মাহজাবিন খালেদ অংশগ্রহণ করেন।
কারণ হিসেবে বলা হয়েছে, এনজিও হিসেবে কাজ করতে এনজিও বিষয়ক ব্যুরো থেকে অনুমতি নেয়া আবশ্যক। কিন্তু তারা তা নেয় নি।
সাথে সাথে যারা অনুমতি ছাড়াই সেখানে কার্যক্রম চালাচ্ছে তাদের কার্যক্রমও বন্ধ করতে বলা হয়েছে।
গত ২৫ আগস্ট মিয়ানমারে সেনাদের তথাকথিত ক্লিয়ারেন্স অপারেশন শুরুর পর এ পর্যন্ত প্রায় ৬ লক্ষ রোহিঙ্গা পালিয়ে বাংলাদেশে এসেছে। তাদের মধ্যে জরুরি সেবা ও ত্রাণ দিচ্ছে বিভিন্ন এনজিও ও স্বেচ্ছাসেবী প্রতিষ্ঠান। এ তিনটি প্রতিষ্ঠানও ত্রাণ কার্যক্রম চালাচ্ছিল রোহিঙ্গা ক্যাম্পে।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন