বর্তমান ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের শাসনামলে সারাদেশে বিএনপির নেতাকর্মীদের উপরমামলা-হামলা, গুম-খুন আর নির্যাতনের চিত্র প্রকাশ করবে দলটি। এজন্য দলের একটি সেল কাজকরছেন। ইতিমধ্যে তারা দেশে দলটির ৭৫টি সাংগঠনিক ইউনিট এলাকা সফর প্রায় শেষকরেছেন। দলের চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া দেশে আসার পর তার কাছে এসকল কার্যক্রমেরবিস্তারিত তুলে ধরা হবে। এরপর তার নির্দেশনা অনুযায়ি দ্রুত সময়ের মধ্যে বাকি কাজওসম্পন্ন করা হবে বলে নিশ্চিত করেছেন মামলা ও তথ্য সংরক্ষন কর্মকর্তা মো. সালাহউদ্দিন খান,পিপিএম।তিনি জানান, আমরা ইতিমধ্যে দেশের ৪১টি সাংগঠনিক ইউনিট কমিটি, ৬৯ উপজেলা ও১৫৬টি ইউনিয়ন এলাকায় সফর করেছি।
এসব এলাকায় নেতাকর্মীদের নামে মামলার সংখ্যা,ধরন আর উদ্দেশ্য, গুম, খুন, ক্রসফায়ার, অপহরন, আহত-পঙ্গু, ঘর-বাড়িতে অগ্নি সংযোগসহনানা ধরনের নির্যাতনের চিত্র তুলে এনেছি। এগুলো নিয়ে আমরা ডাটাবেজ তৈরী করছি। যাতেপ্রমান হিসেবে প্রকাশ করতে পারি। আমরা দ্রুত কাজ করছি। জানা গেছে, মামলা ও তথ্য সংরক্ষন সেলে তিনজন কাজ করছেন।
এর মধ্যে পুলিশের সাবেককর্মকর্তা সালাহউদ্দিন খান পিপিএম প্রধান হিসেবে রয়েছেন। অন্য দু’জন-রাজশাহীবিশ্ব বিদ্যালয়ের সাবেক ছাত্রনেতা শরিফুল ইসলাম শাওন ও জাহাঙ্গীর নগর বিশ্ব বিদ্যালয়ের সাবেক ছাত্র নেতা তারেক। এসসকল কার্যক্রম নিঁখুতভাবে সম্পন্ন করার জন্য বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের তৃতীয় তলায় আলাদা জায়গা ও নানাবিধ সুবিধা দেয়া আছে। তথ্য সংরক্ষনের জন্য আলাদা আলাদা সাংগঠনিক ইউনিট কমিটির নামে সেলফ (তাক) করা হয়েছে। এর বাইরেও তথ্যকে সংরক্ষন করার জন্য বিভিন্ন উপায়ে ভিন্নভাবে রাখা আছে। যাতে কোন কারনেকার্যালয়ের তথ্য বেহাত হলে ওইসকল জায়গার তথ্য সুরক্ষিত থাকে।মামলা ও তথ্য সংরক্ষন সেলের প্রধান কর্মকর্তা ও পাবনা-১ আসনে বিএনপির মনোয়ন প্রত্যাশী সালাহউদ্দিন খান জানান, আমরা এ পর্যন্ত যে সকল এলাকাগুলোতে সফর করেছি তাতে ২০০৯ সাল থেকে অদ্যবধি পর্যন্ত আমাদের কাছে ২৩ হাজার ৭শত’র কিছু বেশি মামলার ডকুমেন্টস এসেছে। এতে আসামী করা হয়েছে ৫লক্ষাধিক নেতাকর্মীকে। অন্যদিকে মামলা ছাড়াও গুম করাহয়েছে ১০৭জনকে। আহত-পঙ্গুত্ব কিংবা নির্যাতনের শিকার রয়েছেন প্রায় ২৭ হাজার। প্রায় ৫হাজার বাড়ি-ঘরে অগ্নি সংযোগ কিংবা ধ্বংস করা হয়েছে। আবার সারাদেশে যে সকলনেতাকর্মীকে গুম করা হয়েছে, অপহরন করা হয়েছে এসকল বিষয়ে যাদেরকে সন্দেহ করা হচ্ছেতাদের বিষয়েও বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরা হয়েছে আমাদের গবেষনায়। তিনি জানান, বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া চিকিৎসা শেষে লন্ডন থেকে দেশেআসার পর এসকল তথ্য তার কাছে উপস্থাপন করা হবে। এরপর তার নির্দেশনার উপর আগামী মাসথেকেই আমাদের পরবর্তি কার্যক্রম শুরু করা হবে। দেশের অন্যান্য সাংগঠনিক এলাকাগুলোতেসফর করে মামলা-হামলা আর নির্যাতনের প্রকৃত চিত্র তুলে আনার কাজ শেষ করবো। তিনি বলেন,আমরা এখনো চট্টগ্রাম, সিলেট আর ময়মনসিংহ বিভাগগুলোতে কাজ শুরু করতে পারিনি।
আরেকজন কর্মকর্তা জানান, আমরা সারাদেশের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে সকল নির্যাতনেরচিত্র নিয়ে ডকুমেন্টরী প্রকাশ করবো। এর মধ্যে নির্যাতনের চিত্র নিয়ে বইও প্রকাশ করা হবেবলে তিনি জানান।তিনি জানান, আমরা এই কাজ করতে গিয়ে বিভিন্ন মামলার অসংগতিও খুঁজে বের করছি।তিনি উদাহরন দিয়ে বলেন, বিএনপির আন্দোলনের সময়ে সকাল ১১টায় উত্তরার একটি ঘটনায়দলের মহাসচিব সহ আরো নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়। আবার একই সময়ের ঘটনা উল্লেখ করে যাত্রাবাড়ি এলাকায় আরেকটি মামলায় মমহাসচিবকে আসামী করা হয়েছে। তাহলেএকই ব্যাক্তি, একই সময়ে দুই জায়গায় কিভাবে উপস্থিত থাকতে পারেন। আবার দেশের প্রায়সকল মামলায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী বাদি হয়ে মামলা করেছেন।
কিন্তু যাদেরকে ভূক্তভোগিহিসেবে মামলায় উল্লেখ করা হয়েছে তাদের দিয়ে, ক্ষমতাসীন দলের নেতাকর্মীদের দিয়ে মামলারসংখ্যা একেবারে নগন্য। যা একটা সময়ে মামলাকে দূর্বল করতে পারে বলেও তিনি জানান।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন