বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে হওয়া দু’টি মামলার বিচার প্রক্রিয়া শেষ পর্যায়ে। জিয়া অরফানেজ ট্রাস্টে ও জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্টে দুর্নীতির অভিযোগের মামলার রায় হবার সময় কাছাকাছি এসে গেছে। এই পৃথক দুই মামলার আসামিদের আত্মপক্ষ সমর্থনে বক্তব্যের পর সাফাই সাক্ষী ও যুক্তিতর্ক। তারপরই রায়।মামলার প্রধান আসামি বেগম খালেদা জিয়া। রায়ে তাঁর সাজা হলে আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপি কোন কৌশল অবলম্বন করবে তা নিয়ে নানা বিচার বিশ্লেষণ চলছে। তাঁর দলের পক্ষে এ বিষয়ে কেউ মুখ খুলছেন না। তবে বিশিষ্টজনদের মতে বিএনপি’র সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানের অবর্তমানে তাঁর স্ত্রী ডা. জোবায়দা রহমান আসার সম্ভাবনা রয়েছে। রাজনৈতিক বিশ্লেষণও এ রকম ইঙ্গিতই দিচ্ছে। পরিচ্ছন্ন ভাবমূর্তির জন্য দলে ডা. জোবায়দা রহমানের গ্রহণযোগ্যতাও রয়েছে।
দলে ভাঙন ধরাতে একটি প্রক্রিয়া চলমান আছে। বিএনপি জোটকে দুর্বল করার পরিকল্পনাও যুক্ত হতে পারে। আসন্ন একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে ঘিরে সেটা আরো জোরালো সংকট হয়ে দেখা দিতে পারে দলটির জন্য। সম্প্রতি নৌপরিবহনমন্ত্রী শাজাহান খান বলেছেন, ‘খালেদা জিয়ার সাজা হলে নির্বাচনে যাবে না বিএনপি।’ আর খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইসলাম তো এ ব্যাপারে স্পষ্টই বলেছেন, ‘খালেদা জিয়ার সাজা হলে বিএনপি দুই-তিনভাগে বিভক্ত হবে। সব ভাগই পৃথক পৃথকভাবে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে।’মন্ত্রীদের এ ধরনের কথাবার্তায় বিএনপি কিসের আভাস পাচ্ছে এবং কি হতে চলেছে সেদিকেই মাথা ঘামাচ্ছেন রাজনীতির মানুষজন। বিএনপি নেতা-কর্মীরা চেয়ে আছে হাইকমান্ড থেকে দিকনির্দেশনা পাওয়ার আশায়।
বাংলাদেশের রাজনীতিতে ভারসাম্য রক্ষার একদিকে আছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ; অন্যদিকে বেগম জিয়া। মামলা, নির্যাতন,দমন-পীড়নে বিএনপি কিছুটা নিস্তেজ হয়ে পড়েছে। আন্দোলন-সংগ্রাম করে আওয়ামী লীগকে টলানোর পরীক্ষায় বিগত সংসদ নির্বাচনের আগে সফল হতে পারে নাই বিএনপি। ভবিষ্যতে পারার পথও নানা কারণ ও সংকটে বিপদ সঙ্কুল।খালেদা জিয়ার মামলার অন্যতম আইনজীবী বিএনপির আইন বিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট সানাউল্লাহ মিয়া এরকম আশঙ্কাই প্রকাশ করেছেন। তিনি এ প্রসঙ্গে বলেছেন, ‘বিএনপি চেয়াপারসনের মামলার কার্যক্রমের গতিপ্রবাহ দেখে মনে হচ্ছে সরকার একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে নতুন করে কোনো ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছে। ’
তাহলে? তারেক জিয়া প্রবাসে। খালেদা জিয়া ও সিনিয়র নেতাদের অনেকের মাথার ওপর মামলার খড়গ ঝুলছে। তাঁরা নির্বাচনের অযোগ্য হলে বিএনপি আগামী নির্বাচনে কেন, কিভাবে অংশ নিবে? সহায়ক সরকারের দাবি নিয়ে তাদের অটল অবস্থান শেষ পর্যন্ত আন্দোলনের ইস্যু বা হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহৃত হতে পারে। রাজনীতির গতিপ্রকৃতি পর্যবেক্ষণে ধারাবাহিক ধারণাসূত্র সে কথাই বলে। তাহলে নির্বাচনকে ঘিরে জনপদ আবারও রক্তাক্ত হবার আশঙ্কা বাদ দিলেও উপসংহার কী বলে? মহাজোট আগামী নির্বাচনেও ফাঁকা মাঠে গোল দিবে?
purboposhchim
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন