ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের গত ১৬ নভেম্বর বর্ধিত সভাস্থলের সামনে দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ময়লা আবর্জনা ফেলার ঘটনায় ১৮ নভেম্বরের নাগরিক সমাবেশে কিছুটা বেকায়দায় ছিলেন দক্ষিণের মেয়র সাঈদ খোকন।
ঐতিহাসিক ৭ মার্চের বঙ্গবন্ধুর ভাষণ ইউনোস্কো কর্তৃক স্বীকৃতি উপলক্ষে নাগরিক সমাবেশে বক্তব্য দেওয়ার কথা ছিল মেয়র সাঈদ খোকনের। কিন্তু মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের বর্ধিত সভার সমানে ময়লা আবর্জনার ফেলার ঘটনায় বক্তব্য দিতে দেওয়া হয়নি মেয়র সাঈদ খোকনকে- দলটির বিশ্বস্ত সূত্র এমন কথাই বলছে।
ময়লা আবর্জনার ফেলার ঘটনায় তাৎক্ষণিক শাস্তি হিসেবেই মেয়রকে বক্তব্য দেওয়া থেকে বঞ্চিত করে আওয়ামী লীগ। তবে নাগরিক কমিটির পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে- সমাবেশে অনেক ব্যক্তির মধ্যে কয়েকজনকেই বক্তব্যের সুযোগ দেয়া হয়েছে। অনেক রাজনৈতিক ব্যক্তিই নাগরিক সমাবেশে বক্তব্য দেননি। ময়লা আবর্জনা ফেলার ঘটনার সাথে বক্তব্য দিতে না দেওয়ার কোনও সম্পৃক্ততা ছিল না বলে মনে করছে নাগরিক সমাবেশের আয়োজক কমিটি।
জানা যায়, গত ১৬ নভেম্বর সকাল সাড়ে ১০টায় আজিমপুর পার্ল হারবার কমিউনিটি সেন্টারে ১৮ নভেম্বর নাগরিক সমাবেশকে সফল করা ও নতুন সদস্য সংগ্রহের লক্ষ্যে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে একটি বর্ধিত সভার করা হয়েছিল। কিন্তু এই বর্ধিত সভা যেন হতে না পারে সেজন্য কমিউনিটি সেন্টারের গেইটে সামনের রাস্তায় ৩-৪ ট্রাক দক্ষিণ সিটি করপোরেসনের ময়লা আবর্জনা ফেলে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করা হয়।
পরে ময়লা আবর্জনা কিছুটা সরিয়ে কমিউনিটি সেন্টারে প্রবেশ করে সভা শুরু করে দক্ষিণ আওয়ামী লীগের নেতারা। সভা শুরু হওয়ার পর পরই দক্ষিণ সিটি করপোরেসনের মেয়র সাঈদ খোকনের কর্মীরা দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহে আলম মুরাদের বহিষ্কার দাবি করে মিছিল বের করে। পরে শাহে আলম মুরাদের কর্মীরা পাল্টা মিছিল বের করলে পুলিশ দুগ্রুপকেই সরিয়ে দিতে বেশ কয়েক রাউন্ড ফাকা গুলিসহ টিয়ারশেল ছুড়ে। এসময় সাঈদ খোকনের কর্মীরা ৩টি মোটরসাইকেলে আগুন ধরিয়ে দেয়। পরে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকেই ৮ জনকে আটক করে।
এ ঘটনায় দক্ষিণ আওয়ামী লীগের বর্ধিত সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক দীপু মনি উপস্থিত থাকার কথা থাকলেও তিনি আসেননি। তবে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন খাদ্যমন্ত্রী অ্যাড. কামরুল ইসলাম।
সভায় বাধা দেওয়ার উদ্দেশ্যেই ময়লা ফেলা হয়েছিল বলে অভিযোগ শাহে আলম মুরাদের।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আওয়ামী লীগের এক সাংগঠনিক সম্পাদক ব্রেকিংনিউজকে বলেন, “নাগরিক সমাবেশে দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে মেয়রের বক্তব্য দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু দক্ষিণ আওয়ামী লীগের বর্ধিত সভার সামনে ময়লা ফেলে বাধা দেওয়ার অভিযোগে সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে মেয়রকে বক্তব্য দিতে দেওয়া হয়নি। তাৎক্ষণিক তাকে এই শাস্তি দেওয়া হয়েছে।”
তবে এ অভিযোগ অস্বীকার করে নাগরিক কমিটির যুগ্ম-আহ্বায়ক জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. হারুন-অর-রশীদ ব্রেকিংনিউজকে বলেন, “১৮ তারিখের সমাবেশ করা হয়েছে নাগরিক কমিটির পক্ষ থেকে। এটি আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে করা হয়নি। সমাবেশে বক্তব্য দেয়ার জন্য প্রথমে ২০-২৫ জনের একটা খসড়া তালিকা করা হয়েছিল। এই তালিকা থেকে কমিয়ে এনে বক্তব্য দিতে দেওয়া হয়েছে। সবাইকে তো আর বক্তব্য দিতে দেওয়া যায়নি। তার উপর সময় কম ছিল। এখানে রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত কোনও বিষয় ছিল না। আর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সভার সমানে ময়লা ফেলা হয়তো রাজনীতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। তবে আমাদের অনুষ্ঠানটি ছিল নাগরিক কমিটির। অরাজনৈতিক।’
এ বিষয়ে জানতে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র সাঈদ খোকনকে বেশ কয়েকবার ফোন দেওয়া হলেও তিনি রিসিভ করেননি।
ব্রেকিংনিউজ
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন