আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ বলেছেন, ‘১৯৭১ সালে স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় জিয়াউর রহমান পাকিস্তানের এজেন্ট ছিলেন। তিনি কখনও মনেপ্রাণে চাননি মুক্তিযুদ্ধে বাংলাদেশ স্বাধীনতা লাভ করুক। সেই জিয়াউর রহমানের গঠিত রাজনৈতিক দল বিএনপি ও তাদের শরীক দল জামায়াতে ইসলামী পাকিস্তানের আদর্শে বিশ্বাসী। সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ তৈরির কারখানা সেই পাকিস্তান তাদের পরিচালনা করছে।’
বুধবার (২২ নভেম্বর) কুমিল্লা নগরীর টাউনহল মাঠে কুমিল্লা সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের ত্রিবার্ষিক সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মাহবুবউল আলম হানিফ এসব কথা বলেন।
আওয়ামী লীগের এই নেতা বিএনপির উদ্দেশে বলেন, ‘দেশে আওয়ামী লীগ এমন কোনও অবস্থা তৈরি করেনি যে বাংলাদেশের জনগণ সরকারের বিরুদ্ধে অবস্থান নেবে। এমনকি এই দলকে টেনে-হিঁচড়ে অসম্মানজনকভাবে ক্ষমতা থেকে নামানোর শক্তি বাংলাদেশের কোনও রাজনৈতিক দলের নেই। জনগণ সব সময় আওয়ামী লীগ ও সরকারের পক্ষে আছে। জনগণ যখন পক্ষে থাকবে তখন আর কেউ ক্ষমতা থেকে অপমানজনকভাবে সরাতে পারবে না। তাই কোনও ধরনের উসকানিমূলক বক্তব্য দিয়ে দেশের রাজনৈতিক পরিবেশকে অস্থিতিশীল করে তুলবেন না।’
তিনি আরও বলেন, ‘আওয়ামী লীগ সবসময় জনগণের পাশে ছিল। আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে আন্দোলন করে পতন ঘটানো, অসম্মানিত করে বিদায় করার সেই শক্তি বাংলাদেশের অন্য কোনও রাজনৈতিক দলের আছে কিনা সেটা নিয়ে জনগণের মধ্যে সন্দেহ আছে।’
‘আওয়ামী লীগকে টেনে-হিঁচড়ে নামাতে হবে’- সম্প্রতি ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদের দেওয়া এই বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় মাহবুবউল আলম হানিফ বলেন, ‘বাংলাদেশের রাজনীতিতে সবচেয়ে দুর্নীতিগ্রস্ত, দল বদলের পল্টিবাজ হচ্ছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ। যেটাকে বাংলাদেশের আঞ্চলিক ভাষায় বলা হয় ডিগবাজিবাজ। তার চেয়ে নিম্নরুচি সম্পন্ন রাজনীতিবিদ বাংলাদেশে আছে কিনা সেটা আমার কাছে সন্দেহ আছে। সেই ধরনের একজন ব্যক্তি, বর্তমান সরকারের সম্পর্কে যখন এমন উক্তি ব্যবহার করে এটা জনগণের কাছে ধৃষ্টতা বলেই মনে হয়। এটা কোনোমতেই গ্রহণযোগ্য নয়।’ তিনি আরও বলেন, ‘তিনি (মওদুদ) খালেদা জিয়ার সঙ্গে চট্টগ্রাম যাওয়ার পর ফেরার সময় কুমিল্লায় দুর্ঘটনা হয়, কুমিল্লা হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন খালেদা জিয়া। সেসময় খালেদা জিয়াকে রেখেই এরশাদের মন্ত্রিসভায় যোগ দেন মওদুদ। এটা তার একটা অভূতপূর্ব দক্ষতা। রাজনীতিতে পল্টি খাওয়া এবং এই দল থেকে ওই দলে যাওয়ার এত দক্ষ লোক বাংলাদেশের ইতিহাসে আর কোনও লোকের নেই। ভবিষ্যতে তার মতো আর কেউ পারবে কিনা সন্দেহ আছে। এই মওদুদ সাহেব আজন্ম একজন পল্টিবাজ, দুর্নীতিবাজ।’
কুমিল্লা সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি কাজী আবুল বাশারের সভাপতিত্বে সম্মেলনে বিশেষ অতিথি ছিলেন- বাংলাদেশ রেলপথমন্ত্রী মজিবুল হক মুজিব, সংসদ সদস্য কুমিল্লা ৬ আসনের এমপি হাজী আ ক ম বাহাউদ্দিন বাহার, কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক বাবু সজিত রায় নন্দি, কুমিল্লা মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আরফানুল হক রিফাত, কুমিল্লা উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম, সদর ৪ নম্বর আমড়াতলী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান কাজী মোজাম্মেল হক, ৫ নম্বর পাচঁথুবী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হাসান রফি রাজু ও কুমিল্লা সদর উপজেলার চেয়ারম্যান অ্যাড. আমিনুল ইসলাম টুটুল প্রমুখ।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন