চাঁদপুরের কচুয়া আসনটি নানা কারণে আলোচনায়। রাজনৈতিক হানাহানি, মামলা-হামলা এক সময় এ কচুয়াকে দেশব্যাপী পরিচয় করিয়ে দেয়। আওয়ামী লীগের সাবেক ঝানু আমলা, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ড. মহিউদ্দিন খান আলমগীর আর বিএনপির সাবেক শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী এহছানুল হক মিলনের আসন এটি। চাঁদপুর-১ আসন। রাজনীতিতে প্রতিদ্বন্দ্বী এ দুই নেতার মুখোমুখি অবস্থানের কথা জানেন দেশবাসী। তবে আওয়ামী লীগ, বিএনপি দুই সরকারের আমলেই উন্নয়ন হয়েছে আসনটিতে।
বর্তমানে আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীরা পুরো আসনে দাবড়ে বেড়াচ্ছেন। নিজেদের মতো করে প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন। অপরদিকে বিএনপি নেতাদের অনেকেই এলাকাছাড়া। কারো কারো মাথায় ঝুলছে মামলা। তার পরও তারা কৌশলে প্রচার-প্রচারণায় মাঠে রয়েছেন। তবে মহিউদ্দিন খান আলমগীরকে এবার চ্যালেঞ্জে নিয়ে মাঠে নেমেছেন জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সাবেক চেয়ারম্যান গোলাম হোসেন। তিনি কচুয়ায় আওয়ামী লীগের অঙ্গসহযোগী সংগঠনসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক অনুষ্ঠানে যোগ দিচ্ছেন। তার এ কার্যক্রম নিয়ে ইতিমধ্যে বেশ কয়েকবার হামলা ও সংঘর্ষের সৃষ্টি হয়েছে। তার গাড়ি বহরও হামলার শিকার হয়েছে একাধিকবার। বর্তমানে প্রতি সপ্তাহে এলাকা ঘুরে যাচ্ছেন মহিউদ্দিন খান আলমগীর ও গোলাম হোসেন।
অপরদিকে মামলার কারণে বিএনপির একাধিক প্রার্থী প্রস্তুত রেখেছে এই আসনে। বিএনপি থেকে মনোনয়ন পাওয়ার কথা রয়েছে সাবেক শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী আনম এহছানুল হক মিলনের। তবে, ৩৬টি মামলায় ১৬ মাস কারাভোগ করে বর্তমানে প্রবাসে অবস্থানরত সাবেক শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী ও কেন্দ্রীয় বিএনপির আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক আ ন ম এহছানুল হক মিলন। এহছানুল হক মিলন অবশ্য প্রবাস থেকেই নেতা-কর্মীদের নিয়মিত খোঁজখবর রাখছেন। তার বিরুদ্ধে এখনো অনেক মামলা চলমান থাকায় নির্বাচনে অংশগ্রহণে অযোগ্য ঘোষণা হতে পারেন। সেক্ষেত্রে ইতিমধ্যে বিএনপির দলীয় হাইকমান্ড থেকে ‘সবুজ-সংকেত’ পেয়ে এলাকায় ব্যাপক নির্বাচনী তৎপরতা শুরু করেছেন মালয়েশিয়া বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মোশারফ হোসেনের সমর্থকরা। ফোনে এলাকায় নিয়মিত নেতাকর্মীদের খোঁজখবর নিচ্ছেন তিনি। দলের ভেতরে-বাইরে তার রয়েছে ব্যাপক জনপ্রিয়তা। মোশারফ হোসেনের সমর্থকরা দিনরাত তার জন্য এলাকায় গণসংযোগ করে যাচ্ছেন। জেলার নেতারা তাদের প্রার্থীর পক্ষে মাঠপর্যায়ে তৃণমূলে নেতা-কর্মীদের নিয়ে কর্মিসভাও করে যাচ্ছে। তারা আগামী নির্বাচন সম্পর্কে তৃণমূলের নেতাদের দিকনির্দেশনা দিচ্ছেন। এছাড়া বিএনপি থেকে নতুন মুখ হিসেবে কচুয়া উপজেলা বিএনপি’র সিনিয়র সহ-সভাপতি প্রকৌশলী আ হ ম মুনিরুজ্জামান দেওয়ান মানিকের নাম শোনা যাচ্ছে। বিএনপির একটি অংশ তার সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন। সেই লক্ষ্যে তিনি এলাকায় প্রচার-প্রচারণাও চালাচ্ছেন। এ আসনে প্রধান দুই দলেই হেভিওয়েট প্রার্থী রয়েছেন। আওয়ামী লীগের বর্তমান এমপি ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ড. মহিউদ্দিন খান আলমগীর একাদশ জাতীয় নির্বাচনেও দলের প্রার্থী হবেন- এটাই অনেকটা নিশ্চিত। প্রায়ই তিনি এলাকায় নেতা-কর্মীদের সঙ্গে মতবিনিময় করছেন। তবে এনবিআরের সাবেক চেয়ারম্যান মো. গোলাম হোসেন তাকে চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলে দিয়েছেন। গোলাম হোসেন তার অনুসারীদের নিয়ে গণসংযোগ চালিয়ে যাচ্ছেন।
অন্যদিকে জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় নেতা সাবেক জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ডা. এসএম সহিদুল ইসলাম, কচুয়া পৌরসভার সাবেক মেয়র হুমায়ুন কবির প্রধান ও সাবেক এমপি রফিকুল ইসলাম রনির সহধর্মিণী শামিমা আক্তার রনির নাম সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে শোনা যাচ্ছে। জাতীয় পার্টির প্রার্থী সাবেক এমপি ও জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ডা. শহিদুল ইসলাম ও জাপা কেন্দ্রীয় সদস্য এমদাদুল হক রুম্মন এলাকায় দীর্ঘদিন বিনামূল্যে চিকিৎসা সহায়তা অব্যাহত রেখেছেন।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন