একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে ‘অদৃশ্য দূরত্ব’ দেখা দিয়েছে ক্ষমতাসীন ১৪ দলীয় জোটে। সম্প্রতি মন্ত্রিসভায় রদবদল এ দূরত্ব আরো বাড়িয়ে দিয়েছে। সংশ্লিষ্টরা এমনটি মনে করছেন।
জোটের একাধিক নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানিয়েছেন, সরকারের শেষ সময়ে মন্ত্রিসভার রদবদলে জোটের শরীক নেতাদের দফতর বদলে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। জোটভুক্ত একটি দলের নেতারা জানিয়েছেন, তাদের দলীয় প্রধানের মন্ত্রিসভায় দফতর পরিবর্তনে নেতাকর্মী ও জনগণের মধ্যে ওই নেতার ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে পারে। এতে দলে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দেবে। বিষয়টি নিয়ে জোটের সভায় আলোচনা হবে বলেও জানা গেছে।
জোটের শরীক নেতারা আরো জানিয়েছেন, জোটভুক্ত দলের শরীক নেতাদের যদি এভাবে প্রশ্নবিদ্ধ করা হয় তাহলে দলীয় নেতাকর্মীদের মধ্যে নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে।
তবে কেউ কেউ বলছেন, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জোটভুক্ত থাকার সিদ্ধান্ত হলেও আসন বণ্টন নিয়ে কোনো আলোচনা হয়নি। যেহেতু ১৪ দলীয় জোট একটি আদর্শিক জোট সেহেতু এখানে ওই বিষয় নিয়ে তেমন কোনো প্রভাব পড়ার আশঙ্কা নেই।
এদিকে, ৫ জানুয়ারি ‘গণতন্ত্রের বিজয়’ দিবস উপলক্ষে আওয়ামী লীগ আয়োজিত কর্মসূচিতেও দেখা যায়নি জোটের শরীকদের। দিবসটি উপলক্ষে আওয়ামী লীগ আয়োজিত কর্মসূচিতে জোটের শরীকদের আনুষ্ঠানিকভাবে জানানো হয়নি। তাই কর্মসূচিতে যোগ দেননি শরীক নেতারা।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে আরো জানা গেছে, নির্বাচন প্রকিয়া এবং সরকারে অংশগ্রহণ নিয়ে জোটভুক্ত বেশ কয়েকটি দলে মধ্যে নানা অভিযোগ ও অনুযোগ রয়েছে। আগামী সংসদ নির্বাচনের আগেই সেগুলোর মীমাংসা চায় দলগুলো।
৫ জানুয়ারির কর্মসূচিতে শরীকদের যোগ না দেয়ার বিষয়ে আওয়ামী লীগ নেতারা বলছেন, এগুলো বড় কোনো ঘটনা নয়। সময়-সুযোগ না হওয়ায় জোটগতভাবে আলোচনা হয়নি। এটি নিয়ে জোটের মধ্যে দূরত্ব তৈরি হয়েছে- এমন মনে করারও কোনো কারণ নেই।
আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য আব্দুর রাজ্জাক বলেন, আমরা দলীয়ভাবে এ কর্মসূচি পালন করি। জোটের শরীকদের অনুপস্থিতি আমরা বড় করি দেখছি না। জোট আছে এবং ভবিষ্যতেও থাকবে।
জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল জাসদ (একাংশ) সভাপতি শরীফ নুরুল আম্বিয়া বলেন, আমি মনে করি পূর্ব থেকে আলাপ-আলোচনা না হওয়ায় জোটগতভাবে দিবসটি উপলক্ষে কোনো কর্মসূচি পালন হয়নি। ১৪ দলকে পাশ কাটিয়ে কিছু করার সময় এখন নয়।
জোটের অন্তর্ভুক্ত দু-একজন নেতা মন্ত্রিসভার রদ-বদলকে অনেকটা ‘অসম্মানজনক’ হিসেবে দেখছেন। তাদের দাবি, শরীক দলের নেতাদের ‘শাস্তিমূলক’ পদায়ণ হলে নিজ দলের মন্ত্রীদের বিষয়ে কী করা হবে? কোনো কোনো মন্ত্রী তো সম্পূর্ণরূপে ব্যর্থ হয়েছেন। এ বিষয়ে জোটের সভায় আমরা আলোচনা করবো।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন