প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নিরাপত্তাই এখন সরকারের প্রধান চ্যালেঞ্জ। প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তার দায়িত্ব পালনকারী সংস্থাগুলো প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তার ব্যাপারে সর্বোচ্চ সতর্কতা বা রেড অ্যালার্ট জারি করেছে। গত ছয় মাসে প্রধানমন্ত্রীকে হত্যার ৫ টি পরিকল্পনা নস্যাৎ করে দিয়েছে আইন প্রয়োগকারী সংস্থা। এর মধ্যে সর্বশেষটি ঘটেছে, গত শুক্রবার। র্যাবের অভিযানে নাখাল পাড়া একটি বাসায় তিন জঙ্গি নিহত হয়েছে। আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সূত্রে জানা গেছে, যে বাড়িটিতে জঙ্গিরা আস্তানা গেড়েছিল সেটি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের মাত্র ২০০ গজের মধ্যে। র্যাবের একটি দায়িত্বশীল সূত্র বলছে, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে আক্রমণ এবং কার্যালয় উড়িয়ে দেওয়াই ছিল জঙ্গিদের লক্ষ্য। এর আগে আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ১৫ আগস্টে ৩২ নম্বরে বঙ্গবন্ধুর বাসভবনের কাছে একটি হোটেলে অবস্থানরত জঙ্গির নাশকতা পরিকল্পনা নস্যাৎ করে দিয়েছিল। এছাড়াও, গোয়েন্দারা গত বছরে আত্মঘাতি পাইলটের ‘গণভবন’ আক্রমণের ষড়যন্ত্রও প্রতিহত করেছিল।
র্যাবের মহাপরিচালক বেনজির আহমেদ বাংলা ইনসাইডারকে বলেছেন, ‘এখন আমরা যেখানেই জঙ্গি আস্তানার খবর পাচ্ছি, সেখানেই সফল অপারেশন করছি। অপারেশনের পর আলামত পরীক্ষা করে আমরা দেখছি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর উপর আক্রমণই ছিল এসব জঙ্গিদের প্রধান পরিকল্পনা। তাঁর মতে ঘটনাগুলো বিচ্ছিন্ন নয়। আমরা জঙ্গিদের পেছনের মদদদাতা এবং মূল পরিকল্পনাকারীদের বের করার চেষ্টা করছি। আশা করি, আমরা সফল হব।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছে। কাজেই বাংলাদেশের উন্নয়ন ও অগ্রযাত্রাকে যারা পছন্দ করে না, তারাই শেখ হাসিনাকে হত্যা করতে চায়।’ ওবায়দুল কাদের মনে করেন, ‘৭৫ এর ১৫ আগস্টের ঘটনা, ২০০৪ সালের ২১ আগস্টের ঘটনা এবং সাম্প্রতিক সময়ের জঙ্গিদের শেখ হাসিনাকে হত্যার ষড়যন্ত্র একই সূত্রে গাঁথা।’ তাঁর মতে, ‘এর লক্ষ্য একটাই বাংলাদেশকে আবার ৭৫ এর পরের অন্ধকার যুগে নিয়ে যাওয়া।’
গোয়েন্দা সংস্থাগুলো বলছে, এখন জঙ্গিরা হোলি আর্টিজান বা এ ধরনের ঘটনায় মনোযোগী নয়। এই হামলার পরিকল্পনার ধরনগুলো ইসলাম কায়েম নয়। বরং এগুলো অনেকটাই পলিটিক্যাল মোটিভেটেড। এসব পরিকল্পনাগুলো পর্যালোচনা করে দেখা যায়, একটি বিশেষ লক্ষ্য অর্জনের জন্য এসব পরিকল্পনা সাজানো হচ্ছে। আর পরিকল্পনাটি হলো প্রধানমন্ত্রীর উপর আক্রমণ। তাই,সাম্প্রতিক ঘটনাগুলো জঙ্গি তৎপরতা নাকি রাজনৈতিক পৃষ্ঠপোষকতায় সন্ত্রাসবাদ এ নিয়ে তদন্ত করছে গোয়েন্দা সংস্থাগুলো। গোয়েন্দা সংস্থাগুলো ইতিমধ্যে গণভবন, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় এবং বঙ্গভবনকে সর্বোচ্চ নিরাপত্তার আওতায় এনেছে।
গোয়েন্দা সংস্থাগুলো মনে করছে, নির্বাচনের আগে আরও সতর্কতা অবলম্বন করা জরুরি। এজন্য বেশ কিছু পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে বিভিন্ন সংস্থা।
তবে প্রধানমন্ত্রীর ঘনিষ্ঠ সূত্রগুলো বলছে, এসব ঘটনায় উদ্বিগ্ন বা ভীত নন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বরং তার ঘনিষ্ঠ সহকর্মীকে বলেছেন, ‘হায়াত মউত আল্লাহর হাতে। আল্লাহ যতদিন হায়াত রাখবে ততদিন বাঁচব। মুসলমান একবারই মরে।’ প্রধানমন্ত্রী তাঁর স্বাভাবিক কর্মসূচি এতটুকু পরিবর্তন করেননি।
বাংলা ইনসাইডার
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন