ফরিদপুরের সালথা উপজেলায় আওয়ামী লীগের চার পক্ষের মধ্যে তিন দফায় সংঘর্ষে অন্তত ৭০ জন আহত হয়েছে। আ.লীগের চার পক্ষের সংঘর্ষে গোটা সালথা উপজেলা রণক্ষেত্রে পরিণত হয়।
আজ শনিবার সকালে উপজেলার মাঝারদিয়া ইউনিয়নের মাঝারদিয়া গ্রামে ও গতকাল শুক্রবার রাতে রামকান্তপুর ইউনিয়নের রামকান্তপুর বাজারে পৃথকভাবে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
আহতদের নগরকান্দা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। সংঘর্ষ নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ কাঁদানে গ্যাসের শেল নিক্ষেপ করে। এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয়রা জানিয়েছেন, মাঝারদিয়া গ্রামে সালথা উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ও মাঝারদিয়া ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান হাবিবুর রহমান হামিদ মাতুব্বরের সঙ্গে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সেলিম মোল্যার পক্ষের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলে আসছে। গতকাল শুক্রবার রাতে দুই পক্ষের মধ্যে কথা কাটাকাটির একপর্যায়ে উভয় পক্ষই দেশীয় অস্ত্রে সজ্জিত হয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। সংবাদ পেয়ে সালথা থানা পুলিশ উপস্থিত হয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
এরই জের ধরে আজ শনিবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে উভয়পক্ষের মধ্যে ফের সংঘর্ষ বাধে। প্রায় দুই ঘণ্টাব্যাপী চলা এ সংঘর্ষে উভয়পক্ষের অন্তত ৫০ জন ব্যক্তি আহত হয়। সংঘর্ষের খবর পেয়ে র্যা ব ও পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। আহতদের নগরকান্দা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
মাঝারদিয়া গ্রামে সংঘর্ষের ঘটনায় আওয়ামী লীগের দুই নেতার কারো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
এদিকে গতকাল শুক্রবার রাতে সালথা উপজেলার রামকান্তপুর গ্রামে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে আওয়ামী লীগের দুইপক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। উপজেলা কৃষক লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক কামাল হোসেন ও রামকান্তপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক কাদের মাতুব্বরের সমর্থকদের মধ্যে এ সংঘর্ষে উভয়পক্ষের অন্তত ২০ ব্যক্তি আহত হয়েছেন।
আহতদের নগরকান্দা উপজেলা হাসপাতাল ও ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালসহ বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এ সময় সংঘর্ষকারীরা রামকান্তপুর বাজারে উভয়পক্ষের প্রায় ১৫টি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ভাঙচুর করে।
রামকান্তপুরে সংঘর্ষের ঘটনায় আওয়ামী লীগ নেতা কাদের মাতুব্বর বলেন, ‘কামাল হোসেনের নামে আমি একটি মামলা করি। সেই আক্রোশে শুক্রবার সন্ধ্যার পর কামাল তাঁর বাহিনী নিয়ে আমার ওপর অতর্কিত হামলা চালায়।’
কামাল হোসেন অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ‘সন্ধ্যার পর রামকান্তপুর বাজারে চা খাচ্ছিলাম। কাদের মাতুব্বর ও তাঁর সমর্থকদের পূর্ব পরিকল্পনায় দেশীয় অস্ত্র নিয়ে আমার ওপর হামলা চালায়। আমার লোকজন প্রতিহত করতে গেলে সংঘর্ষ বাধে।’
সালথা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) দেলোয়ার হোসেন খান বলেন, সংবাদ পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে সাতটি কাঁদানে গ্যাসের শেল নিক্ষেপ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এলাকার পরিবেশ শান্ত রাখতে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন