আওয়ামী লীগের উপ-কমিটির সহ-সম্পাদক পদ নিয়ে ছাত্রলীগের সাবেক নেতাদের বিক্ষোভ ও তাদের তোপের মুখে পড়া নিয়ে গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদ সঠিক নয় দাবি করেছেন দলটির সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, এ বিষয়ে খুব কষ্ট পেয়েছি বিশ্বাস করুন।
রোববার সচিবালয়ে প্রেস ব্রিফিংয়ে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী কাদের এ কথা জানান।
বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদ অনুযায়ী শনিবার আওয়ামী লীগ সভাপতির ধানমন্ডির রাজনৈতিক কার্যালয়ে ছাত্রলীগের সাবেক নেতারা বিক্ষোভ করে। তাদের তোপের মুখে পড়েন ওবায়দুল কাদের। ক্ষোভের মুখে এ কমিটি বাতিলের ঘোষণাও দেন তিনি।
এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘এটি একটি স্রেফ ভুল বুঝাবুঝি, এখানে স্থগিত ও বাতিলের বিষয় নেই। এক সাংবাদিক মুখোমুখি হয়েছে তাকে আমি বললাম আপনে যে লিখলেন স্থগিত, কোনো কিছু বাতিল বা স্থগিত হয়নি।’
প্রক্রিয়ার মধ্যে ভুল বুঝাবুঝি হয়েছে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘এবার আমরা অন্যবারের চেয়ে ব্যতিক্রম একটি পদ্ধতি গ্রহণ করেছি। সব সময় দেখা যায় কনফারেন্সের পর সহ সম্পাদক পদ নিয়ে ৯৫ জন রাখার বিষয় আছে। সেটা নিয়ে সাবেক ছাত্র নেতা বা কিছু কিছু তরুণকে কাজে লাগানোর জন্য ভালো উদ্দেশে সহ-সম্পাদক রাখার বিধান রয়েছে সম্পাদকদের কাজে সহযোগিতার জন্য।’
‘আসলে এখানে সহ-সম্পাদক বিষয় নয়, বিষয়টা হলো সাব কমিটি। ১৯ ডিপার্টমেন্টে সাব কমিটি হবে, আগে দুই-একটা বিভাগ ছাড়া সাব কমিটি ছিল না। আওয়ামী লীগের বিষয়গুলো প্রচারের জন্য সাব কমিটি গঠন ও কার্যকর করা হয়।’
তিনি বলেন, ‘যেভাবে কথাগুলো সামাজিক মাধ্যমগুলোতে চলে গেছে, সেখানে উপ-কমিটি মানেই হল সহ-সম্পাদক, এটা ঠিক না। সহ-সম্পাদক থাকবে, আমাদের কতগুলো ক্লাইটেরিয়া রয়েছে। সব উপ-কমিটি হয়ে গেছে, সহ-সম্পাদক ছাড়া অনেকগুলো উপ-কমিটি ছেড়ে দিয়েছি।’
‘এবার সমস্যাটা কেন হয়েছে, যাদের উপ-কমিটিগুলো চূড়ান্ত হয়নি সেই সম্পাদকদের কাছে অফিস সেক্রেটারির স্বাক্ষরে খসড়া কমিটি পাঠানো হয়েছিল, এটি প্রস্তাবিত বিষয়। এটা করতে গিয়ে সেটা চলে গেছে ফেসবুকে এবং ফেসবুকে যাওয়াতে বিভ্রান্তি হয়েছে। কমিটি চূড়ান্ত হলে সভাপতি ওকে করলে আমার সিগনেচারে উপ-কমিটি সংশ্লিষ্ট বিভাগে চলে যাবে, এটা আমাদের নিয়ম। এ নিয়ম নিয়ে ভুল বুঝাবুঝি আছে।’
‘কোন কিছু স্থগিত বা বাতিল হয়নি। আমি এক মাস আগে বলেছি, সব উপ-কমিটিতে সবাই সদস্য থাকবে।’
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘গতকাল বিক্ষোভ করেছে কাদের সাবেহকে অবরুদ্ধ করছে, আমি তো এসব দেখলাম না। আমি তো নামাজ পড়ছিলাম তখন দরজা বন্ধ ছিল। ওজু করে আমি নামাজ পড়ি। খুব কষ্ট পেয়েছি বিশ্বাস করুন।’
তিনি বলেন, ‘রাজনীতি করলেই মিথ্যা কথা বলতে হবে? এ রকম কিছু ঘটেনি আমি নামাজ পড়ছিলাম। সেটা নিয়ে বলা হয়েছে দরজা বন্ধ করে....ওবায়দুল কাদের কি সেই নেতা, সেই সাধারণ সম্পাদক, আমি সব কিছু করি বিবেক আমার ভরসা। আমার সাইন কোনো কাগজে নেই। প্রক্রিয়া সমাপ্ত হয়নি, স্থগিত বা বাতিল কেন হবে।’
‘গতকাল যারা আমার গাড়িতে গিয়ে বিষয়টা পরিষ্কার হয়েছিল তখন তারা আনন্দ মিছিল করছিল। আর এটাকে বলে বিক্ষোভ মিছিল, সেক্রেটারিকে ঘিরে বিক্ষোভ মিছিল। এটা অন্যায়, এটা কষ্টকর।’
তিনি বলেন, ‘কালকে আমি কোনো সাংবাদিককে দেখিনি। তাহলে তারা শুনে লিখেছে। শুনে কেন লিখবে? এটা তো বিক্ষোভ না আনন্দ মিছিল করেছে। ফেসবুকে যা বেরিয়েছে তা জানতে গেছে তারা, জানার অধিকার তাদের আছে। বিক্ষোভ হিসেবে যা বলা হচ্ছে, সেটা খুশি হয়ে তারা আনন্দ মিছিল। আমি তো অফিস থেকে সবার পরে গেছি।’
‘আমি যা বললাম এটাই সত্য বললাম, চার বছর জেল খেটেছি ১১ বছর মন্ত্রী। আমার এখন দেবার পালা, কাউকে ব্যবহার করে আরো বড় পদে যাবার কোনো সুযোগ নেই।’
সাধারণ সম্পাদক আরও বলেন, ‘আরও কিছু বিষয় আছে এই যে অনুপ্রবেশকারী, তিন মাস সময় নিয়েছি এদের চিহ্নিত করতে। কিছু লোক আছে পোস্টার-ব্যানার বানিয়ে প্রধানমন্ত্রী, সাধারণ সম্পাদককে অভিনন্দন এবং ফেসবুকে প্রচার করে। এই বিষয়গুলো দেখতে হবে, সহ-সম্পাদক পদ নিয়ে সিটিং এমপিদের ডিস্টার্ব করে, এসব কারণে যাচাই-বাছাই পদ্ধতি বেছে নিয়েছি।’
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন