নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন দিতে ভয় কেন? এমন প্রশ্ন রেখে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের প্রতি চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়েছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।রোববার বিকেলে এক আলোচনা সভায় আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় তিনি এ চ্যালেঞ্চ ছুড়ে দেন।
নয়া পল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের নীচের তলায় দলের প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের ৮২তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে এই আলোচনা সভা ও পুস্তক প্রদর্শনীর আয়োজন করে জিয়া স্মৃতি পাঠাগার।
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘তিনি (ওবায়দুল কাদের) বলছেন যে, আমরা ৮ ভাগও নাকি ভোট পাবো না। পাবো না হলে ভোট দিচ্ছেন না কেনো? একটা নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে ভোট দেন- দেখা যাক কে কত ভোট পায়। আপনারা হলে আপনারা আছেন, আমরা হলে আমরা আছি। না হলে নাই। সেটা তো করবেন না। তো আপনারা জানেন, নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে ভোট দিলে আপনারা ৮ পারসেন্টেও থাকবেন না।’
ক্ষমতাসীনদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, ‘এরা সহজেই নির্বাচন করবে না। কারণ এরা জানে যে, নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে যদি নির্বাচন হয়, তাহলে এরা কোনোদিনই ক্ষমতায় আসতে পারবে না। ক্ষমতায় আসতে না পারলে এদের যে কী হাল হবে এই বিষয়ে জনগণ খুব ভালো করে জানেন।’
হাইকোর্ট কর্তৃক সদ্য স্থগিত হওয়া ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশ উপ-নির্বাচনের প্রসঙ্গ টেনে বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে যোগসাজশ করে এই কাজটা (স্থগিত) করেছেন যাতে করে এটা রিট হয় এবং নির্বাচন করতে না হয়। নির্বাচন করলেই তো আপনাদের ভরাডুবি। সিটি করপোরেশ নির্বাচনে আপনাদের ভরাডুবি অবধারিত ছিলো বলে সেকারণে আপনারা নির্বাচন বন্ধ করেছেন।’
দলের নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘জেগে উঠুন, আপনার অধিকার আদায় করবার জন্য, আপনার সন্তান-স্ত্রী-কন্যাকে রক্ষা করবার জন্য আপনি আজকে অবশ্যই জেগে উঠুন। এই যে দানব সরকার যার সক্রিয় পদক্ষেপের মধ্য দিয়ে দেশে সব অনাচারে ভরে গেছে। এর বিরুদ্ধে আমাদেরকে রুখে দাঁড়াতে হবে। অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করতে হবে, সত্যের ও ন্যায়ের পক্ষে দাঁড়াতে হবে।’
অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতের সাম্প্রতিক বক্তব্যের সমালোচনা করে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, গতকাল (রোববার) তিনি বলেছেন, বিএনপি একটি অবোধ দল, বোধ নাই। আর আপনি (অর্থমন্ত্রী) হচ্ছেন বোধ সম্পন্ন মানুষ। এমন বোধ সম্পন্ন যে আপনি বলেন সাড়ে ৪ হাজার কোটি টাকা লুট করে নিয়ে যায়- ওই টাকা কিছু না। আপনার মন্ত্রণালয়ের অধীনে বেসিক ব্যাংকের হাজার হাজার কোটি টাকা লুট হয়ে যায়, আপনি বলেন যে, কিছুই না।’
তিনি বলেন, আপনার সহকর্মী মন্ত্রী ছিলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মহীউদ্দিন খান আলমগীর। তিনি একটা ব্যাংক নিয়েছিলেন আপনার কাছ থেকে, সেই ব্যাংক লাটে উঠে গেছে। ৫ হাজার টাকা চেক দিলেও ফেরত আসে। এটা আপনার খুব বোধের কাজ হয়েছে, এটা আপনার বোধ শক্তির পরিচয় হয়েছে।
সংগঠনের সভাপতি দলের চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আবদুস সালামের সভাপতিত্বে আরও বক্তব্য দেন- দলের ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আল নোমান, যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, সহ সাংগঠনিক সম্পাদক শহীদুল ইসলাম বাবুল, জিয়া স্মৃতি পাঠাগারের সাধারণ সম্পাদক জহির দীপ্তি, সাঈদ আহমেদ আসলাম প্রমুখ।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন