মদ্যপ ছাত্রলীগ কর্মীর হাত থেকে ছাত্রীকে রক্ষা করলেন প্রক্টর
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে মদ্যপ ও উত্ত্যক্তকারী দুই ছাত্রলীগ কর্মীকে পুলিশের কাছ থেকে ছিনিয়ে নিয়েছে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। এর আগে দুই মদ্যপ ছাত্রলীগ কর্মীর হাত থেকে তিন ছাত্রীকে রক্ষা করলেন প্রক্টর।
ছিনিয়ে নেয়া দুই ছাত্রলীগ কর্মী হলেন- ইংরেজি বিভাগের ২০১৫-১৬ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী ইউসুফ এবং রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের ২০১৫-১৬ শিক্ষাবর্ষের ইমতিয়াজ।
এর আগে ছিনিয়ে নেয়া ওই দু’জনসহ এক বহিরাগতকে ছাত্রীদের উত্ত্যক্ত করার অভিযোগে মদ্যপ অবস্থায় আটক করে পুলিশে দেন প্রক্টর। রোববার বিকেল পৌনে ৫টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের মফিজ লেক সংলগ্ন এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
প্রক্টর ও প্রত্যক্ষদর্শীদের ভাষ্যমতে, বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে শেখ হাসিনা হলের তিন ছাত্রী মফিজ লেক এলাকায় ঘুরতে যায়। সেখানে মদ্যপ অবস্থায় ছাত্রলীগ কর্মী ইউসুফ, ইমতিয়াজ এবং বহিরাগত মুহাইমিনুল ইসলাম ছাত্রীদের উত্ত্যক্ত করে।
এ সময় ছাত্রীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক মাহবুবর রহমানকে ফোন দিয়ে, ‘স্যার আমাদের বাঁচান’ বলে আকুতি জানায়। প্রক্টর ঘটনাস্থলে ছুটে গিয়ে নিজেই তাড়া করে ওই তিনজনকে আটক করে।
পরে আটক তিনজনকে পুলিশে সোপর্দ করে প্রক্টর। তাদেরকে নিয়ে যাওয়ার সময় মফিজ লেক এলাকায় পুলিশের গাড়ির গতিরোধ করে দুই ছাত্রলীগ কর্মীকে ছিনিয়ে নেয় ছাত্রলীগ কর্মী ফয়সাল সিদ্দিকী আরাফাত ও তার সহযোগীরা।
এ সময় পুলিশ ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের মধ্যে বাকবিতণ্ডা হয়। তখন এক পুলিশ কর্মকর্তা অসহায়ভাবে বললেন, ‘ছোট ভাই তোমাকে ভালোবাসি কিন্তু কাজটা ঠিক করলে না।’ পরে পুলিশ বহিরাগত মুহাইমিনুলকে নিয়ে থানায় চলে যায়।
ভুক্তভোগী এক ছাত্রী জাগো নিউজকে কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, ওদের তো নেতারা ছাড়িয়ে নিয়ে গেল। এখন আর কিছুই হবে না। আমরা স্বাভাবিকভাবে আর চলাফেরা করতে পারব না। ওরা আমাদের দেখলেই এর প্রতিশোধ নেবে।
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় থানা পুলিশের উপ-পরিদর্শক কমলেশ দাস জাগো নিউজকে বলেন, আটক তিনজনকে থানায় নিয়ে যাওয়ার সময় আরাফাতসহ ছাত্রলীগের কর্মীরা দু’জনকে ছিনিয়ে নেয়। একজনকে থানায় নিয়ে এসেছি। তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের প্রক্রিয়া চলছে।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি শাহিনুর রহমান জাগো নিউজকে বলেন, দায়িত্বরত পুলিশের কাছ থেকে আসামি ছিনতাইয়ের ঘটনায় ছাত্রলীগের কোনো কর্মী জড়িত থাকলে তাদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক মাহবুবর রহমান জাগো নিউজকে বলেন, যে কোনো ধরনের অপতৎপরতা এবং অপকর্ম প্রতিরোধে ইবি প্রশাসন যেভাবে জিরো টলারেন্স দেখিয়ে আসছে তার ধারাবাহিকতা অব্যাহত রাখতে প্রক্টর হিসেবে সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। তারা যত শক্তিশালী হোক তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন