ডেস্ক রিপোর্ট
সরস্বতী দেবীকে ‘সর্বকালের সেরা সেক্সি দেবী’ বলায় বেজায় চটেছেন হাল আমলের বিজেপিপন্থি অঞ্জন রায়। তিনি লিখেছেন
অনুরোধ করছি আপনার সাম্প্রদায়িক পোষ্টের জন্য ক্ষমা চাইতে। আপনি সরস্বতী দেবীকে ‘সর্বকালের সেরা সেক্সি দেবী’ বলতে পারেন না। এই পোস্টটি অসহিষ্ণুতা সৃষ্ঠি করছে। যে অসহিষ্ণুতা সৃষ্টির ভুল অভিযোগে ফেক আইডির পরও রসরাজ দাস জেলে যায়- সেখানে আপনার প্রমানিত নিজের আইডি থেকে বিদ্বেষ ছড়ালেন কেন? এটা বিশেষ কোন এজেন্ডা কি না? সেটাও কিন্তু ভাবার বিষয়।
অঞ্জনের এমন স্ট্যাটাসের প্রতিবাদে আনিস আলমগীর লিখেছেন, অঞ্জন রায় বিভিন্ন জনের কাছে টাকা নিয়ে টকশোতে গেস্ট বানাতো । আনিস আলমগীর আরো
লিখেছেন,
হে ধান্ধবাজ তোমাকে বলছি...
আমি তোমার দেবীকে ‘সেক্সী’ বললাম কেন তার জন্য ক্ষমা চাইতে বললে পোষ্ট দিয়ে, আমি চাইলাম, কারণ আমারতো ইনটেনশনই নেই কোনও দেবীকে অপমান করার। তারপরও তুমি নিবর কেন! আমাকে গালাগালি করার, হিন্দু মৌলবাদীদের দিয়ে দেখিয়ে দেওয়ার হুমকি কেন দিয়ে যাচ্ছ কেন? ইস্যুটা থাকলে তোমার আর তোমাদের ব্যবসা জমে তাই না।
যদিও তুমি আমার বন্ধু তালিকায় ছিলে বলে সেই পোষ্টে এসে তা বলতে পারতে। কিন্তু বলনি, কারণ তোমার একটা হিন্দু নেতা হওয়ার কার্ড দরকার ছিল। দীর্ঘদিন ধরে টকশোতে টাকার বিনিময়ে গেষ্ট এনে তোমার ধান্ধাবাজি করা, পাবনায় এক জমি তিনবার বেঁচে সংখ্যালঘুর বাড়ি দখল বলে চিৎকার করাসহ সব প্রচারণার কাহিনী এখন অনেকে জানে। তোমার শাহবাগে বিপ্লবী হয়ে পরে পলায়ন- সব কিছুর দুর্গন্ধ মিডিয়ায় ভরে গেছে। আমাদের গায়ে আসে হে ধান্ধাবাজ। সেটা কাভার দেওয়ার একটা কার্ড দরকার। তোমার ফলোয়ার আছে হাজার হাজার স্বধর্মীয়, তাদের কাছে ইমেজ বাড়ানো দরকার।
তুমি নিজের ধান্ধা ছাড়া এদেশের সংখ্যালঘুদের জন্য কিছু না করলেও তোমার নামটা বাংলায় বলে, তুমি অসাম্প্রদায়িক আর আনিস আলমগীর নামটা আরবী-পার্সি। তাই আনিস আলমগীর হিন্দুদের স্বার্থে এ জীবনে যাই লিখুক, যাই বলুক, জীবনে একটা কটুকথা না বলুক- তাকে ঘায়েল করা যাবে। কারণ সে মুসলমান আর তুমি অসাম্প্রদায়িক ধর্মের লোক!
হ্যাঁ অনুভুতিতে আমারও লেগেছিল যখন ক্লাস নাইনে আমাকে পুজোয় যেতে বাধ্য করেছিল হিন্দু শিক্ষকরা। কারণ তোমার মাটির মা বিদ্যা দিতে পারে এটা আমার তখনও বিশ্বাসে ছিল না এখনও নেই। তাই বলে তোমার মতো আমাকে মা মা করতে হবে কেন! তোমার ভক্তি তোমার কাছে, আমার কাছে সেটা মাটির পুতুল। সেক্সি করে বানানো যত কৌশল আছে প্রয়োগ করার পর তাকে সেক্সি মনে হলে তোমার অনুভুতিতে লাগবে আর আমার অনুভুতি নেই? অনুভুতি কি তোমার একার? একটা প্রায় ৯০ শতাংশ সংখ্যাগরিষ্ট মানুষের দেশে তুমি মাটির পুতুলের কাছে বিদ্যা চাওয়ার জন্য একদিন স্কুল কলেজ বন্ধ রাখবা- মুসলমান ছেলে মেয়েদের দিয়ে প্রতিমা সাজাবা- এই আবদারতো আমরা দিনের পর দিন মেনে আসছি। কারও অনুভুতিতে লাগেনা? পৃথিবীর কয়টি দেশে সংখ্যালঘুর এই আবদার মানা হয়। বাংলাদেশে মানা হয়। আমরাই মানি। শেখ হাসিনার সরকার তোমাদেরকে দিয়েছে, এই রাষ্ট্র তোমাদেরকে সেটা দিয়েছে।
হা অতীতে কিছু ঘটনা ঘটেছে। এখনও যে ঘটেনা তাও নয়। তুমি কোথাও কোনও বিচ্ছিন্ন ঘটনা ঘটলে এই দেশের সংখ্যাগরিষ্ট মানুষদের সাম্প্রদায়িক মৌলবাদী বলে, রাষ্ট্র গেল বলে ফেনা তুলবা সেটাতো মিথ্যাচার। অপমান।
বলতো কাল যে সারা দেশে তোমার দেবীর পূজা হল, এক জগন্নাথ হলেই প্রায় ৫০টি সরস্বতী প্রতিমা দিয়ে পুজা হল- সেটা আর কয়টি দেশে হয়েছে এমন করে? তুমি কি তার কোনও খবর পাঠিয়েছ পাশের দেশে, যেখানে যাওয়ার জন্য তুমি মুখিয়ে থাক, মোদি সাহেব ঘোষণা দিয়ে রেখেছেন- যে আসুক হিন্দু হলে নাগরিকত্ব দেবে। আমি কিন্তু সে খবর দেখিনি। কারণ তোমাদের কাছে সম্প্রীতির খবর খবর নয়। তোমাদের কাছে গড়ে মুসলমানদের সাম্প্রদায়িক বলাই ফ্যাশন। ক্ষমা চাওয়ার কথা আসলে তোমাদের বাহানা। তোমাদের দরকার ইস্যু।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন