অবরুদ্ধ হয়ে পড়া ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক মো. আখতারুজ্জামানকে ‘উদ্ধারে’ পুলিশের ভূমিকা নিয়েছে ছাত্রলীগ। উপাচার্যের কার্যালয়ের সামনে অবস্থানরত শিক্ষার্থীদের সরাতে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা হামলা করেছেন। এ সময় তাদের পিটুনি, কিল-ঘুষি, মারধরে আন্দোলনরত একাধিক শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন। তবে ছাত্রলীগ বলছে, হামলার কোনো ঘটনা ঘটেনি।
২৩ জানুয়ারি মঙ্গলবার দুপুর থেকে উপাচার্য নিজ কার্যালয়ে অবরুদ্ধ হয়ে পড়লে বিকালেই হামলা করে ছাত্রলীগ। এসময় নারীদেরকেও লাঞ্ছিত করা হয়। প্রায় ঘণ্টা চারেক অবরুদ্ধ ছিলেন উপাচার্য।
আন্দোলনের শুরু থেকেই বাম ঘরানার ছাত্র সংগঠনগুলো শিক্ষার্থীদের সঙ্গে একাত্মতা ঘোষণা করেন। এসব ছাত্র সংগঠনের নেতাকর্মীরাও সাধারণ শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে অংশ নেন এবং ছাত্রলীগের হামলায় তাদের অনেকেই আহত হয়েছেন।
আন্দোলনকারীদের দমাতে ঘটনাস্থলে যাচ্ছেন ছাত্রলীগের নেত্রীরা
কয়েকটি বেসরকারি চ্যানেলে প্রচারিত লাইভে দেখা গেছে, ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা আন্দোলনরত সাধারণ শিক্ষার্থীদের মারধর করছেন। মারধরের পাশাপাশি রড, লাঠি দিয়েও পেটাতে দেখা গেছে। তাদের হাত থেকে নারী শিক্ষার্থীরাও রক্ষা পাননি।
ছাত্রলীগের নারী নেত্রীদের একটি অংশ আন্দোলনকারী ছাত্রীদের ওপর হামলা করেন। এ সময় আন্দোলনকারীদের ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের দফায় দফায় ধাওয়া পাল্টাধাওয়া হয়। পাল্টাপাল্টি স্লোগান দিতে দেখা যায়। যেসব সাংবাদিক লাইভে ছিলেন, তাদের ক্যামেরা কেড়ে নেওয়ার চেষ্টা করা হয়।
একপর্যায়ে কেন্দ্রীয় সভাপতি সাইফুর রহমান সোহাগসহ কেন্দ্রীয় নেতাদের দেখা যায়, হামলাকারী নেতাকর্মীদের সরিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করছেন।
তবে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি আরিফুর রহমান লিমন দাবি করেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে কোনো হামলার ঘটনা ঘটেনি। তিনি বলেন, ‘আমাদের শিক্ষককে লাঞ্ছিত করা হইছে। এর প্রতিবাদে আন্দোলনে সাধারণ শিক্ষার্থীরাই যুক্ত হইছে।’
লিমন দাবি করেন, বেশ কিছু বহিরাগত জামাত-শিবিরের কর্মীদের নিয়ে আমাদের শিক্ষকদের ওপর হাত তুলেছে, অশোভন আচরণ করেছে। এরই প্রতিবাদে বিক্ষুব্ধ হয়ে সাধারণ শিক্ষার্থীরা প্রতিবাদ করেছেন।
ছাত্র ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক লিটন নন্দীকে মারধর করেছে ছাত্রলীগ।
আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের দাবি, অধিভুক্ত সাত কলেজ বাতিলের দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ওপর সন্ত্রাসী হামলা ও ছাত্রীদের ‘যৌন হয়রানি’ করা ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কার করতে হবে। আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে উদ্দেশ্যমূলক দায়েরকৃত মামলা প্রত্যাহার করতে হবে। প্রক্টরের পদত্যাগ ও অধিভুক্ত সাত কলেজের সংকট দ্রুত সমাধান করতে হবে।
ঘটনার পর ছাত্রলীগের বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি আবিদ আল হাসান সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ঘটনাস্থলে সাধারণ শিক্ষার্থীদের নাম নিয়ে সেখানে বহিরাগতরা অবস্থান করছিলেন।
ছাত্রলীগের সভাপতি সাইফুর রহমান সোহাগ দাবি করেন, উপাচার্যকে উদ্ধার করতেই ছাত্রলীগ ঘটনাস্থলে গিয়েছিল।
গত বছরের ১৬ ফেব্রুয়ারি রাজধানীর সাত কলেজকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভূক্ত করা হয়। কলেজগুলো হলো- ঢাকা কলেজ, ইডেন মহিলা কলেজ, সরকারি শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজ, কবি কাজী নজরুল ইসলাম সরকারি কলেজ, বেগম বদরুন্নেসা সরকারি মহিলা কলেজ, মিরপুর সরকারি বাংলা কলেজ ও সরকারি তিতুমীর কলেজ।
ভিডিও ডিবিসি নিউজের সৌজন্যে...click here
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন