জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে পাঁচ বছরের দণ্ড দিয়ে কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত। সাজার পর ছয় দিন ধরে কারাবন্দি খালেদা জিয়া। কিন্তু এত দিন পরও এই রায় সংশোধন করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপি চেয়ারপারসনের আইনজীবীরা। তবে এ বিষয়ে মুখ খুলতে নারাজ দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) আইনজীবী।
রায়ের সংশোধন সম্পর্কে জানতে চাইলে মামলার সাজাপ্রাপ্ত আসামি কাজী সালিমুল হক কামালের আইনজীবী আমিনুল ইসলাম প্রিয়.কমকে অভিযোগ করে বলেন, ‘আমরা গত পরশু দিন (১১ ফেব্রুয়ারি) আদালতে গিয়েছিলাম রায়ের সার্টিফাইড কপি পাওয়ার জন্য। আদালত আমাদেরকে বলেছেন, রায়ে কারেকশন চলছে। সংশোধন হচ্ছে।’
আমিনুল ইসলাম আরও বলেন, ‘আমাদের মক্কেলকে বন্দি রেখে রায় সংশোধন আইনের লঙ্ঘন।’
‘গত ৮ ফেব্রুয়ারি রায় ঘোষণা করা হলো। অথচ আজ ১৩ ফেব্রয়ারি পর্যন্ত রায়ের কপি পেলাম না। এটা আইনের শাসনের পরিপন্থী। সিআরপিসির ৩৭১ ধারার লঙ্ঘন।’
আমিনুল ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘রায় ঘোষণার আগেই কারেকশন, সংশোধন করা উচিত ছিল। কিন্তু কেন করেনি, তা আমার বোধগম্য হচ্ছে না।’
‘আমরা পোর্টফোলিও জমা দিয়েছি কোর্টে। আমরা আশা করে বসে আছি, রায়ের কপি হাতে পেয়ে হাইকোর্টে আপিল করব। কিন্তু এখনো সেটি দেওয়া হচ্ছে না।’
এ বিষয়ে খালেদা জিয়ার আরেক আইনজীবী সানাউল্লাহ মিয়া প্রিয়.কমকে বলেন, ‘আমাদের সন্দেহ হচ্ছে। আমরা রায়ের সার্টিফাইড কপি পেতে অনেক আগেই আবেদন করেছি। কিন্তু আদালত আমাদেরকে রায়ের কপি দিচ্ছে না। সরকার আমাদের বিরুদ্ধে যড়যন্ত্র করছে।’
রায়ের কপি কেন দেওয়া হচ্ছে না জানতে চাইলে সানাউল্লাহ বলেন, ‘আমাদের সন্দেহ হচ্ছে যে রায় লেখা শেষ হয়নি অথবা রায়ে অন্য কোনো সমস্যা হতে পারে।’
খালেদা জিয়ার রায় এখনও সংশোধন হচ্ছে কি না জানতে চাইলে দুদকের আইনজীবী মোশাররফ হোসেন কাজল কোনো উত্তর দিতে অনীহা প্রকাশ করে ফোন কেটে দেন। পরবর্তী সময়ে একাধিকবার কল করা হলেও ফোন রিসিভ হয়নি।
এ বিষয়ে সুপ্রিম কোর্টের সাবেক রেজিস্ট্রার ইকতেদার আহমেদ প্রিয়.কমকে জানান, রায় ঘোষণার পর করণিক ও গাণিতিক বিষয় ছাড়া অন্য কোনো ভুলের সংশোধনীর সুযোগ নেই। কেউ যদি তা করে, তবে তা সিআরপিসির ৩৬৯ ধারার লঙ্ঘন।
এর আগে গত ৮ ফেব্রুয়ারি, বৃহস্পতিবার রাজধানীর বকশীবাজার আলিয়া মাদ্রাসাসংলগ্ন প্যারেড মাঠে অবস্থিত বিশেষ জজ আদালতের বিচারক ড. আখতারুজ্জামান খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে করা জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলার রায় দেন। রায়ে খালেদা জিয়াকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ডের আদেশ দেন আদালত। বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানসহ বাকি পাঁচ আসামির প্রত্যেককে ১০ বছর করে কারাদণ্ড ও দুই কোটি ১০ লাখ ৭১ হাজার টাকা করে অর্থদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
রায় ঘোষণার দিনে আদালতে হাজির খালেদা জিয়াকে পুরান ঢাকার নাজিমুদ্দিন রোডে অবস্থিত সাবেক ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে নেওয়া হয়।
প্রিয় সংবাদ
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন