জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে রায় ঘোষণার দিন ৮ ফেব্রুয়ারি থেকেই কারাগারে আছেন তিনি। রায় ঘোষণার পর থেকে রোববার ১১তম দিন কারাভোগ করছেন তিনি। তবে ২০০৮ সালে কারাবন্দি থাকা অবস্থায় এই মামলায় তাকে আটক দেখানো (শ্যোন এরেস্ট) হয়। আইন অনুসারে ওই সময় এই মামলায় আটক থাকা ৪৯ দিনও দণ্ডভোগ হিসেবে দেখাতে হবে।
সে হিসাবে বর্তমান ১১ দিন ও আগের ৪৯ দিন মিলে ৬০ দিন বা দুই মাস দণ্ডভোগ করা হয়ে গেছে পাঁচ বছরের দণ্ডপ্রাপ্ত সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার।
জানতে চাইলে এই মামলায় খালেদা জিয়ার অন্যতম আইনজীবী সানাউল্লাহ মিয়া পরিবর্তন ডটকমকে বলেন, রায় ঘোষণার পর ১১ দিন কারাভোগ করা হলেও মোট ১১ দিন বলা যাবে না। এরসঙ্গে আগে এই মামলায় আটক থাকার সময়কেও যুক্ত করে হিসাব করতে হবে।
ফৌজদারি কার্যবিধির ৩৫ক ধারায় বলা আছে, ‘দণ্ডপ্রাপ্ত ব্যক্তি জেলহাজতে থাকিলে সেক্ষেত্রে কারাদণ্ডের মেয়াদ বাদ দিতে হইবে : (১) কেবলমাত্র মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডণীয় অপরাধের ক্ষেত্র ব্যতীত যে ক্ষেত্রে কোনো আদালত একজন অভিযুক্তকে কোনো অপরাধে অপরাধী হিসেবে গণ্য করিয়া থাকেন এবং এইরূপ অপরাধীকে দোষী সাব্যস্ত করিয়া বিনাশ্রম বা সশ্রম যেকোনো মেয়াদের দণ্ড প্রদান করিয়া থাকেন, সে ক্ষেত্রে উক্ত আদালতে ওই অপরাধের ক্ষেত্রে অভিযুক্ত ব্যক্তি ইত্যবসরে যে মোট মেয়াদ জেলহাজতে থাকিবে ওই মোট মেয়াদ প্রদত্ত কারাদণ্ডের মেয়াদ হইতে বাদ দিবেন।’
প্রসঙ্গত, ২০০৮ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকার আমলে কারাবন্দি থাকাকালে জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় খালেদা জিয়াকে গ্রেফতার দেখানো হয়েছিল। ওই বছরই তিনি কারাগার থেকে মুক্তি পান।
তত্ত্বাবধায়ক সরকার আমলে ২০০৭ সালের ৩ সেপ্টেম্বর খালেদা জিয়াকে গ্রেফতার করা হয়। জামিন পাওয়ার পর ২০০৮ সালের ১১ সেপ্টেম্বর কারাগার থেকে মুক্তি পান তিনি।
অবশ্য মুক্তির আগেই তার বিরুদ্ধে ২০০৮ সালের ৩ জুলাই জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলা করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। এর ২০ দিন পর ২৩ জুলাই ওই মামলায় খালেদা জিয়াকে গ্রেফতার দেখানো হয়। ফলে সেদিন থেকেই এ মামলায় খালেদা জিয়ার কারাভোগ শুরু হয়।
এ কারণে ওই বছর মুক্তির আগ পর্যন্ত এ মামলায় খালেদা জিয়া কারাগারে ছিলেন ৪৯ দিন। অবশ্য সেনা সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের ওই সময় খালেদা জিয়া কারাগারে ছিলেন মোট এক বছর আট দিন।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন