বাংলাদেশ ছাত্রলীগের ২৯তম সম্মেলনকে কেন্দ্র করে সরব পদপ্রত্যাশী এক ডজন এক নেতা। সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকের শীর্ষ পদসহ গুরুত্বপূর্ণ পদ পেতে বিভিন্ন মহলেও বেড়েছে এদের ‘যোগাযোগ’।
ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের অন্যতম সহযোগী এ ছাত্রসংগঠনের ২৯তম সম্মেলন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে আগামী ৩১ মার্চ ও পহেলা এপ্রিল ।
দুই বছর ৭ মাস আগে ২০১৫ সালের ২৬ ও ২৭ জুলাই সর্বশেষ সম্মেলনে প্রত্যক্ষ ভোটে ছাত্রলীগের নেতৃত্বে আসেন সাইফুর রহমান সোহাগ ও জাকির হোসাইন।
সংগঠনের বিক্ষুব্ধ নেতাকর্মীর চাপের মুখে গত মাসে নতুন কাউন্সিলের ঘোষণা দেয় গঠনতন্ত্র অনুযায়ী মেয়াদোত্তীর্ণ বর্তমান কমিটি। তারপর থেকেই ছাত্রলীগের নিয়ন্ত্রণকারী কথিত সিন্ডিকেটের সঙ্গে ব্যক্তিগতভাবে যোগাযোগ শুরু করে পদপ্রত্যাশী নেতারা। বিশেষ করে যাদের বয়স এখনো আছে, তাদের দৌড়ঝাঁপ লক্ষ্য করার মতো।
তবে ছাত্রলীগের কাউন্সিলের সঙ্গে প্রত্যক্ষভাবে জড়িত আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ বলছে, পরিশ্রমী ও মেধাবী এবং শিক্ষার্থীদের মাঝে জনপ্রিয়, পরিচ্ছন্ন ইমেজ, সাংগঠনিকভাবে দক্ষ নেতারা এগিয়ে থাকবেন। বিশেষ করে বিগত দিনগুলোতে যারা সরাসরি মাঠে থেকে আন্দোলন-সংগ্রাম করেছে; তারাই এগিয়ে থাকবে পদ পাওয়ার দৌড়ে।
টেন্ডারবাজ ও নানা অপকর্মে জড়িতদের নেতৃত্বে আসার সুযোগ নেই স্পষ্টভাবে উল্লেখ করে ওই নেতারা জানান, যেহেতু সামনে জাতীয় সংসদ নির্বাচন; তাই এমন নেতা নির্বাচন করা হবে যাতে নির্বাচনকালীন সময়ের গুরুত্বপূর্ণ সাংগঠনিক দায়িত্ব পালন করতে পারে।
তাছাড়া প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ প্রধান শেখ হাসিনারও নির্দেশনা রয়েছে; বিতর্কিতরা যেন ছাত্রলীগের গুরুত্বপূর্ণ পদে না অাসতে পারে।
নির্বাচনে অঞ্চলভিত্তিক গুরুত্ব:
জানা গেছে, ছাত্রলীগের নেতৃত্ব নির্বাচনে প্রতিবারের মতো এবারও অঞ্চলভিত্তিক নির্বাচন পদ্ধতিকে গুরুত্বের সাথে বিবেচনা করা হবে। সেই দিক থেকে এখন পর্যন্ত আলোচনায় থাকা প্রার্থীদের মধ্যে রয়েছেন;
ফরিদপুর অঞ্চল থেকে গোলাম রাব্বানী (শিক্ষা ও পাঠচক্র সম্পাদক)। সবার আলোচনায়ই এ নামটি শুনা যাচ্ছে। ঢাকা থেকে তৃনমূল সর্বত্র আলোচনায় এ নামটি থাকছেই। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের শিক্ষার্থী এবং বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরীক্ষায় ৫ম স্থান অধিকার করেছিলেন। মানবিক কর্মকাণ্ডে নিয়মিত আলোচনায় থাকছেন গোলাম রাব্বানী। তার মাধ্যমে এখনও পর্যন্ত প্রায় ২০০জন ব্যক্তি নানান মানবিক সহায়তা পেয়েছেন। যে কারনে কর্মীরা তাকে মানবিক ছাত্রনেতা হিসেবেই চিনে। এ অঞ্চল থেকে আরো আছেন রাকিব হোসাইন (কর্মসূচী ও পরিকল্পনা সম্পাদক), হাফিজুর রহমান (সভাপতি, স্যার এ এফ রহমান হল, ঢাবি)।
বরিশাল অঞ্চল থেকে রয়েছেন; আল-নাহিয়ান খান জয় (আইন সম্পাদক), বরকত হোসেন হাওলাদার (কৃষি শিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক) ইয়াজ আল রিয়াদ (ত্রাণ ও দুর্যোগ বিষয়ক সম্পাদক), মো: আরিফুল ইসলাম সোহাগ (সহ-সম্পাদক) খাদেমুল বাসার জয় (সহ-সম্পাদক) ও জহিরুল কবির জহির (সহ-সম্পাদক)।
খুলনা অঞ্চল থেকে আলোচনায় রয়েছেন: শেখ মোঃ শওকতুজ্জামান সৈকত (সাংগঠনিক সম্পাদক) , মোতাহের হোসেন প্রিন্স (সাধারণ সম্পাদক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়) ও ইমদাদ হোসেন সোহাগ (আন্তর্জাতিক বিষয়ক উপ-সম্পাদক)।
চট্টগ্রাম অঞ্চল থেকে আলোচনায় আছেন; মাজহারুল ইসলাম শামীম (প্রশিক্ষণ বিষয়ক সম্পাদক), সৈয়দ আরাফাত (স্কুলছাত্র বিষয়ক উপ সম্পাদক), খাজা খায়ের সুজন (স্কুলছাত্র বিষয়ক উপ-সম্পাদক) ও সরকার রায়হান জহির (সভাপতি, মুহসীন হল, ঢাবি)।
উত্তরবঙ্গ থেকে রয়েছেন; কামরুজ্জামান বিশ্বাস জিপু (নাট্য ও বিতর্ক বিষয়ক উপ-সম্পাদক), হোসাইন সাদ্দাম (আইন বিষয়ক উপ-সম্পাদক), ফেরদৌস আলম (কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের কার্য নির্বাহী সদস্য) ও মোঃ আল মামুন ( মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক উপ-সম্পাদক)।
সিলেট থেকে আছেন; ইউসুফ উদ্দিন খান (সভাপতি, জিয়া হল, ঢাবি) ও আনিসুল ইসলাম জুয়েল (গণশিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক)।
ময়মনসিংহ অঞ্চল থেকে আলোচনায় রয়েছেন; এ বি এম হাবিবুল্লা বিপ্লব (পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক) ও সোহান খান (সহ-সভাপতি)।
আলোচনায় আসা নারী নেত্রীর মধ্যে রয়েছেন বর্তমান কমিটির সহ-সভাপতি চৈতালী হালদার চৈতী। তার গ্রামের বাড়ি খুলনা অঞ্চলে।
তবে নির্ধারিত বয়স শিথিল করা সাপেক্ষে হলে আলোচনায় রয়েছেন; মেহেদি হাসান রনি (সহ-সভাপতি), সায়েম খান (যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক), নিজামুল ইসলাম (যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক) প্রমুখ।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন